জিমে না গিয়েও পেশি মজবুত করা যায়, ফিটনেস বাড়ানো যায়— এ কথা সকলেরই জানা। কিন্তু যদি সরঞ্জাম নিয়েই ব্যায়াম করতে চান, তা-ও কিন্তু বাড়িতেই সম্ভব। তার জন্য ঘরেই ছোটখাটো জিম তৈরি করে ফেলা যায়। করিনা কপূর খানের ফিটনেস প্রশিক্ষক মহেশ ঘানেকর জানিয়েছেন, অল্প জায়গা নিয়েই ‘হোম জিম’ গড়ে তোলা সম্ভব। তাঁর কথায়, ‘‘আপনার শরীরই সবচেয়ে বড় যন্ত্র, শুধু তাকে সাহায্য করার জন্য দরকার কয়েকটি সঠিক উপকরণ।’’
হোম জিমের জন্য ১৫টি সরঞ্জামের কথা বলা হয়েছে। বাড়িতে জায়গা এবং প্রয়োজন অনুসারে তালিকা থেকে বেছে নিতে পারেন। সুপারিশ করছেন মহেশ।
১. ডাম্বেল: হাত, কাঁধ, বুক ও পিঠের পেশি শক্ত করতে, হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে, ভঙ্গি ঠিক রাখতে এই যন্ত্রের প্রয়োজন। আড়াই থেকে ২০ কেজি ভারের ডাম্বেল বাড়িতে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
ডাম্বেল। ছবি: সংগৃহীত।
২. মেডিসিন বল: কোর পেশি এবং শরীরের উপরের অংশের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এটি। শরীরের ভারসাম্য ও সমন্বয় বাড়াতে পারে। ১-৫ কেজির ভারের বল ঘরে রাখা দরকার।
মেডিসিন বল। ছবি: সংগৃহীত।
৩. জাম্পিং বক্স: ‘প্লায়ো বক্স’ নামেও পরিচিত। এই বাক্সের সাহায্যে প্লায়োমেট্রিক ব্যায়াম করা যায়। এতে পায়ের পেশি শক্তিশালী হয়। একাধারে দ্রুত হাঁটাচলা করার ক্ষমতা এবং হৃদ্যন্ত্রের কর্মক্ষমতাও বাড়ে।
জাম্পিং বক্স। ছবি: সংগৃহীত।
৪. অলিম্পিক বারবেল: ৫ ফুটের যন্ত্র ভারোত্তোলনের ক্ষমতাবৃদ্ধি ও শক্তিবৃদ্ধি করতে পারে। স্নায়ু, পেশির ক্ষমতা এবং শরীরের ভারসাম্যও উন্নত করে। পাশাপাশি, হাড়ের স্বাস্থ্যও ভাল হয়। যার ফলে অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
অলিম্পিক বারবেল। ছবি: সংগৃহীত।
৫. বারবেল লক্স: বারবেলের রড থেকে যাতে প্লেট গড়িয়ে পড়ে না যায়, তার জন্য তৈরি হয়েছে লক্স। এর দ্বারা বারবেলের দু’প্রান্ত লক করে রাখা যায়। বারবেল কিনলে এগুলিও কিনে রাখা নিরাপদ।
বারবেল লক্স। ছবি: সংগৃহীত।
৬. পাওয়ার রক: বারবেল নিয়ে শরীরচর্চা করার জন্য একটি বিশেষ খাঁচা রাখা হয়। পুলআপ, ডিপ্স বা সারা শরীরের শক্তিবৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত ব্যায়ামের ক্ষেত্রেও কাজে লাগে এটি।
পাওয়ার রক। ছবি: সংগৃহীত।
৭. স্টেপার: স্টেপার হল স্টেপিং ব্যায়াম করার জন্য মঞ্চের মতো একটি যন্ত্র। কার্ডিয়োভাসকুলার ফিটনেস, শরীরের নিম্নাংশের শক্তি এবং সহনশীলতা উন্নত করার জন্য এগুলি প্রয়োজন। কার্ডিয়ো ও পায়ের ব্যায়ামের জন্য উপযোগী এই যন্ত্র। শরীরের রক্তসঞ্চালন ও ভারসাম্য উন্নত করে।
স্টেপার। ছবি: সংগৃহীত।
৮. কেট্লবেল: একসঙ্গে একাধিক পেশির ব্যায়াম করা সম্ভব এই যন্ত্রের সাহায্যে। পাশাপাশি, পেটের চর্বি কমায়, গায়ের জোর বাড়ায়।
কেট্লবেল। ছবি: সংগৃহীত।
৯. বাম্পার প্লেট: এগুলি রাবারের আস্তরণ দেওয়া ওয়েটপ্লেট। হোম জিমের জন্য নিরাপদ। শক্তিবৃদ্ধির জন্য ৫-২৫ কেজি ওজনের প্লেট রাখার সুপারিশ করছেন মহেশ।
বাম্পার প্লেট। ছবি: সংগৃহীত।
১০. মাল্টিকেব্ল মেশিন: একই যন্ত্রে নানাবিধ উপকার। একাধিক কেব্ল বা তার দিয়ে হাতের, বুকের, পিঠের পেশি মজবুত করা যায়।
মাল্টিকেব্ল মেশিন। ছবি: সংগৃহীত।
১১. অ্যাডজাস্টেবল বেঞ্চ: গোটা শরীরের বিভিন্ন পেশির ব্যায়ামের কাজে লাগবে এই বেঞ্চ। বুকের উপরের ও নীচের অংশের পেশির জন্যেও এটি প্রয়োজন।
অ্যাডজাস্টেবল বেঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত।
১২. লেগপ্রেস মেশিন: পায়ের কোয়াড্রিসেপ্স, হ্যামস্ট্রিং, গ্লুট্স ইত্যাদি পেশির জোর বাড়াতে এই যন্ত্র উপকারী। পেশির ঘনত্ব বৃদ্ধিতেও কাজে আসে।
লেগপ্রেস মেশিন। ছবি: সংগৃহীত।
১৩. যোগাসনের ব্লক: শরীরের ভঙ্গি, নমনীয়তা উন্নত করার জন্য উপযুক্ত। একই সঙ্গে যোগাসনের সময়ে কাজে লাগে এই ব্লকগুলি। কঠিন যোগের সময়ে ব্লকের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
যোগাসনের ব্লক। ছবি: সংগৃহীত।
১৪. যোগাসনের ম্যাট: বাড়িতে যোগাসন করতে হলে ম্যাট অপরিহার্য এক সামগ্রী। স্ট্রেচিং, যোগাসন ও ভারসাম্য বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করার জন্য ম্যাট ব্যবহার করা উচিত। এতে অস্থিসন্ধিতে চাপ পড়ার ঝুঁকি কমে।
যোগাসনের ম্যাট। ছবি: সংগৃহীত।
১৫. ফোম রোলার: ব্যায়ামের পর পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে। ক্লান্তি ও ব্যথাবেদনা কমায়।
ফোম রোলার। ছবি: সংগৃহীত।