পোশাক নিয়ে বিতর্কে অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য। বাংলা ধারাবাহিকের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বাংলা ধারাবাহিকে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করছেন শ্বেতা। ২০০৯ সালে ‘সিঁদুরখেলা’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে পথ চলা শুরু। এর পর থেকে একের পর এক সাফল্য পেয়েছেন। শ্বেতার প্রায় সব ধারাবাহিকই টিআরপি তালিকায় হিট। মাঝে দেবের বিপরীতে ‘প্রজাপতি’ ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে কাজের ক্ষেত্রে অভিনেত্রী একটি শর্ত দেন সবসময়। সেটি হল, পর্দায় কখনই হাতকাটা বা হাতকাটা জামা কিংবা ছোট পোশাক পরবেন না। প্রথম থেকেই নিজের এই সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন তিনি। অনেকেই তাঁকে দক্ষিণী অভিনেত্রী সাই পল্লবীর সঙ্গে তুলনা করেন। কেউ আবার শ্বেতার পোশাক-শর্ত নিয়ে কটাক্ষও করেছেন। গত কয়েকদিন ধরে তাঁকে নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের জবাব দিলেন অভিনেত্রী।
বিতর্কের সূত্রপাত একটি অনুষ্ঠানে। সেখানে গিয়ে অভিনেত্রী শ্বেতা বলেন, ‘‘আমি কখনও হাতাকাটা ব্লাউজ় পরব না, কখনও ছোট জামা পরব না। কারণ আমি শরীর বেচে রোজগার করতে আসিনি। বরং প্রতিভা বিক্রি করতে এসেছি।’’ শ্বেতার এই মন্তব্য ঘিরে সমাজমাধ্যমে হই চই। টেলিপাড়ার বেশ কিছু অভিনেত্রী শ্বেতার নাম না নিয়ে নানা ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন। হাতকাটা ব্লাউজ়, ছোট জামা পরা নিয়ে শ্বেতার আপত্তি প্রসঙ্গে চলছে মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্য।
আরও পড়ুন:
এর মাঝেই অবশ্য শ্বেতার অনুরাগীরা তাঁকে দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাই পল্লবীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। সাই পল্লবী ও শ্বেতার পোশাকের সাদৃশ্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। কারণ, সাই পল্লবী পর্দায় হাতকাটা ব্লাউজ় পরেন না, স্বল্প পোশাক পরেও কখনও দেখা যায়নি তাঁকে। যে কোনও অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গিয়েছে কেবলমাত্র শাড়ি পরেই। যদিও এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার ডট কমকে শ্বেতা বলেন, ‘‘আমি সাই পল্লবীর কোনও ছবি দেখিনি। কারণ দক্ষিণী ছবির প্রতি আমার কোনও আগ্রহ নেই। সাই পল্লবী কী ধরনের শাড়ি পরে, কী ধরনের ব্লাউজ় পরে তা আমার জানা নেই। তবে আমি আজ নয়, বরাবর বলেছি হাতকাটা ব্লাউজ় পরব না, ছোট জামা পরব না। কারণ, ওটা আমাকে মানায় না। আমার হাতে গড়নটা এই ধরনের ব্লাউজ় পরার জন্য মাননসই নয়। আর ইন্ডাস্ট্রিতে যখন শুরু দিকে এসেছিলাম, একজন খ্যাতনামী বলেছিলেন ছোট পোশাক না পরলে কাজ মেলে না। আমি বলেছিলাম, শরীর বেচতে নয়, প্রতিভা বিক্রি করতে এসেছি।’’
তবে শ্বেতা স্পষ্ট করে জানান, তিনি অন্য কারও পোশাক পরার উপর কোনও নীতি-পুলিশি করতে চান না। বরং তিনি তাঁর ধারাবাহিকের সহ অভিনেত্রী মিশমি দাস যে ধরনের আধুনিক পোশাক পরেন, তার প্রশংসা করেছেন। শ্বেতার কথায়, ‘‘কে কী পরবে সেটা আমি কেন বলে দেব? আমি পরিবার সংসার নিয়ে থাকতে ভালবাসি। এই তো মিশমি কী সুন্দর সব পোশাক পরে! ওকে মানায়, চমৎকার লাগে দেখতে। আমাকে সেই ধরনের পোশাক মানায় না, তাই পরি না। আর যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁদের প্রচুর সময় আমাকে নিয়ে ভাবার। আমার এত সময় নেই। আমি নেতিবাচক দিকে কান দিই না। কেউ যদি আমার পিছনে কিছু বলে সেটা তাঁর রুচি। আমি তো কারও নাম নিইনি। আমি শ্বেতা ভট্টাচার্যের জীবন নিয়ে বলেছি।’’
যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁদের পিছনে সময় নষ্ট যেমন করতে চান না, পাশাপাশি শ্বেতা এটাও স্পষ্ট করে দেন, ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কোনও বন্ধু নেই। তবে সকলের সঙ্গে সখ্য রয়েছে তাঁর।