করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে বিনোদন দুনিয়াও বিপর্যস্ত। জিৎ, শুভশ্রী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় থেকে দিতিপ্রিয়া রায়, ভরত কল, শ্রুতি দাস — বড় পর্দা ও ছোট পর্দার একাধিক শিল্পী, কলাকুশলী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্টুডিয়োপাড়ায় কোভিড সতর্কতা বিধির শিথিলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। তার জেরেই গত ৩ মে থেকে নয়া সুরক্ষাবিধি চালু করে ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। কিন্তু শনিবার থেকে রাজ্যে আগামী ১৫ দিনের লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় ফের শুটিং বন্ধের পথেই হাঁটতে হল বাংলার বিনোদন জগৎকে।
গত বছর লকডাউনের জেরে হওয়া আর্থিক ধাক্কাই এখনও অবধি সামলে উঠতে পারেনি বিনোদন দুনিয়া। বহু ছবির শুটিং স্থগিত। বাতিল হয়েছে ছবিমুক্তি। এখানে বেশির ভাগ কলাকুশলীই ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ সিস্টেমে কাজ করেন। সেখানে ফের পনেরো দিনের লকডাউন ঘোষণা হওয়ায়, নতুন করে আর্থিক সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা তাঁদের কপালে ভাঁজ ফেললেও লকডাউনের পক্ষেই কথা বলছে ফেডারেশন। সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বললেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সরকারি সিদ্ধান্তকে আমরা মেনে নিয়েছি।’’ আবার সিনে আর্ট ডিরেক্টর্স গিল্ডের সম্পাদক সুদীপ ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘কলাকুশলীর পাশে ফেডারেশন রয়েছে। আমরা কি ৩৬৫ দিনই কাজ পাই? এই ক’টা দিন কাজ না করা নিয়ে বেশি না ভেবে, বরং আগামী দিনে যাতে নিরাপদে কাজ করতে পারি আর কোনও সহকর্মীকে হারাতে না হয়, তার চেষ্টা থাক।’’
লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পিছনে সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন বহু শিল্পী। ‘‘লকডাউনের ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু এই দায় নিজেকেই নিতে হবে। সুরক্ষাবিধি না মানা, নির্বাচনী প্রচার, পারিবারিক অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই চলছিল। কাজ হারাতে পারি, তখন কারও মনে হয়নি। সচেতনতার অভাব ও সুরক্ষাবিধি না মানার মাসুল গুনতে হচ্ছে আজ,’’ বললেন অভিনেতা শুভ্রজিৎ দত্ত। তিনি ‘ওগো নিরুপমা’তে অভিনয় করছিলেন। একই সুর শোনা গেল ‘গঙ্গারাম’ ধারাবাহিকের অভিনেত্রী সুভদ্রা মুখোপাধ্যায়ের কথাতেও, ‘‘শুটিং বন্ধ হলে আমাদের আয় বন্ধ হয়ে যায় ঠিকই। কিন্তু তার চেয়েও দুর্ভাগ্যজনক অসংখ্য মানুষের মৃত্যু।’’