৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে আদিত্য ধর পরিচালিত ছবি ‘ধুরন্ধর’। তারকাখচিত এই ছবিতে বাড়তি নজর কেড়েছেন রণবীর সিংহ। তিনিই মুখ্য চরিত্রে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই খুলে দেওয়া হয় অগ্রিম বুকিং। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে টিকিট। কলকাতার বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে টিকিটের দাম ৫০০ টাকারও বেশি। যদিও শাহরুখ খান অভিনীত ‘পঠান’ ও ‘জওয়ান’ টিকিটের দামের তুলনায় এটা কিছুই নয়। শোনা যাচ্ছে, অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের থেকে নাকি প্রায় ৪.২৪ কোটি টাকা আয় করে ফেলেছে রণবীরের ছবি। এই নিরিখে এ বছরের মুক্তিপ্রাপ্ত অন্যান্য ছবির সঙ্গে তুলনায় কোথায় দাঁড়িয়ে রণবীরের ‘ধুরন্ধর’? শাহরুখ, যশ ও অল্লু অর্জুনদের তুলনাতেই বা রণবীর কোথায়?
একটা সময় ছিল যখন কোনও ছবি কত দ্রুত ১০০ কোটির ঘর ছুঁতে পারছে, সেটাই ধরা হত সেই ছবির প্রাথমিক সাফল্যের মাপকাঠি। যদিও সেই অঙ্কটা এখন গিয়ে ৫০০ কোটি কিংবা ১০০০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময় দেখা গিয়েছে, বক্স অফিসে ছবির আয়ের উপর নির্ভর করেছে দর্শকের আগ্রহ। অগ্রিম বুকিংয়ের থেকে আয়ের ক্ষেত্রে সবাইকে ছাপিয়ে এগিয়ে রয়েছে শাহরুখের ‘পঠান’। এটি অগ্রিম বুকিং থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় করে। এই ছবির বিশ্বব্যাপী আয় হয়েছিল ১০৫৬ কোটি টাকা। তার পর অবশ্য এই নজির নিজেই ভাঙেন শাহরুখ। ‘জওয়ান’ ছবিতে। অ্যাটলি পরিচালিত ‘জওয়ান’ শাহরুখের ২০২৩ সালের দ্বিতীয় ছবি। অগ্রিম বুকিং থেকে এই ছবি ৫১ কোটি টাকা আয় করে। বিশ্বব্যাপী এই ছবির প্রায় আয় হয় প্রায় ১১৪৮ কোটি।
রণবীরের ‘ধুরন্ধর’ ইতিমধ্যে ৭২ লক্ষ টিকিট বিক্রি করে ফেলেছে। যদিও টিকিট বিক্রির নিরিখে এই ছবি এগিয়ে দিল্লিতে, তার পরে মুম্বইয়ে। তৃতীয় স্থানে কলকাতা। রণবীরকে এই ছবিতে দেখা যাবে এক গুপ্তচরের চরিত্রে। এই ছবিতে দেশাত্মবোধের উপাদানের সঙ্গে দেখানো হয়েছে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক দিকও। রয়েছে ভরপুর অ্যাকশন।
আরও পড়ুন:
অতিমারির পরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ ছবি অগ্রিম বুকিং-এ শুধু হিন্দি ভাষা থেকে আয় করেছিল ১০ কোটি। বিশ্বব্যাপী হিসেবে করলেই সেই সংখ্যা আরও বাড়বে। যদিও এর মধ্যে যুক্ত রয়েছে স্যাটেলাইট বিক্রির স্বত্বও। ছবিতে অল্লু অর্জুন ছিলেন চন্দনকাঠের চোরাকারবারী। মুক্তির আগেই টিকিট ঝড়ের গতিতে বিক্রি হয় রণবীর কপূর অভিনীত ‘অ্যানিম্যাল’ ছবির। ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি সে বছরের অন্যতম বড় ও সফল ছবি। অগ্রিম বুকিং থেকে ছবির আয় হয় ৩৪ কোটি। টিকিট বিক্রি হয়েছিল প্রায় ১৩ লক্ষের কাছাকাছি। এই ছবিতে গ্যাংস্টারের চরিত্রে দেখা যায় রণবীরকে। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে যশ অভিনীত ‘কেজিএফ: চ্যাপটার টু’-এর ক্ষেত্রে। অগ্রিম বুকিং থেকে এই ছবি আয় করে ৩১ কোটি।
এই বছরের নিরিখে রণবীর সিংহের মূল প্রতিযোগী হলেন ঋষভ শেট্টী। চলতি বছরের সফলতম ছবি ‘কান্তার: চ্যাপটার ওয়ান’। ছবিটি ‘কান্তারা’র প্রথম পর্বের প্রিক্যুয়েল। এই ছবিতে নায়ক আধ্যাত্মিক দেবতা রূপে ধরা দেন। সেই লোকগাথা যেন আঠার মতো দর্শককে বসিয়ে রাখে। দেশে এই ছবি অগ্রিম বুকিং থেকে আয় করে প্রায় ৯ কোটি। বিশ্বব্যাপী এই ছবি আয় করে প্রায় ৮৪৫.১৮ কোটি। এ ছাড়াও আরও এক প্রতিযোগী রয়েছে। নবাগত অহান পাণ্ডে ও অনীত পদ্দা অভিনীত ছবি ‘সইয়ারা’ ঝড় তুলেছিল বক্স অফিসে। ভারতে এই ছবির মোট আয় প্রায় ৩২৯.২৫ কোটি। অগ্রিম বুকিং থেকে আয় হয়েছিল প্রায় ৯ কোটির কাছাকাছি।
আরও একটি উল্লেখযোগ্য ছবি ছিল এ বছর। ভিকি কৌশল অভিনীত ‘ছাওয়া’। ছত্রপতি শিবাজীর ছেলে শম্ভাজীর জীবনীচিত্র। অগ্রিম বুকিং থেকে আয় করে ৮.৫৩ কোটি। এই ছবির বক্স অফিস কালেকশন ছিল প্রায় ৭০০ কোটির কাছাকাছি। বহু রাজ্য এই ছবির কর মকুব করায় আয়ের ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়েছে।
এ বার বছরের শেষে মুক্তি পাচ্ছে রণবীরের ‘ধুরন্ধর’। বাকিদের টেক্কা দিয়ে সত্যিই বক্স অফিসের ‘ধুরন্ধর’ হয়ে উঠতে পারবেন অভিনেতা? সময় উত্তর দেবে।