Advertisement
E-Paper

ভাত-রুটি না কি সব্জি, প্রথম পাতে কোনটি থাকে? অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমাবে খাবারের সঠিক ক্রম

খিদে অনুযায়ী খাবার খাওয়ার অভ্যাস নেই অনেকের। পেট অতিরিক্ত ভরে গেলেও খাবার খেতে থাকেন তাঁরা। আবার উল্টো দিকে, ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই কম খেতে শুরু করেন। তাই কিছু ক্ষণ পরেই প্রবল খিদে চেপে বসে। ফলে ডায়েট ভেঙে ফেলতে সময় লাগে না। এই ধরনের প্রবণতা কমাবেন কী ভাবে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৪২
খাবার খাওয়ার ১০টি স্বাস্থ্যকর নিয়ম।

খাবার খাওয়ার ১০টি স্বাস্থ্যকর নিয়ম। ছবি: সংগৃহীত।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, বদহজম কমানো, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা ইত্যাদির মূলমন্ত্র, পরিমাণ বুঝে খাওয়া। এ দিকে দ্রুত গতির জীবনে কোনও হিসেব-নিকেশেরই সময় নেই। খিদে কতটা, খাওয়া উচিত কতটা, কিছু না বুঝেই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন অনেকে। আবার উল্টো দিকে, ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই কম খেতে শুরু করেন। সেখানেও মাপজোকের বালাই থাকে না। তাই কিছু ক্ষণ পরেই প্রবল খিদে চেপে বসে। ফলে ডায়েট ভেঙে ফেলতে সময় লাগে না। সম্প্রতি হায়দরাবাদের স্নায়ুরোগ চিকিৎসক সুধীর কুমার নিজের এক্স-এর পাতায় সে বিষয়ে জানিয়েছেন, খিদে মিটিয়ে কম খাওয়ার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে প্রতি দিনের কিছু সহজ অভ্যাসে। ১০টি কৌশল মানলেই অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমবে, আবার পেটও খালি থাকবে না।

পরিপার্শ্বের নিয়ন্ত্রণ রাখুন নিজের হাতে: ছোট বাটি বা থালা ব্যবহার করা শুরু করুন। তাতে মস্তিষ্কের ধারণা হবে, অনেকখানি খেয়ে ফেলেছেন। সেই সঙ্কেতে পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতি তৈরি হবে। হাতের কাছে খাবারদাবার রাখার অভ্যাস থাকলে এখনই বদলে ফেলুন। চোখের সামনে ভাজাভুজি বা প্রক্রিয়াজাত খাবার না রাখাই ভাল। পরিবেশনের সময়ে টেবিলে সমস্ত খাবার রাখবেন না। রান্নাঘর থেকে বার বার নিয়ে এসে খেলে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

খাবার খাওয়ার পাত্র বদল করুন।

খাবার খাওয়ার পাত্র বদল করুন। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ধীর গতিতে খাওয়াদাওয়া করুন: খাবার সময়ে তাড়াহুড়ো করলে মস্তিষ্ক বুঝে উঠতে পারে না, কখন পেট ভরে গিয়েছে। এই বুঝে ওঠার কাজটি করতে মস্তিষ্কের সময় লাগে প্রায় ১৫-২০ মিনিট। তাই চিকিৎসক ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়া পরামর্শ দিচ্ছেন। তাতে শরীর তৃপ্ত হয়, খিদেও অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে থাকে। এক একটি গ্রাসের মাঝে চামচ বা হাত নামিয়ে রাখা উচিত।

সকলের সঙ্গে বসে খেলে সতর্ক থাকুন: অনেকে মিলে একসঙ্গে খেতে বসলে (তা সে রেস্তরাঁ হোক বা অফিস অথবা বাড়ি) বেশি খাওয়া হয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে। গল্প করতে করতে খাওয়া হয় বলে সময়কালও বেড়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার প্রথমে পরিবেশন করে দিন। পরে দরকার পড়লে না হয় দ্বিতীয় দফা খাবার নেওয়া যাবে। পেট ভরেনি মনে হলে জল পান করলেও উপকার মিলবে।

খাবারের ক্রম সঠিক রাখুন: সব্জি এবং স্যালাড দিয়ে খাওয়া শুরু করুন। মাঝে রাখুন প্রোটিন। শেষে থাকুক কার্বোহাইড্রেট। খাবার খাওয়ার পরেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। কিন্তু খাবারের ক্রম মেনে খেলে এই সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে। উপরন্তু দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভর্তি থাকবে। পাতে প্রথমেই ভাত, রুটি বা মিষ্টির মতো পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট না রাখা ভাল। এতে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং খানিক বাদেই আবার খিদে পেয়ে যায়।

প্রোটিন ও ফাইবার ভরা খাবার খান: প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ধীরে হজম হয়, ফলে দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরা থাকে। ডিম, মাছ, ডাল, ওট্‌স, সব্জি, ফল, বাদাম ও বীজ— এগুলি ক্যালোরি বাড়ায় না, তবে পেট ভরিয়ে রাখে। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলি পেট ভরায় না, বরং ক্যালোরিন বাড়ায়। প্রত্যেক বার খাবার খাওয়ার সময়ে পাতে যেন প্রোটিনের অন্তত একটি উৎস থাকে।

প্রোটিন ও ফাইবার রোজ খেতে হবে।

প্রোটিন ও ফাইবার রোজ খেতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।

ঘুমের পরিমাণ বাড়িয়ে মানসিক চাপ কমান: যাঁদের ঘুম ঠিকমতো হয় না, তাঁদের শরীরে ঘ্রেলিন হরমোন বেড়ে যায়, যা খিদে বাড়ায়। পাশাপাশি, লেপটিন হরমোন কমে যায়, ফলে খিদে সহজে মেটে না। নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং পাচনতন্ত্রকে সক্রিয় রাখে। মানসিক চাপ কমানোর জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা, ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করে যেতে হবে। এই দুই বিষয় ঠিক না থাকলে খিদের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না।

দিনভর সক্রিয় থাকুন: চলাফেরা না করলে শরীরে শক্তি খরচ কমে যায় এবং খাওয়ার ইচ্ছে বাড়ে। নিয়মিত হাঁটা, যোগাসন বা হালকা স্ট্রেচিং হজমক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। চিকিৎসকের পরামর্শ, প্রতি বার খাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিট হেঁটে নিতে হবে, যাতে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হজম ভাল হয়। দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকার প্রবণতা কমাতে হবে। মাঝেমধ্যে শরীরকে সক্রিয় রাখলে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি উন্নত হয়।

শরীরে জলের চাহিদা মেটান: প্রতি বার খাওয়ার আগে এক গ্লাস জল পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। এতে খাওয়ার আগেই পেট ভর্তি ভরা মনে হয়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ হয়। অতিরিক্ত চিনি মেশানো জ্যুস বা পানীয়ের থেকে দূরে থাকুন। এগুলিতে পেট ভরে না, বরং ক্যালোরি বেড়ে যায়।

মনোযোগ দিয়ে খাওয়াদাওয়া করুন: খাওয়ার সময় টিভি বা ফোনে মন দেওয়া উচিত নয়। পুরো মনোযোগ খাবারের দিকে না থাকলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে পেটে অল্প জায়গা রেখে খেতে হবে।

খাবারের পরিমাণ মেপে খান: আগে থেকেই খাবার মেপে রাখুন। মিল বাদ দেবেন না। অনেক ক্ষণ পেট খালি রাখলে পরবর্তীতে অতিরিক্ত খাওয়ার ঝোঁক বাড়ে।

Eating Rule Overeating problems Healthy Lifestyle Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy