মা ববিতা কপূরের পছন্দ করা পাত্র সঞ্জয় কপূর। করিশ্মা কপূরও ছোট থেকে নাকি চিনতেন তাঁকে। সেই চেনা আর বিয়ের পরের চেনার মধ্যে এত ফারাক, কে জানত? ২০০৩ সালে ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল সঞ্জয়-করিশ্মার। শোনা যায়, এই বিয়েতে নাকি তীব্র আপত্তি ছিল করিশ্মার বাবা রণধীর কপূরের। যদিও তাঁর আপত্তি ধোপে টেকেনি। পারিবারিক বাংলো ‘কৃষ্ণারাজ ভিলা’র আকাশ সে রাতে আতশবাজির রোশনাইয়ে ঝলমলে ছিল। দুই পরিবারের উপস্থিতিতে চার হাত এক হয়েছিল।
সে দিন অভিনেত্রী একটুও বুঝতে পারেননি, মধুচন্দ্রিমায় তাঁর জন্য কত বড় বিস্ময় অপেক্ষা করছে!
বিয়ের পর থেকেই নাকি বনিবনার অভাব ছিল তাঁদের মধ্যে। বিচ্ছেদ চলাকালীন এমনই অভিযোগ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই সময় ফাঁস করেন তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া একাধিক অত্যাচারের কথা। যা সঞ্জয় এবং তাঁর পরিবার মিলে করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মধুচন্দ্রিমার দিনেই তাঁকে এক বন্ধুর কাছে নিলামে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন সঞ্জয়। অভিনেত্রীর কত দর উঠেছে, সে কথাও জানাতে ভোলেননি! করিশ্মাকে বন্ধুর শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার জন্য রীতিমতো জোর করেছিলেন। বিয়ের পরেই স্বামীর কুপ্রস্তাবে হতবাক হয়ে যান অভিনেত্রী! কোনও মতে নিজেকে সামলে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রাজি হননি সঞ্জয়ের প্রস্তাবে। একের পর এক প্রস্তাব নাকচ হওয়ায় ক্ষিপ্ত শিল্পপতি নববধূর গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করেননি।
আরও পড়ুন:
অকথ্য অত্যাচারের কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অভিনেত্রীর অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাঁর গায়ে হাত তুলেছিলেন সঞ্জয়ের মা। অভিনেত্রীর দোষ, তিনি শাশুড়ির বেছে দেওয়া পোশাক পরতে পারেননি। সঙ্গে সঙ্গে প্রয়াত প্রাক্তন স্বামী নিজের মাকে বৌমার গায়ে হাত তোলার নির্দেশ দেন! একটা সময়ের পর উভয়েই বুঝতে পারেন, তাঁদের বিয়ে বিচ্ছেদের দিকে গড়াচ্ছে। তত দিনে করিশ্মা সামাইরা ও কিয়ান— দুই সন্তানের মা। ২০১৪-য় দম্পতি প্রথম বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। সন্তানের জন্য খোরপোশ দাবি করেন অভিনেত্রী। কিন্তু সঞ্জয় তা দিতে চাননি। শোনা যায়, সেই সময়েই পরস্পরের প্রতি প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করতে থাকেন। করিশ্মা মুখ খোলেন, অত্যাচারের কথা বলেন। সঞ্জয়ের অভিযোগ ছিল, অভিনেত্রী নাকি তাঁর সম্পত্তির লোভে বিয়ে করেছিলেন! ২০১৬-য় পাকাপাকি বিচ্ছিন্ন হন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার আচমকা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সঞ্জয়ের। প্রাক্তন ‘জামাইবাবু’র মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ করিনা কপূর খান। স্বামী সইফ আলি খানকে নিয়ে তিনি পোঁছে গিয়েছেন দিদি করিশ্মার কাছে। কথিত, মৃত্যু মানে শত্রুতার শেষ। তিক্ত অতীত মনে রাখে না কেউ।
করিশ্মা কি পারবেন তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অত্যাচার ভুলতে? কোনও নারী কি পারে?