Advertisement
E-Paper

‘নয়েজ় ক্যানসেলিং’ ইয়ারফোন টানা ২ বছর ব্যবহার করে শ্রবণশক্তি হারাতে বসেছেন যুবক, কতটা বিপজ্জনক?

লাগাতার বছর দুয়েক ধরে ‘নয়েজ় ক্যানসেলিং’ ইয়ারবাড ব্যবহার করছিলেন এক যুবক। এখন তাঁর অবস্থা শোচনীয়। কানে প্রায় শুনতে পাচ্ছেন না, সংক্রমণও ধরা পড়েছে। কতটা বিপজ্জনক এমন ইয়ারফোন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৪১
A users alarming experience of sudden ear pain after two years of using noise-cancelling ear buds regularly

‘নয়েজ় ক্যানসেলিং’ ইয়ারফোন ব্যবহারের বিপদ। প্রতীকী ছবি। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

সাধারণ ইয়োরফোন বা ইয়ারবাডে কানের ক্ষতি হয়। তাই এখন অনেকেই ‘নয়েজ় ক্যানসেলিং’ ইয়ারবাড কিনে ব্যবহার করেন। কমবয়সিরা এই তালিকায় বেশি। মনে করা হয়, বাইরের আওয়াজ যেহেতু ঢোকে না, তাই এই ধরনের ইয়ারবাড অনেক বেশি নিরাপদ ও সুরক্ষিত। এমন মনে করেই লাগাতার বছর দুয়েক ধরে ‘নয়েজ় ক্যানসেলিং’ ইয়ারবাড ব্যবহার করছিলেন এক যুবক। এখন তাঁর অবস্থা শোচনীয়। কানে প্রায় শুনতে পাচ্ছেন না, সংক্রমণও ধরা পড়েছে। সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে এমনই জানিয়েছেন তিনি। দেশের কোনও জায়গা থেকে পোস্টটি করা হয়েছে। তবে যথাযথ স্থানটি জানা যায়নি।

৫০ ডেসিবেল অবধি শব্দ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এমন ইয়ারবাড ব্যবহার করে ঘোর বিপদে যুবক। তাঁর শ্রবণশক্তি প্রায় নষ্ট হতে চলেছে। যুবক জানিয়েছেন, প্রতি দিন কম করেও তিন থেকে চার ঘণ্টা টানা এমন ইয়ারফোন ব্যবহার করতেন তিনি। শুরুতে তেমন সমস্যা হয়নি। বাইরের কোলাহল, আওয়াজ যেহেতু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই ধরনের ইয়ারফোন, তাই ব্যবহার করতে ভালও লাগছিল তাঁর। কিন্তু কখন যে বিপদ ঘনাল, তা টেরই পাননি তিনি।

নয়েজ় ক্যাসেলিং ইয়ারফোনও কি বিপজ্জনক?

‘নয়েজ় ক্যানসেলিং’ ইয়ারফোন বা হেডফোন এমন ভাবে তৈরি হয়, যাতে বাইরের আওয়াজ কানে না ঢোকে। ট্রেনে বা বাসে দীর্ঘ ক্ষণ যাত্রার সময়ে বা রাতে ঘুমোনোর সময়ে এমন ইয়ারফোন ব্যবহার করেন অনেকে। দাবি, এতে ক্লান্তি কেটে যায়, ঘুমও নাকি ভাল হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এমন ইয়ারফোন কানের ক্ষতি করে বেশি। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রেন্ডস অ্যান্ড টেকনোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এমন ইয়ারফোনে বাইরের শব্দ ঢোকে না ঠিকই, তবে ইয়ারফোন থেকে যে ডেসিবেলের শব্দ বার হয় তা একটানা শুনতে থাকলে মধ্যকর্ণ ও অন্তঃকর্ণের ক্ষতি হতে বাধ্য। এতে স্নায়ুর উপরেও চাপ বাড়ে। তা ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে বাইরের আওয়াজ একেবারে স্তব্ধ থাকার কারণে যখন ইয়ারফোন খোলা হয়, তখন আচমকাই সেই শব্দ খুব জোরে ধাক্কা দেয় কানে। এতে শ্রবণশক্তির ক্ষতি হয় বেশি। নয়েজ় ক্যানসেলিং ইয়ারফোন টানা ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করলে, বাইরের আওয়াজের সঙ্গে কানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পরে আচমকা সেই আওয়াজ কানে প্রবেশ করলে, কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

সাধারণ ইয়ারফোন হোক বা নয়েজ় ক্যানসেলিং, কোনওটিই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি করা হয় না। আর একটানা ব্যবহার করলে, অন্তঃকর্ণের ককলিয়া অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কানের কোষগুলি নষ্ট হতে থাকে। শুকিয়ে যেতে থাকে কানের ফ্লুইড। কান যেহেতু সারা শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে, তাই কানের ক্ষতি হওয়া মানে তার প্রভাব পড়বে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতেও। তাই যে কোনও ইয়ারফোনই একটানা ব্যবহার করতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। কাজের জায়গায় ব্যবহার করতে হলেও একটানা করবেন না। ২০ মিনিট অন্তর কানকে বিশ্রাম দিন। অন্তত ১৫-২০ মিনিটের জন্য হেডফোন খুলে রাখুন বা ইয়ারফোনে কিছু শোনা বন্ধ রাখুন। ইয়ারফোন ব্যবহারের পরে যদি শুনতে সমস্যা হয়, কানে একটানা আওয়াজ হতে থাকে, মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Earphone Ear Problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy