মৌসুমীর সঙ্গে
পরপর দু’দিন এত খারাপ খবর! কাল ইরফান (খান) আর আজ ঋষি (কপূর)! দু’জনেই আমার পরিচিত, ইরফান স্নেহভাজন। ঋষি তো বন্ধু, সহশিল্পী। কপূর পরিবারটা হল খাঁটি খানদানি পরিবার। ওরা মানুষকে ভীষণ ভালবাসতে জানে। ওই পরিবারের ছেলে ঋষি আমার সমসাময়িক।
‘দো প্রেমী’, ‘জ়হরিলা ইনসান’ ছবিতে আমার নায়ক, ‘ঘর পরিবার’, ‘বিজয়’ সিনেমাতেও একসঙ্গে কাজ করেছি। তুইতোকারির সম্পর্ক ছিল আমাদের। আমাকে খেপিয়ে মজা পেত। তখন আমার গর্ভে পায়েল, একটু গোলগাল হয়েছি। একবার শুটিংয়ের সময়ে চিন্টু আমাকে ‘মোটি’ বলে ডাকতে শুরু করল। পাহাড়ে ওঠার দৃশ্যে আবার একটু চিন্তিত ও। পরিচালককে বলল, ‘ওর তো এখন পাহাড়ে ওঠা ঠিক হবে না।’ তার পর বলল, ‘আচ্ছা পালকি বানাও, মোটি পালকিতে উঠবে। তবে ওর আগে আমি উঠে দেখব পালকি মোটির ভার নিতে পারবে কি না।’
আমাদের রান্নাঘরটির প্রতি ওর বিশেষ টান ছিল। ওরা আমার প্রতিবেশী। একদিন বিকেলে চিন্টু এসেছে। জিজ্ঞেস করেছি, চা খাবি না কফি? ও বলল, ‘বাঙালি বাড়ি এসেছি, চিংড়ির মালাইকারি দে শিগগিরি।’
দু’জনেই চঞ্চল, বকবক করতে ভালবাসি। ওর ঠাকুরদাও বেশ মানুষ ছিলেন। আমার বিয়েতে পৃথ্বীরাজ কপূর পাঁচ টাকা দিয়েছিলেন। শশী কপূর শুনে খুব গম্ভীর ভাবে বলেছিলেন, ‘‘বাবুজি আমার বিয়েতেও তাই দিয়েছিলেন।’’
আমি তো ওর মতোই স্পষ্টবক্তা। তাই বলত, ‘তোর আর আমার কিচ্ছু হবে না। রাজনীতি করি না, কাউকে তোষামোদ করি না। অ্যাওয়ার্ড ভুলে যা। বুড়ো হলে পাব হয়তো।’
কিন্তু কোথায় আর তেমন বুড়ো হল? বিনোদ খন্নার অন্ত্যেষ্টিতে খুব কম লোক দেখে দুঃখ পেয়েছিল চিন্টু। ওর শেষ দিনে কত মানুষ ছটফট করেও আসতে পারলেন না! ও যখন অসুখের সঙ্গে লড়াই করছিল, আশাবাদী ছিলাম যে, চিন্টু জিতে যাবে। ও-ই যে আমাকে শিখিয়েছিল পাশের অভিনেতার দিকে তাকাবে না। মন দিয়ে নিজের কাজ করবে। আমার অলটাইম হিট ‘ও হংসিনী’ গানটায় ও-ই যে ছিল!
না, না। আমি এখনও পজ়িটিভ। ঋষি কপূর থাকবে। আমাদের মনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy