প্রয়াত টলিউডের জনপ্রিয় চিত্রগ্রাহক সৌম্যদীপ্ত গুইন। ভিকি নামেই সবাই চেনে তাঁকে। বয়স মাত্র ৪০! পরিচালক রাজা চন্দের দীর্ঘদিনের সঙ্গী তিনি। পরিচালক আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছেন, খবর পেয়ে চিত্রগ্রাহকের কসবার বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ তখন সৌম্যদীপ্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে ব্যস্ত।
পরিচালক প্রেমেন্দুবিকাশ চাকীর সঙ্গেও দীর্ঘ ১৫ বছর কাজ করেছেন প্রয়াত চিত্রগ্রাহক। তিনি জানিয়েছেন, কাজ নিয়েই সম্ভবত অবসাদে ভুগছিলেন। হয়তো আশানুরূপ কাজ পাচ্ছিলেন না। ভিকির বন্ধুরা প্রেমেন্দুকে জানিয়েছেন, ইদানীং সেই কারণে নিজেকে নাকি একটু গুটিয়েও নিয়েছিলেন প্রয়াত চিত্রগ্রাহক। পরিচালকের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা হয়েছিল তাঁর। প্রেমেন্দুবিকাশ তাঁকে ছোটপর্দার কাজ করার পরামর্শও দিয়েছিলেন। তিনিও ভিকির প্রয়াণে শোকস্তব্ধ।
ভিকি প্রসঙ্গে বক্তব্য জানিয়েছেন চিত্রগ্রাহক গিল্ডের সম্পাদক স্বপন মজুমদার। তিনি বলেন, “ভিকির দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। বিকেলে এনআরএস হাসপাতাল থেকে দেহ মিলবে। চিত্রগ্রাহকের আদি বাড়ি কলেজ স্ট্রিটে। পরিবার সিদ্ধান্ত নেবে উত্তর না দক্ষিণ কলকাতা, কোথায় তাঁর শেষকৃত্য হবে।” ফেডারেশন নির্ধারিত ১৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হবে ভিকির পরিবারের হাতে। স্বপনের কথায়, “শেষকৃত্য এবং শ্রাদ্ধাদির জন্য এই অর্থ বরাদ্দ। যেহেতু ভিকির স্ত্রী বর্তমান, তাই তাঁদের জন্য কিছু করা যায় কি না সেটা ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হবে।”
আরও পড়ুন:
পরিচালক রাজার কণ্ঠে ব্যথা, বিস্ময়, বিষাদ একসঙ্গে। তিনি স্মৃতি হাতড়ে বললেন, “স্বাধীন চিত্রগ্রাহক হিসাবে আমার ছবি দিয়ে ভিকির পথচলা শুরু। ছায়াছবি থেকে বিজ্ঞাপনী ছবি—সবেতে ও ছিল আমার ডানহাত। মনে হচ্ছে, সেই হাতটাই যেন কাটা পড়ল! কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না, ও আর নেই।”
দীর্ঘদিনের সহকারী সম্বন্ধে বলতে গিয়ে রাজার আরও দাবি, ভিকির মতো প্রাণবন্ত মানুষ তিনি খুব কমই দেখেছেন। “সারা ক্ষণ উত্তেজনায় টগবগিয়ে ফুটত। কোনও কাজে ‘না’ নেই। হাসিমুখে সব কাজ করত।” এ-ও জানিয়েছেন, কাজের বাইরে অন্য কোনও দিকে নজর দিতেন না তিনি। কাজে বেশি ক্ষণ সময় দিতে পারবেন বলেই কলেজ স্ট্রিটে বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কসবায় ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন ভিকি।
একই কথা স্বপনেরও। “আমাদের সঙ্গে টেলিসম্মান পুরস্কার অনুষ্ঠানে কাজ করল। সে দিনও ঘুণাক্ষরে টের পাইনি, ওর মধ্যে কোনও সমস্যা লুকিয়ে রয়েছে। ফলে, খবর শোনার পরে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল।”