শরীরের ওজনই সুস্থতার একমাত্র মাপকাঠি নয়। অনেক ক্ষেত্রে ওজনে হেরফের না হলেও দেহের একাধিক অংশে চর্বি জমে থাকে। আর সেই মেদই দীর্ঘ মেয়াদে নানাবিধ অসুখবিসুখের কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভারতীয় দেহের গঠনের ক্ষেত্রে ওজন এবং বিএমআই (বডি মাস ইন্ডেক্স)-এর হিসেব বহু সময়েই আসল ছবি তুলে ধরে না। হার্টের রোগ, ডায়াবিটিস বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি নীরবে থেকে যেতে পারে শরীরের ভিতরে। মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ এবং লেখিকা পূজা মাখিজা সম্প্রতি একটি বিশেষ কৌশল শেখালেন ইনস্টাগ্রামে ভিডিয়ো করে। ভিসেরাল ফ্যাট বা পেটে অতিরিক্ত মেদ জমছে কি না, তা যাচাই করে দেখা যাবে এই পদ্ধতিতে।
অনেকের চেহারা ছিপছিপে বা ওজনও কম, কিন্তু পেটে অতিরিক্ত মেদ জমে থাকে। কিন্তু সে বিষয়ে তাঁরা সচেতন হন না অনেক ক্ষেত্রেই। তা ছাড়া যাঁরা ওজন কমানোর পথে হাঁটছেন, তাঁরাও ঠিক কখন বুঝবেন যে, পেটে আর অতিরিক্ত মেদ নেই, তা বোঝার জন্যও পূজার এই কৌশল কাজে লাগতে পারে। এই ভিসেরাল ফ্যাট বাইরে থেকে সব সময়ে ধরা পড়ে না। এই মাপজোকের জন্য কেবল একটি দড়ি প্রয়োজন। ফিতে হলেও অসুবিধা নেই।
দড়ি দিয়ে কী ভাবে পেটের অতিরিক্ত মেদ মাপবেন?
প্রথমে নিজের উচ্চতার সমান লম্বা একটি দড়ি নিন অথবা কেটে নিন। এর পর দড়িটিকে ঠিক মাঝখান থেকে ভাঁজ করুন। ভাঁজ করা দড়িটি নাভি থেকে শুরু করে কোমরে পেঁচিয়ে নিন। যদি দেখেন, সহজেই দড়ির অন্য প্রান্ত নাভির কাছে পৌঁছে গিয়েছে, তা হলে পেটে অতিরিক্ত মেদ নেই। কিন্তু যদি দড়ি কোমর পেঁচিয়ে ঘুরে আসতে না পারে বা নাভির কাছে এসেই শেষ হয়ে যায়, অথবা কোমরের পরিধি ঘিরতে না পারে, তা হলে ধরে নিতে হবে, শরীরে অতিরিক্ত ভিসেরাল ফ্যাট বা চর্বি জমে রয়েছে। পূজার কথায়, ‘‘তলপেটে চর্বি জমার প্রবণতা বেশি থাকে ভারতীয়দের মধ্যে। ওজন স্বাভাবিক থাকলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, হার্টের রোগের সম্ভাবনা তৈরি হয়।’’
পেটের অতিরিক্ত মেদ শনাক্তকরণের কৌশল। ছবি: ইনস্টাগ্রামের ভিডিয়ো থেকে।
কোমর ও উচ্চতার অনুপাত শরীরের মেটাবলিক স্বাস্থ্যের প্রকৃত ছবি তুলে ধরতে পারে বলে মত পূজার। সাধারণ ভাবে কোমরের মাপ যদি উচ্চতার অর্ধেকের বেশি হয়ে যায়, তা হলে ঝুঁকি বাড়তে শুরু করে। তাই কোমরের মাপ উচ্চতার অর্ধেক হওয়া উচিত।
যদি এই পরীক্ষায় ইঙ্গিত মেলে যে চর্বি বেশি রয়েছে কোমর এবং তলপেটে, তা হলে খাবারের ধরন ঠিক করা, নিয়মিত শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম আর মানসিক চাপ কমানো খুব জরুরি।