Advertisement
০৭ মে ২০২৪
web content

মির্জ়াপুর (সিজ়ন টু): জ্বলল আগুন তবে ধিকি ধিকি

‘মির্জ়াপুর টু’-এর প্রাণ গুড্ডু এবং মুন্না। শোয়ের সবচেয়ে নজরকাড়া দৃশ্য, যখন এক হাতে মুন্না এবং অন্য হাতে শরদের টুঁটি চেপে গুড্ডু তার হৃত ক্ষমতার আস্ফালন করতে চায়।

সিজ়নের চূড়ান্ত পর্বে বদলে যায় অনেক সমীকরণ।  ছবি: সংগৃহীত।

সিজ়নের চূড়ান্ত পর্বে বদলে যায় অনেক সমীকরণ। ছবি: সংগৃহীত।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৫
Share: Save:

গ্যাংস্টার ড্রামার বড় সমস্যা, প্রথম সিজ়নের নতুনত্ব দ্বিতীয় সিজ়নে আর সাড়া জাগায় না। রক্তপাত, নৃশংসতা, বন্দুকের আকাশভেদী আওয়াজ... অ্যামাজ়ন প্রাইমের ‘মির্জ়াপুর’ সিরিজ়ের অনুগত দর্শক এ সব ক’টি উপাদানের সঙ্গেই পরিচিত। এই সিজ়নে নজর কাড়তে পরিচালক গুরমিত সিংহ ও মিহির দেশাইয়ের সহায়, পূর্বাঞ্চলের রাজনীতির মারপ্যাঁচের পরিধি বাড়ানো। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা অনুমেয়। সঙ্গে নতুন চরিত্রদের অভিষেক এবং মির্জ়াপুরের মসনদ দখলের লড়াই আরও টানটান করা। তবে দশটি পর্বের সিজ়নে অনেক ক্ষেত্রেই ঝিমিয়ে মির্জ়াপুর টু পয়েন্ট ও।

ভাই বাবলু ও স্ত্রী সুইটিকে হারিয়ে ঘায়েল হওয়া গুড্ডু পণ্ডিতের (আলি ফজ়ল) নিজের পায়ে দাঁড়াতেই প্রথম পর্ব অতিক্রান্ত। গুড্ডুর শ্যালিকা গোলু (শ্বেতা ত্রিপাঠী শর্মা) হাতে তুলে নেয় বন্দুক। যে লালার (অনিল জর্জ) মেয়ের রিসেপশনে অর্ধেক পরিবার হারায় গুড্ডু, ব্যবসা ও প্রতিশোধের জন্য তার বলিয়ার প্রাসাদ হয়ে ওঠে গুড্ডু ও গোলুর মাথা গোঁজার ঠাঁই।

আগের সিজ়নের শেষ পর্বে বীণা (রসিকা দুগ্গল) হাতে তুলে নিয়েছিল করাত। বন্দুকের নল নিজের গলায় ঠেকিয়েও থমকে যায় সে। বুদ্ধির জোরে ঘুরিয়ে দেয় দাবার ছক। গুড্ডু-গোলুর বদলা নেওয়ার ছকের নেপথ্যে তারই মগজাস্ত্র। কালিন ভাইয়া (পঙ্কজ ত্রিপাঠী) ও তার ছেলে মুন্নার (দিব্যেন্দু) তরজা সময়ে সময়ে রং বদলায়। মুন্নার জীবনে আসে ক্ষমতার অলিন্দে থাকা আর এক নারী, মাধুরী (ইশা তলোয়ার)।

মির্জ়াপুর (সিজ়ন টু)

(ওয়েব সিরিজ়)
পরিচালনা: গুরমিত সিংহ, মিহির দেশাই
অভিনয়: পঙ্কজ, আলি, দিব্যেন্দু, শ্বেতা, রসিকা, বিজয়
৫.৫/১০

গুড্ডু-শবনম, ডিম্পি-রবিন (প্রিয়াংশু পাইনুলি, নতুন চরিত্র), গোলু-শত্রুঘ্ন (বিজয় বর্মা) তিনটি প্রেমকাহিনির ট্র্যাক দেখাতে অনেকটা সময় নেওয়া হয়েছে, যার হয়তো দরকার ছিল না। শত্রুঘ্নর যমজ ভাই ভরত এবং তাদের দদ্দার (লিলিপুট) আবির্ভাব সাব-প্লট হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। রতিশঙ্করের ছেলে শরদ (অঞ্জুম শর্মা) এই সিজ়নে দাবার অন্য একটি শক্তিশালী ঘুঁটি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। তবে গুড্ডু বা মুন্না... কারও সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারল না চরিত্রটি। তা হতাশাজনক।

এই সিজ়নের গতি একমুখী, মুখ্য চরিত্রগুলিও তা-ই। মুন্না ছাড়া কারও জীবনেই বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয় না। আবেগ যেমন অনেকটা প্রাধান্য পেয়েছে, তেমনই নতুন নতুন চরিত্র এই ড্রামায় অনাবশ্যক মেদ যোগ করেছে। বিশেষ করে সিওয়ানের ত্যাগীরা এই ড্রামায় ঠিক কী নতুনত্ব যোগ করেছে, তা স্পষ্ট নয়।

‘মির্জ়াপুর টু’-এর প্রাণ গুড্ডু এবং মুন্না। শোয়ের সবচেয়ে নজরকাড়া দৃশ্য, যখন এক হাতে মুন্না এবং অন্য হাতে শরদের টুঁটি চেপে গুড্ডু তার হৃত ক্ষমতার আস্ফালন করতে চায়।। তার পরের সংলাপ, ‘বহত মজ়া অায়া...’ এই সিজ়নের আলি চরিত্রের খাতিরেই বেশি পরিণত ও সংযত।। পঙ্কজ, দিব্যেন্দু, কুলভূষণ খরবান্দা স্বমহিমায় বিরাজমান। শ্বেতাও ভাল, তবে তাঁর চরিত্র প্রহেলিকার মতো। সিজ়নের চূড়ান্ত পর্বে বদলে যায় অনেক সমীকরণ। তবে প্রথম সিজ়নের ‘ভৌকাল’ (তাণ্ডব) তৈরি করা আগামী দিনেও কঠিন চ্যালেঞ্জ নির্মাতাদের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Web Series Mirzapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE