খাবার খাওয়া থেকে পান করা, মুখে ঘা বা আলসার হলে রোজের প্রয়োজনীয় কাজও কষ্টকর হয়ে ওঠে। এ সময় খাবারের প্রতি একটু সচেতন থাকলে ঘা দ্রুত শুকোতে পারে, ব্যথাও কমে। ঘায়ের জায়গার ত্বক এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তার উপর যদি টক, ঝাল বা খুব গরম খাবার খাওয়া হয়, তা হলে এ সবের সংস্পর্শে ঘায়ে যন্ত্রণা বেড়ে যায় এবং ক্ষত শুকোতে দেরি হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, কিছু নির্দিষ্ট খাবার ঘা বা আলসারকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই খাবার নির্বাচনে সচেতন হতে হবে।
মুখে ঘা হলে এই ৭ ধরনের খাবার এবং পানীয় থেকে দূরে থাকা ভাল—
১. তেলঝাল মশলাযুক্ত খাবার: খুব ঝাল খাবার, লঙ্কা বা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত রান্না মুখের আলসারকে বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ, এ সমস্ত খাবার থেকে প্রদাহ বৃদ্ধি হয়।
তেলঝাল মশলাযুক্ত খাবার। ছবি: সংগৃহীত।
২. টক স্বাদের খাবার: টক জাতীয় ফল এবং সব্জি, যেমন, লেবু, কমলালেবু, আনারস, আঙুর, ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা ভাল এ সময়ে। যে সমস্ত খাবারে সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে, সেগুলি ঘায়ের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয়।
৩. সোডাযুক্ত পানীয় (কার্বোনেটেড): সোডা জাতীয় পানীয়তেও অ্যাসিড থাকে, যা ঘায়ের সময়ে ক্ষতিকারক হতে পারে। মুখের নরম টিস্যুতে অস্বস্তি তৈরি করে নতুন করে ঘা তৈরিও করতে পারে।
সোডা জাতীয় পানীয়। ছবি: সংগৃহীত।
৪. ক্যাফিনযুক্ত পানীয়: কড়া চা, কড়া কফি ছাড়া দিন চলে না? মুখে আলসার হলে ক্যাফিনযুক্ত পানীয় থেকে কিছু দিন দূরে থাকাই ভাল। কফির মধ্যে থাকে স্যালিসিলেট্স, যা মাড়ি ও জিভে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।
৫. অ্যালকোহল: অ্যালকোহল মুখগহ্বরকে শুষ্ক করে তুলতে পারে। মুখের ভিতরে প্রতিরক্ষামূলক যে আস্তরণ থাকে, সেটির ক্ষতি করতে পারে। ফলে ঘা শুকোনোর পদ্ধতির গতি আরও কমে যেতে পারে। পাশাপাশি, প্রদাহ বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রয়েছে অ্যালকোহলের।
৬. খুব গরম খাবার: অতিরিক্ত গরম খাবার খেলে মুখের ঘায়ে জ্বালা বাড়বে। প্রদাহও বেড়ে যেতে পারে।
৭. খুব ঠান্ডা খাবার: কেবল অতিরিক্ত গরম নয়, খুব ঠান্ডা খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। এ সময়ে কোনও কিছুই অতিরিক্ত ভাল নয়। উচ্চ তাপমাত্রা আলসারের ক্ষতি করতে পারে।
আরও পড়ুন:
তা হলে ঘা বা আলসার হলে কী খাওয়া যায়?
মুখে ঘা হলে অনেকেই ওষুধের সাহায্যে নিরাময়ের চেষ্টা করেন, অনেকেই আবার কেবল অপেক্ষা করেন। কিন্তু দু’ক্ষেত্রেই খাবারের বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এ সময়ে কম মশলাযুক্ত এবং ঘরের তাপমাত্রায় রাখা খাবার খাওয়া দরকার। যে খাবারগুলি চিবোতে বেগ পেতে হবে না, সহজেই গিলে নেওয়া যাবে, তেমন খাবারই এমন সময়ে সুপারিশ করা হয়। দই, গলা ভাত, খিচুড়ি, স্যুপের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করতে হবে।