Advertisement
E-Paper

হিন্দি মিডিয়ামে সততাই শেষ কথা

ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের প্রতি ভারতীয় বাবা-মায়ের মোহ, ইংরেজি না শিখলে সামাজিক একাকিত্বের ভয়, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, বড় স্কুলে ভর্তির জন্য প্রতারণা এবং গরিব ছাত্রদের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা—পরিচালক সাকেত চৌধুরীর ‘হিন্দি মিডিয়াম’ মূলত এই প্রশ্নগুলোকে উস্কে দিয়েছে।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০০:১৯

হিন্দি মিডিয়াম

পরিচালনা: সাকেত চৌধুরী

অভিনয়: ইরফান খান, সাবা,
দীপক ডোব্রিয়াল

৬/১০

ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের প্রতি ভারতীয় বাবা-মায়ের মোহ, ইংরেজি না শিখলে সামাজিক একাকিত্বের ভয়, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ, বড় স্কুলে ভর্তির জন্য প্রতারণা এবং গরিব ছাত্রদের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা—পরিচালক সাকেত চৌধুরীর ‘হিন্দি মিডিয়াম’ মূলত এই প্রশ্নগুলোকে উস্কে দিয়েছে। ছবির কিছু অংশ অবাস্তব হলেও, মোটের উপর ছবিটি একটি সদর্থক বার্তা দিয়েছে। বিশেষত, বর্তমান ভারতে শিক্ষার থেকেও তার পারিপার্শ্বিক আড়ম্বর নিয়ে বাবা-মায়েদের যে মাথাব্যথা, ছবিটি সেই ধারণাকে বিদ্রুপ করেছে। সঙ্গে এটাও দেখিয়েছে, কী ভাবে সংরক্ষিত আসনের অপব্যবহারের ফলে সুযোগ পাচ্ছে না প্রকৃত দাবিদার।

ছবির মূল বিষয়, শাড়ি ব্যবসায়ী রাজ ও স্ত্রী মিতা মেয়েকে দিল্লির বড় ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করাতে চায়। রাজ-মিতার ইংরেজির ভিত নড়বড়ে। কিন্তু মেয়ে পিয়ার জন্য চাই সেরাটা। তাই ছাপোষা চাঁদনি চক ছেড়ে অভিজাত বসন্ত বিহারে তারা বাসা বাঁধে। বদলায় তাদের লাইফস্টাইল, চলা-বলা, বেশভূষা। ইন্টারভিউতে পাশ করতে রাজ-মিতারও প্রশিক্ষণ হয়। তবে এত কিছুর পরেও পিয়া বড় স্কুলে ভর্তি হতে পারে না। অগত্যা ইন্টারভিউ কনসালটেন্টের বুদ্ধিতেই দরিদ্রদের জন্য সংরক্ষিত আসনে পিয়ার নাম লেখায় তার বাবা।

এই কেলেঙ্কারি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পরে স্কুল শুরু করে তল্লাশি। পুলিশ থেকে বাঁচতে রাজ ও তার পরিবার বস্তিতে থাকতে শুরু করে। এখানেই রাজের পরিবার খুঁজে পায় প্রতিবেশীর নিঃস্বার্থ ভালবাসা ও আনুগত্য। এমনকী পিয়ার স্কুলে ভর্তির টাকার জোগানের জন্য গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাজের প্রতিবেশী শ্যামপ্রকাশ। কাগজপত্র যাচাইয়ের পরে পিয়া স্কুলে ভর্তি হয়। সুযোগ পায় না শ্যামপ্রকাশের ছেলে।
এর পরের গল্প, রাজের উপলব্ধি: যার যা যোগ্য জায়গা তাকে তা ফিরিয়ে দেওয়া।

রাজের চরিত্রে ইরফান অনবদ্য। তাঁর কমিক টাইমিং অসামান্য। আবার যেখানে ডায়লগ নেই, এক্সপ্রেশন দিয়ে মাত করেছেন। মিতার চরিত্রে সাবা কামার প্রশংসনীয়। রাগ-ক্ষোভ, কথায় কথায় স্বামীকে শব্দের ইংরেজি বানান জিজ্ঞেস করা, বড়লোকদের চালচলন রপ্ত করা সব দৃশ্যেই তিনি বিশ্বাসযোগ্য ও সপ্রতিভ। প্রতিবেশী শ্যামপ্রকাশের চরিত্রে দীপক ডোব্রিয়ালও যথাযথ।

সাকেত চৌধুরী ও জিনাত লাখানির লেখা গল্প ও চিত্রনাট্যে শিক্ষার সঙ্গে সামর্থ্যের সমীকরণ এবং স্কুলগুলি কী ভাবে তার ফায়দা তোলে, সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছে। তবে যত তাড়তাড়ি উঁচুতে ওঠা যায়, নিচুতে নামা কিন্তু অতটা সহজ নয়। তাই হঠাৎ করে রাজ ও তার পরিবারের বস্তিতে থাকা, রাজের কারখানায় কাজ করার পর্বটি অবাস্তব বলেই মনে হয়। আর যে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য এত কিছু, সেই জায়গা পেয়েও অন্য কাউকে ছেড়ে দেওয়া নেহাত ফিল্মি সমাপতন ছাড়া আর কিছু মনে হয় না।

Hindi Medium Irrfan Khan Movie Reviews
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy