কলেজ ক্যাম্পাস থেকে সোশ্যাল মিডিয়া... বাঙালির রাজনৈতিক সচেতনতা জাহিরের প্ল্যাটফর্মের অভাব নেই। সমাজ ও তার মানুষের রাজনৈতিক মননশীলতা এক সময়ে প্রতিফলিত হত সেলুলয়েডেও। তবে বিগত কয়েক বছরের বাংলা ছবির ধারা পর্যবেক্ষণ করলে পুরোদস্তুর ‘রাজনৈতিক’ ছবি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ২০১৯-এ বাংলা রাজনৈতিক ছবি, অপর্ণা সেনের ‘ঘরে বাইরে আজ’ এবং অনীক দত্তের ‘ভবিষ্যতের ভূত’। বরং গত ক’বছরে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের সংখ্যা বেড়েছে টলিউডের শিল্পীদের।
এর পাশে বলিউডকে রাখলে সেখানে ছবিটা উল্টো। গত কয়েক বছরে হিন্দি ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক রাজনীতি বিষয়ক ও ব্যক্তিত্বদের নিয়ে ছবির বহর বেড়েছে। আর সেখানে যাঁরা রাজনীতিতে আসছেন, তাঁদের সিনেমায় কেরিয়ার অস্তমিত। টলিউড ও বলিউডের এই তুলনায় কোনও পক্ষকে আদৌ কি ‘আদর্শ’ বলে ধরা যায়? তবে দুই ইন্ডাস্ট্রির পর্দার ‘রাজনীতি’ উসকে দিচ্ছে অন্য অনেক প্রশ্ন।
রাজনৈতিক ছবি বানাতে এখনকার বাঙালি পরিচালকদের অনীহা কেন? পরিচালক সুদেষ্ণা রায় এই অভিযোগ মানতে অস্বীকার করলেন। ‘‘রাজনীতি মানেই প্রাতিষ্ঠানিক বা মঞ্চের রাজনীতি নয়। সমাজ-পরিবারের অন্তর্নিহিত রাজনীতিও এখনকার বাংলা ছবিতে ফুটে উঠেছে। আর ‘ঘরে বাইরে আজ’-এর পাশাপাশি ‘গোত্র’কেও আমি রাজনৈতিক ছবি বলব। রাজ চক্রবর্তীর আগামী ছবি ‘ধর্মযুদ্ধ’ও সে অর্থে রাজনৈতিক। ‘গুমনামী’ও তা-ই।’’ পরিচালক অরিন্দম শীলের কাছে এই প্রশ্ন রাখা হলে তিনি বলেন, ‘‘মৃণাল সেনের ‘কলকাতা ৭১’-এর মতো ছবি এখন হয় না। হিন্দি ছবির কথা তুললে অনেক বছর আগে প্রকাশ ঝা ‘গঙ্গাজল’ বানিয়েছিলেন। তার পরে হিন্দিতেও তেমন কাজ হয়নি। তার দায় শুধু পরিচালকদের নয়, রাষ্ট্রেরও। চারদিকে এত ভয়ের বাতাবরণ যে, স্পষ্ট কথা কেউ সাহস করে বলতেই পারছে না।’’ পরিচালক এটাও মনে করিয়ে দিলেন, এখনকার হিন্দি ছবিগুলি ঠিক অর্থে ‘রাজনৈতিক’ নয়। বরং অনেক বেশি প্রোপাগান্ডাধর্মী।