Advertisement
E-Paper

‘প্রথম দিন ভয় লেগেছিল, ক্রমশ সহজ হই’, ভন্সালীর ‘হীরামন্ডি’-তে গান গাওয়ার পর কী বলছেন মধুবন্তী

‘নজরিয়া কি মারি’ গানটির জন্য কেন মধুবন্তীকেই বেছে নিলেন সঞ্জয় লীলা ভন্সালী, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন গায়িকা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ ১১:২৪
Singer Madhubanti Bagchi talks about her experience working with Sanjay Leela Bhansali

মধুবন্তী বাগচি ও সঞ্জয় লীলা ভন্সালী। ছবি-সংগৃহীত।

সঞ্জয় লীলা ভন্সালী তাঁর ছবিতে সঙ্গীতকে ভিন্ন মাত্রা দেন। ‘হীরামন্ডি’ ওয়েব সিরিজ়ও ব্যতিক্রম নয়। এই সিরিজ়ের প্রতিটি গানই সাড়া ফেলেছে। এর মধ্যে একটি গান গেয়েছেন কলকাতার গায়িকা মধুবন্তী বাগচি। ‘নজরিয়া কি মারি’ এই গানটির জন্য কেন মধুবন্তীকেই বেছে নিলেন সঞ্জয় লীলা ভন্সালী? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন গায়িকা নিজেই।

এই সিরিজ়ের সময় ও প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে গজ়ল, শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও ঠুংরিকেই বেছে নিয়েছেন ভন্সালী। ‘নজরিয়া কি মারি’ গানটি ঠুংরি ঘরানাতেই পড়ে। আর তাই সেই গানটির জন্যই মধুবন্তীকে বেছে নিয়েছিলেন ভন্সালী। গায়িকা বলছেন, ‘‘এটি নির্ভেজাল একটি ঠুংরি গান। সিরিজ়ের অন্য কোনও গানকে কিন্তু সরাসরি ঠুংরি বলা যায় না। সেইগুলির মধ্যে গজ়লের ধাঁচ রয়েছে। এক মাত্র হিন্দুস্থানি ঠুংরির ঘরানায় এই গানকেই রাখা যায়। স্যর সব সময়ে আমায় বলেন, ‘তোমার ঠুংরি বেশি করে গাওয়া উচিত’। তাই বাকি কোনও গানে পৌঁছনোর আগেই এই গানের জন্যই আমার কথা ভাবেন তিনি।’’

তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর একটি অ্যালবামের জন্য গান গেয়েছিলেন মধুবন্তী। গায়িকা মনে করে বললেন, ‘‘২০২৩-এর শুরুর দিকে ‘সুকুন’ নামে একটি অ্যালবাম বেরোয়। শ্রেয়া ঘোষাল, পাপন, রাশিদ খান অনেকেই গান গেয়েছিলেন। আমারও একটি গান ছিল।’’ এর কিছু দিন পরেই ‘হীরামন্ডি’র জন্য ডাক আসে। মধুবন্তী বলেন, ‘‘২০২২-’২৩-এর মধ্যেই ‘হীরামন্ডি’র জন্য স্যর ডাকেন। সিরিজ়ের গানগুলি এক এক করে শোনাচ্ছিলেন। কার গলায় কোনটা ভাল লাগবে, সেটা তিনিই বলে দিচ্ছিলেন।’’

একদম শুরুতে ভন্সালীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন, জানিয়েছেন মধুবন্তী। তিনি বলছেন, ‘‘শুরুর দিকে ওঁর সঙ্গে কাজ করতে বেশ ভয়ই লাগে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সহজ হয়। তিনিও গানবাজনা, শিল্প,-সংস্কৃতি এ সব নিয়ে আলোচনা করতে ভালবাসেন। ক্রমশ ওঁর সঙ্গে সহজ হই।’’ মধুবন্তী যোগ করেন, ‘‘স্যর কাজ নিয়ে খুবই খুঁতখুতে। কিন্তু ওঁর সঙ্গে আমার প্রথম করা কাজটায় উনি রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলেন। প্রথম অ্যালবাম ‘সুকুন’-এ আমার রেকর্ডিংয়ে আগে অন্য এক গায়িকা এসেছিলেন। তাঁর রেকর্ড করা গানে কিছু জায়গা পরিবর্তন করার ছিল। সেগুলি ঠিক করতেই ৫ ঘণ্টা লেগে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও আমার রেকর্ডিং-এ স্যর এসেছিলেন। মাত্র ৪৫ মিনিটে আমার গানের রেকর্ডিং হয়ে যায়। কিন্তু সে দিন সত্যিই আমার ভয় করেছিল।’’

সাধারণত প্রথম বার শুনেই কারও গান পছন্দ করেন না সঞ্জয় লীলা ভন্সালী। ক্রমশ নাকি পরিচালক নিজের মতো করে গড়ে নেন। কিন্তু মধুবন্তীর ক্ষেত্রে তা হয়নি। প্রথম দিন গায়িকাকে ভন্সালী বলেছিলেন, ‘‘প্রথম শুনেই কারও গান ভাল লাগছে, এমন খুব কমই হয়। ভাল লাগতে একটু সময় লাগে।’’ কিন্তু মধুবন্তীর রেকর্ডিং ৪৫ মিনিটে হয়ে যাওয়ায় তাঁর উপর ভরসা বাড়ে ভন্সালীর। আর তাই ‘হীরামন্ডি’র রেকর্ডিং-এর সময় মধুবন্তীর গান নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি তাঁকে। গানটিতে কিছু বদলও করতে হয়নি পরিচালককে। মধুবন্তী যোগ করেন, ‘‘গানটির রেকর্ডিং হওয়ার পরে তিনি নিজেই ফোন করেন এবং টানা পাঁচ মিনিট কথা বলেন। আমি সে সব শুনে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কোনও উত্তর দিতে পারিনি।’’

তবে ‘হীরামন্ডি’র গান এত সাড়া ফেলবে, আশা করেননি মধুবন্তী। গায়িকা বলছেন, ‘‘বর্তমানে যে ভাবে গানের ইন্ডাস্ট্রি চলছে, আশা করিনি এমন সাড়া ফেলবে। এখনকার গানে তো একটা হুকলাইন থাকতে হয়। এ সব কিছুই নেই আমাদের গানগুলিতে। কিন্তু স্যরের ছবিতে সঙ্গীত বড় ভূমিকা পালন করে। তিনি চাইলেই বর্তমান সঙ্গীতের মত ধরন এই গানগুলিতে আনতে পারতেন। তাই কোনও গানে গিটার বা কিবোর্ডের মতো পশ্চিমি যন্ত্রানুষঙ্গের ব্যবহার নেই। এই নিয়ে ওঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি সবটা নিজে আগে ভাল ভাবে জেনে-বুঝে তার পর করেন। সিরিজ়ে যে সময়কে দেখানো হয়েছে, তার মতো করেই সঙ্গীতকে তুলে ধরেছেন তিনি।’’

মধুবন্তী ছাড়া এই সিরিজ়ে গান গেয়েছেন শ্রেয়া ঘোষাল, বর্ণালি চট্টোপাধ্যায়, রাজা হাসান, শিখা যোশি, কল্পনা গন্ধর্ব, শর্মিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে গায়িকা বলছেন, ‘‘শ্রেয়াদি ছাড়া শিল্পীদের মধ্যে আর কোনও প্রতিষ্ঠিত নাম নেই অ্যালবামে। স্যর জানেন, গানগুলো এত সুন্দর যে, আলাদা করে কোনও প্রতিষ্ঠিত নামের তাঁর প্রয়োজন নেই। যে গানটা যাঁর গলায় মানায়, তাঁকেই দিয়েছেন। ‘সকল বন’ গানটি চাইলেই বলিউডের কোনও নামী শিল্পীকে দিতে পারতেন, যাঁর অনেক অনুরাগী রয়েছে। এই সব চাপ প্রযোজকদের থেকে আসে। কিন্তু ভন্সালী জানেন, তিনি ঠিক কাজটাই করছেন।’’

গানবাজনা ছাড়াও রেকর্ডিং সেটে কেমন পরিচালক, সেই সম্পর্কে মধুবন্তী বলছেন, ‘‘স্যর খুবই ভোজনরসিক। বহু গুজরাতি খাবারের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়েছেন।’’ খাবার নিয়ে সঞ্জয় নাকি বলতেন, ‘‘তোমরা তো মাছ-মাংস ছাড়া খাও না। আমাদেরও ভাল ভাল খাবার আছে।’’

উল্লেখ্য ‘পঞ্চায়েত ৩’-এ একটি গান রয়েছে মধুবন্তীর। এ ছাড়া সঙ্গীত পরিচালক সচিন জিগর, অনুরাগ সাইকিয়ার সঙ্গেও আগামী দিনে কাজ করছেন গায়িকা।

Sanjay Leela Bhansali Heeramandi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy