থাইরয়েডের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। এই অসুখের সঙ্গে পরিচিত কমবেশি সকলেই। থাইরয়েড একটি গ্রন্থি, যা থেকে নিঃসৃত হরমোন শরীরের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন, বিপাকক্রিয়া, শিশুদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা, বুদ্ধির বিকাশ, বয়ঃসন্ধির লক্ষণ, মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র, সন্তানধারণ। কোনও কারণে এই হরমোন বেড়ে গেলে বা কমে গেলে থাইরয়েডের সমস্যা হয়। ক্লান্তি, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া, ওজন বেড়ে বা কমে যাওয়া, অনিয়মিত ঋতুস্রাব এমন অনেক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এই অসুখের কোনও বয়স থাকে না। এক বার যদি হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়, ওষুধ তো বটেই, জীবনযাপনেও বদল দরকার হয়। খাবারেও নিয়ন্ত্রণ আসে।
আরও পড়ুন:
টেক্সাসের পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়িকা রুচিকা গুপ্ত এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, থাইরয়েডের সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং সকালের রুটিনই অনেক কিছু বদলে দিতে পারে। তিনি বলছেন, ‘‘আমি দেখেছি, ছোট ছোট বদল থাইরয়েড রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক বড় প্রভাব ফেলে।’’ রুচিকা বলছেন, ৫ পানীয়ের কথা। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বা এর মধ্যে পছন্দমতো কোনও পানীয় কেউ নিয়মিত এক গ্লাস খেলেই হরমোনের সমতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
লেবু-নুন দিয়ে ঈষদু্ষ্ণ জল: সকালের উঠে পাতিলেবু এবং সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে জল খেলে শরীর ভাল থাকে। রাতভর ঘুমের সময় জল খাওয়া হয় না। ফলে সকালে উঠে জল খাওয়া খুব জরুরি। সৈন্ধব নুন পটাশিয়াম, ম্যাগেনশিয়ামের মতো খনিজের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
সজনেপাতার চা: সজনেপাতার গুঁড়ো দিয়ে চা বা মোরিঙ্গা চা-ও অত্যন্ত উপকারী। এতে মেলে জ়িঙ্ক, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং আয়রন। থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে এই চা।
জিরে-ধনে-মৌরির জল: জিরে, ধনে এবং মৌরির জল গ্যাসের সমস্যা কমায়, লিভারের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লিভার ভাল থাকলেই থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। জিরে, ধনে, মৌরি জলে ফুটিয়ে বা রাতভর ভিজিয়ে সেই জল খাওয়া যেতে পারে।
দারচিনি এবং ডাবের জল: খনিজে পূর্ণ ডাবের জল উপকারী নিঃসন্দেহে। তার সঙ্গে মিশিয়ে নিন সামান্য দারচিনির গুঁড়ো। এই পানীয় শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি রক্তচাপ বশে রাখতেও সাহায্য করবে। এতে থাইরয়েডের কার্যকারিতাও ঠিক থাকে।
অশ্বগন্ধা: টি৩ এবং টি৪ নামে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। এই ভেষজের গুণ অনেক। গরম জলে ১/৪ চামচ অশ্বগন্ধার গুঁড়ো ৫ মিনিট ভিজিয়ে খেলেই উপকার হবে।