নবমীর দুপুর। প্রচণ্ড ব্যস্ততা চট্টোপাধ্যায় পরিবারে। এক দিকে অতিথি আপ্যায়ন, তারকাদের সমাগম। অন্য দিকে, দেবী দুর্গার পুজোর আয়োজন। তিনি দশভুজা নন, তবু একাই হাসিমুখে সব সামলাচ্ছেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়।
এই প্রথম তিনি চওড়া লাল পাড়, সাদা শাড়ির বদলে হলুদ মসলিন জামদানিতে ফুরফুরে। কোনও বিশেষ কারণ? প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। মৃদু হেসে অভিনেত্রী-সঞ্চালিকা বললেন, “কেন জানি না, এ বছর হলুদ রঙের প্রতি ঝোঁক হল। তাই একটু অন্য ভাবে সাজার চেষ্টা করলাম।” কথার ফাঁকে মায়ের গা ঘেঁষে দাঁড়াল একরত্তি আদিদেব। সেও মায়ের মতো হলুদ রঙের ধুতি-পাঞ্জাবিতে বাঙালি বাবু!
সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে অঙ্কুশ হাজরা, ঐন্দ্রিলা সেন এবং বোন ঊষসী। নিজস্ব চিত্র।
ছেলের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে সুদীপার দাবি, সারা ক্ষণ পুরোহিতমশাই আর তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দুষ্টুমি করছে। মায়ের মুখে নিজের কথা শুনে কচি মুখে হাসি ছড়ালো। আদিদেব বলে উঠল, “পাঁচ দিন ধরে ছুটি। পড়তে হচ্ছে না। কী মজা!” পুজো হোক বা অন্য দিন, আদিদেবের বিরিয়ানি আর মাংস চাই। যদিও নবমীতে বাড়ির পাঁঠার মাংসের বিশেষ পদ কিছুতেই ছাড়ে না। এ বছর তার মা বলেছে, তাকে নতুন খেলনা দেবে। সেই আনন্দেই মশগুল আদিদেব। এও জানিয়েছে, মায়ের হাতে হাতে পুজোর জোগাড় করে দিয়েছে।
প্রতি বছর সুদীপার জন্য তাঁর দেবী মা কিছু না কিছু চমক রাখেন। এ বছর কী ঘটালেন? সুদীপার কপট অনুযোগ, “আর বলবেন না। এ বছর মা টিকলি নিলেন। তাঁর টিকলি আছে, কিন্তু হারিয়ে গেল! নতুন টিকলি কেনার পর পুরনো টিকলি পাওয়া গেল।”
মা সুদীপার সঙ্গে ছোট্ট আদিদেব। নিজস্ব চিত্র।
কথার ফাঁকে দেবীর ভোগ উপস্থিত। থরে থরে সাজানো রকমারি পদ। আমিষ পদও আছে। সে দিকে দেখিয়ে সুদীপা বলে উঠলেন, “বাঙালি পুজোয় আমিষ খায়, এই নিয়েও কটাক্ষ! আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই, দেবী আমাদের ঘরের মেয়ে হিসাবে পূজিতা। তিনি সধবা। তাই তাঁকে আমরা নিরামিষ ভোগ দিই না।”
দেবী দুর্গার কাছে কী প্রার্থনা অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার? নিজস্ব চিত্র।
হঠাৎ এক প্রবীণাকে নিয়ে অল্পবয়সি মেয়ে এসে দাঁড়ালেন। সমাজমাধ্যমে সুদীপার পুজোর কথা জেনেছেন। তার পর থেকেই প্রবীণার ইচ্ছে, তিনি অভিনেত্রীর বাড়ির ‘মা’কে দেখবেন। সদ্য বড় অস্ত্রোপচার থেকে উঠেছেন। শুনেই আন্তরিক ভাবে অভিনেত্রী-সঞ্চালিকার অনুরোধ, “মায়ের ভোগ খেয়ে যাবেন।”