Advertisement
E-Paper

আপনার সন্তান কি রক্তাল্পতায় ভুগছে? ৯টি খাবারের মাধ্যমে শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে পারেন

শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে শিশু দুর্বল বোধ করে, চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় পড়াশোনায় মনোযোগের অভাবও দেখা যায়। তাই খাওয়াদাওয়া নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কোন ধরনের খাবারে এই উপাদানের পরিমাণ বেশি?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ২০:১৭
সন্তানকে কোন খাবার খাওয়ালে আয়রন বাড়বে?

সন্তানকে কোন খাবার খাওয়ালে আয়রন বাড়বে? ছবি: সংগৃহীত।

আপনার সন্তান কি রক্তাল্পতায় ভুগছে? অথবা সতর্কতা অবলম্বন করতে আয়রন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে চান? অনেকেই ভাবেন, দুধ, ডিম খাওয়ালেই সমস্ত পুষ্টিগুণ শরীরে পৌঁছে যায়। কিন্তু বাস্তবে বেশির ভাগ সময়েই শিশুদের শরীরে আয়রনের অভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে স্কুলে পড়া বয়সে, যখন শরীরের বিকাশ দ্রুত ঘটে, তখন আয়রনের প্রয়োজন বেশি। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা শরীরের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। এর ঘাটতি হলে শিশু দুর্বল বোধ করে, চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় পড়াশোনায় মনোযোগের অভাবও দেখা যায়। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বলছেন, ‘‘সামগ্রিক ভাবে খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে সচেকন হতে হবে। কিছু ফল, সব্জি আয়রনের ভাল উৎস। ভারতের প্রচলিত খাবারের পাত, অর্থাৎ ভাত, ডাল, সব্জি, আমিষের কোনও একটি পদ সুষম আহারের ভাল উদাহরণ। জাঙ্ক ফুড এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চললেই ভাল। তাতে আয়রনের ঘাটতি বেড়ে যাবে।’’

আয়রনের উৎসগুলির কয়েকটি কথা বলা হল নীচে—

আয়রন দুই ধরনের হয়— প্রাণিজ উৎসের আয়রন এবং উদ্ভিজ্জাত আয়রন। প্রাণিজ উৎসের আয়রন শরীরে সহজে শোষিত হয়। উদ্ভিজ্জাত আয়রনও কার্যকর, তবে তা ভাল ভাবে শোষণ করতে হলে সঙ্গে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার যেমন লেবু, কমলালেবু বা টম্যাটো রাখা দরকার।

১. রাগি: রাগি এক ধরনের মিলেট যা আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ। এটি দিয়ে ডোসা, ইডলি, হালুয়া, স্যুপ, রুটি ইত্যাদি বানিয়ে সন্তানকে খাওয়ানো যেতে পারে।

২. পালং শাক: পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে। ডাল, তরকারি, বড়া, পরোটা বা স্যুপে মিশিয়ে দিলে খেতে মন্দ লাগে না।

৩. গুড়: প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে গুড় শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। শীতকালে অল্প গুড় খেলে উপকার মেলে, তবে অতিরিক্ত মিষ্টি দেওয়াও ঠিক নয়।

৪. খেজুর: খেজুরে থাকে আয়রন ও পটাশিয়াম। এটি পায়েস, ফলের স্যালাড বা স্মুদিতে মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে মিষ্টি বলে শুধুও খেয়ে নিতেও আপত্তি করে না অনেক শিশু।

৫. রাজমা: রাজমা প্রোটিন ও আয়রনের দারুণ উৎস। এটি সেদ্ধ করে রান্না করলে সহজে হজম হয় এবং পেটও ভরা থাকে অনেক ক্ষণ।

৬. আমলকি: আমলকিতে ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে থাকে, যা আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এটি কাঁচা খাওয়া যায় বা রস বানিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

৭. ডিম: সাদা অংশের তুলনায় ডিমের কুসুমে বেশি পরিমাণে আয়রন ও প্রোটিন থাকে। সেদ্ধ বা ভুর্জি করে শিশুদের খাওয়াতে পারেন।

৮. চিঁড়ে: চিঁড়ে হালকা কিন্তু পুষ্টিকর খাবার। সব্জি, বাদাম ও লেবুর রস মিশিয়ে পরিবেশন করলে এটি আরও পুষ্টিকর হয়। তবে দই-চিড়ে, দুধ-চিড়ে খেতে দিলেও দারুণ উপকার।

৯. কুমড়োর বীজ: কুমড়োর বীজে আয়রন ছাড়াও ভাল ফ্যাট ও খনিজ উপাদান থাকে। শুকনো ভেজে বা ভর্তায় মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

আয়রন ভাল ভাবে শোষণ করানোর জন্য কিছু পরামর্শ—

• উদ্ভিজ্জাত খাবার থেকে আয়রন পেতে হলে সঙ্গে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া দরকার।

• খাবারের সঙ্গে চা বা কফি খাওয়া উচিত নয়, এগুলি আয়রন শোষণে বাধা দেয়।

• প্রতি দিনের খাবারে রং ও বৈচিত্র্য রাখলে শিশুদের খাওয়ার আগ্রহ বাড়ে।

• খুব বেশি পরিমাণে আয়রন সাপ্লিমেন্ট না দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দেওয়া উচিত।

শিশুদের খাদ্যতালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত রাখলে তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, শরীর ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত হয়, ক্লান্তি বা দুর্বলতার সমস্যা দূর হয়। ঘরোয়া উপায়ে, সহজ খাবার দিয়েই এই প্রয়োজন মেটানো সম্ভব। একরত্তি বায়না করলে উপাদেয় রান্নায় পরিণত করা যায় সেই সব পদকে। ঘরের টাটকা রান্নায় আয়রনের ঘাটতি হবে না একেবারেই। ফলে সন্তানও তৃপ্তি করে খাবে, শরীরে পুষ্টিও পৌঁছবে।

Iron Rich Food Baby Food Health Tips Iron
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy