সাদা পোশাক। মাস্কে ঢাকা মুখ। এলোমেলো চুল। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে এলেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখন্ডে। সঙ্গে ছিলেন সুশান্তের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। গতকাল সুশান্তের শেষকৃত্যে উপস্থিত হতে না পারলেও আজ তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সরাসরি সুশান্তের বাড়িতে আসেন অঙ্কিতা।
সুশান্ত মারা যাওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও পোস্ট করেননি অঙ্কিতা। প্রাক্তনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এক সংবাদমাধ্যমের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি 'হোয়াট' বলে চুপ করে গিয়েছিলেন। ব্যস, তার পর থেকে গত দু'দিন স্বেচ্ছায় ক্যামেরার অগোচরেই ছিলেন তিনি। যদিও অঙ্কিতার ঘনিষ্ঠ সুত্র থেকে জানা গিয়েছে, খবরটা পাওয়ার পর থেকেই অঝোরে কেঁদে চলেছিলেন তিনি। চেয়েছিলেন সুশান্তের শেষকৃত্যে আসতেও। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।
অবশেষে বুধবার সুশান্তের বাড়ি ঢুকতেই ক্যামেরাবন্দি হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। তাঁর ক্লান্ত চোখ তখন খুঁজে চলেছে পুরনো প্রেম, বন্ধুত্ব। পরেছিলেন শোকের পোশাক। চোখ মুচ্ছিলেন বারবার। সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে আপাতত তাঁর পরিবার রয়েছেন। এই দুঃসময়ে তাঁদের পাশে থাকার ইচ্ছা নিয়েই হাজারও ট্রোলিং, মিম, ক্যামেরাকে অবজ্ঞা করেই পৌঁছে যান এই মারাঠি মেয়ে।
#ankitalokhande today at #SushantSinghRajput home to meet his family #rip 🙏
ধারাবাহিক ‘পবিত্র রিশতা’ য় একসঙ্গে কাজ করার সূত্র ধরেই সুশান্ত এবং অঙ্কিতা কাছাকাছি এসেছিলেন। সাল ২০০৯। তাঁদের প্রেম ভীষণ নজর কেড়েছিল সে সময়। একে দু’জনেই উঠতি। তা ছাড়া একে অন্যের অনুপ্রেরণাও হয়ে উঠেছিলেন। একসঙ্গে থাকতেও শুরু করেছিলেন দু'জনে। সুশান্তের সম্পর্কগুলির মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ প্রেম ছিলেন অঙ্কিতাই। ২০১৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদের খবরে মন খারাপ হয়েছিল ফ্যানেদের।
কারণ হিসেবে জানা গিয়েছিল, 'রাবতা' ছবির শুটিংয়ের সময় কৃতী শ্যাননের সঙ্গে সুশান্তের ঘনিষ্ঠতা। অঙ্কিতা চেয়েছিলেন সুখের সংসার। সুশান্ত চেয়েছিলেন সময়।
সুশান্তকে বেশি করে পাবেন বলেই, কাজ ছেড়েছিলেন, ঘর আঁকড়ে ধরেছিলেন অঙ্কিতা। তা নিয়ে তিনি সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে, ‘‘কাজ যখন করতাম তখনও কোনও আক্ষেপ ছিল না। কাজ ছেড়ে যখন ঘরে মন বসানোর চেষ্টা করেছি তখনও নয়। আসলে আমার চাওয়াটাই খুব কম। যেটুকু চাই সেটুকু ভাল করে পেলেই হল।’’ বলেছিলেন, ‘‘চেনা মানুষকে বদলে যেতে দেখলাম।’’
শোনা যাচ্ছিল, সুশান্তের পর অঙ্কিতার জীবনেও নাকি নতুন স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন রাইপুরের ব্যবসায়ী বিকাশ জৈন। এক ‘কমন’ বন্ধুর মাধ্যমে আলাপ, ঘনিষ্ঠতা এবং তাঁকেই বিয়ে করবেন বলে নাকি ঠিক করেছিলেন অঙ্কিতা। যদিও অঙ্কিতা তা কোনও দিনই স্বীকার করেননি।
প্রেম আসে, প্রেম যায়... কিন্তু প্রথম প্রেম? তা হয়তো আজও ভুলতে পারেননি অঙ্কিতা লোখন্ডে।