সন্তানের বুদ্ধি হবে প্রখর, কাজকর্ম থেকে পড়াশোনা— সবেতেই সে এগিয়ে যাবে, এমনটাই চান অভিভাবকেরা। কিন্তু কী ভাবে? সাফল্যের জন্য পড়াশোনা, নিয়ামানুবর্তীতা যেমন জরুরি, তেমন দরকার সঠিক পুষ্টি, বলেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। খাদ্যগুণ এবং শিশুর বৃদ্ধি-বিকাশ নিয়ে বিভিন্ন রকম গবেষণা হয়েছে নানা সময়ে। তাতেই দেখা গিয়েছে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে পুষ্টিরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট—এই সব খাদ্যগুণ যেমন শরীর ভাল রাখার জন্য জরুরি তেমনই শিশুর বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ। কোন খাবার রাখবেন খুদের পাতে?
আখরোট: শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য জরুরি হল ডিএইচএ। এটি এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড। আখরোটে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা মস্তিষ্কের গঠনের জন্য জরুরি। তা ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সেই কারণে দিনে মাত্র কয়েকটি আখরোটই শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক হতে পারে।
ডিম: ডিমে শুধু উচ্চ মাত্রার প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজই নয়, থাকে কোলাইন। মনে রাখা এবং শেখার জন্য নিউরোট্রান্সমিটারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কোলাইন নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের জন্য জরুরি। ডিমে থাকা বি ভিটামিনও মস্তিষ্কের কার্যাবলীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:
ব্লুবেরি: রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্লুবেরি ভীষণ কার্যকর। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন,ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। এতে মস্তিষ্ক সচল রাখা এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ক্ষমতাও রয়েছে।
তৈলাক্ত মাছ: তৈলাক্ত মাছ খাওয়া মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উপকারী। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। মস্তিষ্কের গঠনে যা অত্যন্ত জরুরি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কোষের আবরণ তৈরিতে এবং নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যে সব মাছে তেল বেশি, তেমন কিছু বড় মাছ নিয়মিত খাওয়াতে পারেন।
ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেটে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ক্যাফিন-সহ প্রচুর প্রাকৃতিক উদ্দীপক থাকে। এগুলি মস্তিষ্কের জন্য ভাল। এন্ডোরফিনের নিঃসরণকেও উদ্দীপিত করে, যা মেজাজ ভাল রাখতে সাহায্য করে। তাই সাধারণ চকোলেটের বদলে শিশুকে ডার্ক চকোলেট খাওয়াতে পারেন। তবে ডার্ক চকোলেটও নিয়মিত নয়, সপ্তাহে এক বা দু’দিন পরিমিত দেওয়াই ভাল।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। শিশুদের বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জি খাকতে পারে। তাই যে কোনও খাবার খাওয়ানোর আগে বুঝে নেওয়া দরকার, সেটি তার সহ্য হয় কি না। ভাল হয় যদি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়।