আশ্চর্য গুণ এই ফলের। কাঁচাই খান বা পাকা— স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পেঁপে তুলনাহীন। পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন বিপাকহার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। হজম সংক্রান্ত সমস্যায় পেঁপে ওষুধের মতো কাজ করে। এতে থাকা ফাইবার শরীরের জন্য ভাল। ভিটামিন এ, সি এবং ই-তে ভরপুর পেঁপেতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মতো উপাদান। ত্বক টানটান রাখতে সাহায্যকারী কোলাজেন নামক প্রোটিনের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে পেঁপে।
এত যার গুণ, তা যে নিত্য খাবারের তালিকায় রাখলে উপকার মিলবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু সমস্যা হল, কাঁচা পেঁপে বা সেটি সেদ্ধ করে খেতে দিলে অনেকেই খেতে চান না। পেঁপের তরকারিও ছোটদের দিলে চট করে খায় না। পেঁপের তৈরি প্লাস্টিক চাটনি ছোট থেকে বড় চেটেপুটে খান বটে, কিন্তু এতে সব্জিটির গুণাগুণ আর বজায় থাকে না। অতিরিক্ত চিনিতে উপকারের চেয়ে অপকার হয় বেশি।
তবে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পেঁপে রাখার অন্য উপায়ও আছে। জেনে নিন, আর কী ভাবে পেঁপে খেতে পারেন রকমারি রান্নায়।
পেঁপের পরোটা: ময়দা নয়, গম বা রাগির আটা দিয়ে পরোটা করলে তা হবে স্বাস্থ্যকর। পরোটার জন্য আটা হালকা গরম জল দিয়ে মেখে লেচি করে নিন। হাত দিয়ে গোল ডোঙার মতো করে তার ভিতরে ভরে দিন কাঁচা পেঁপের পুর। এর জন্য পেঁপে গ্রেট করে নিন। তার সঙ্গে লেবুর রস, লঙ্কার গুঁড়ো, স্বাদমতো নুন মাখিয়ে নিন। যোগ করতে পারেন মশলাও। মিশ্রণটি পুরের মতো ভরে গোল করে বেলে নিন। তার পর ঘি দিয়ে বা সাদা তেলে উল্টে-পাল্টে সেঁকে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে পেঁপের পরোটা।
পেঁপের স্যুপ: কাঁচা পেঁপে টুকরো করে কেটে ভাপিয়ে নিন। একটি পাত্রে গোটা ধনে, আদাকুচি, লঙ্কাকুচি নাড়াচাড়া করে নিন। মিক্সারে পেঁপে, মশলা এবং সামান্য জল দিয়ে ঘুরিয়ে নিন। এ বার কড়াইয়ে সামান্য তেল দিয়ে মিশ্রণটি ফোটাতে থাকুন। যোগ করুন স্বাদ মতো নুন, গোলমরিচ, জিরেগুঁড়ো। একেবারে শেষে ঘরে তৈরি নারকেলের দুধ মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে পেঁপের স্যুপ।
পেঁপে দিয়ে বানিয়ে ফেলুন স্যুপ। দেখলে বোঝা যাবে না পেঁপে দিয়ে তৈরি। ছবি :সংগৃহীত।
পেঁপের উপমা: পেঁপে গ্রেট করে নিতে হবে। কড়াইয়ে ঘি গরম হলে প্রথমে সর্ষে, শুকনো লঙ্কা এবং কারিপাতা ফোড়ন দিন। দিয়ে দিন এক মুঠো বাদাম। সেটি ভাজা হলে পেঁপে যোগ করুন। আঁচ কমিয়ে নাড়িয়ে চাড়িয়ে নিয়ে দিয়ে দিন সুজি। স্বাদমতো নুন, কাঁচালঙ্কা দিয়ে নাড়তে থাকুন। অল্প করে জল ছিটিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করলেই তৈরি হয়ে যাবে পেঁপের উপমা।