শিশুদের নয়, বড়দেরও কৃমি হতে পারে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বাড়ি পরিচ্ছন্ন না থাকলে, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং পরিশুদ্ধ জলের অভাবে পেটে কৃমির সংক্রমণ হতে পারে। ছোটদের মতো বড়দের ক্ষেত্রে অনেক সময়েই কৃমির সংক্রমণ বোঝা যায় না। কিন্তু সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে কৃমি থেকে নানা সমস্যা হতে পারে। কৃমির সংক্রমণ শনাক্ত করতে হলে কয়েকটি লক্ষণ অবহেলা করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন:
১) পেটে কৃমি হয়েছে কি না, তা জানার অন্যতম লক্ষণ ঘন ঘন খিদে পাওয়া। পাকস্থলিতে উপস্থিত জীবাণু এবং কৃমি খাবার থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে বেঁচে থাকে। তাই ঘন ঘন খিদে পায়। সুষম আহার সত্ত্বেও কারও বেশি খিদে পেলে অনুমান করা যেতে পারে, তাঁর পৌষ্টিকতন্ত্রে কৃমি বৃদ্ধি পেয়েছে।
২) ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ির আধিক্য দেহে হরমোনের ভারসাম্যের অভাবের দিকে নির্দেশ করে। কিন্তু কয়েকটি কৃমির ক্ষেত্রে (হুক ওয়ার্ম) ত্বকে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই ধরনের কৃমির প্রভাবে দেহে ভিটামিন এ এবং জ়িঙ্কের অভাব দেখা দিতে পারে। তার ফলে ত্বকে চুলকানি হতে পারে।
৩) ঘন ঘন পেট ব্যথা, পেট ফাঁপা বা ডায়েরিয়া হলে সতর্ক হওয়া উচিত। হঠাৎ করে দেহের ওজন কমার নেপথ্যেও থাকতে পারে কৃমির সংক্রমণ। পেটে কৃমির আধিক্য তৈরি হলে পুষ্টিগুণের অভাব দেখা যায়। তার ফলে ওজন কমতে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরামর্শ অনুযায়ী, দু’সপ্তাহের বেশি পেটের সমস্যা চলতে থাকলে কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত।
৪) কয়েক ধরনের কৃমি রাত্রে ডিম পাড়ে। তাই পায়ুদ্বারে চুলকানি বা সুড়সুড়ি অনুভূত হতে পারে। অনেকেই এই অনুভূতিকে সাময়িক ভাবে অবজ্ঞা করেন। কৃমির আধিক্য বাড়লে অন্তর্বাস বা মলের মধ্যেও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
৫) কৃমি পুষ্টি উপদান শোষণ করলে দেহে আয়রনের অভাব দেখা দেয়। তার ফলে ঘন ঘন ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। অনেক সময়ে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘুম হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে আয়রনের অভাবে দেহে রক্তাল্পতাও দেখা দিতে পারে। তাই রক্ত পরীক্ষায় আয়রনের পরিমাণ কম জানা গেলে, তার নেপথ্যে দায়ী থাকতে পারে কৃমি।
শনাক্তকরণের পর
সাধারণত রক্ত পরীক্ষা থেকে কৃমির উপস্থিতি জানা যায়। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা মল পরীক্ষার পরামর্শ দেন। কারণ তার থেকে কৃমি এবং তার ডিমের উপস্থিতি জানা সম্ভব।
সতর্কতা
মাংস এবং মাছ ভাল করে রান্না না করে খাওয়া উচিত নয়। দিনের মধ্যে একাধিক বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া উচিত। বাড়ির বাইরে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। বাড়ির বাইরে পরিশুদ্ধ পানীয় জল কিনে পান করাই ভাল। বাড়ির বাইরে বাগানে বা মাটিতে খালি পায়ে হাঁটা উচিত নয়। মাটি থেকে ত্বকের মাধ্যমে কৃমির সংক্রমণ হতে পারে।