এক ধাক্কায় ৩৫ কিলোগ্রাম ওজন ঝরিয়েছিলেন ভূমি পেডনেকর। খাদ্যাভ্যাসে বদল আনার পাশাপাশি শরীরচর্চা, যোগাসনের সাহায্য নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। এখন তাঁর টোন করা পা, হাত, পেটের পেশি। অনুরাগীদের নানা ভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন অভিনেত্রী। শরীরচর্চা যে ভূমির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, তাঁকে দেখেই তা টের পাওয়া যায়। কিন্তু সম্প্রতি অন্য সুর তাঁর গলায়। সাধারণত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যে ভাবে তাঁদের অনুরাগীদের শরীরচর্চায় ব্যস্ত থাকতে বলেন, তা থেকে খানিক সরে এলেন ভূমি। নিজে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে তিনি জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আর তাই তিনি আগের তুলনায় শরীরচর্চার মাত্রা অনেকখানি কমিয়ে ফেলেছেন।
অভিনেত্রী বলছেন, ‘‘যখন আমি শরীরচর্চা শুরু করেছিলাম, আমার ধারণা ছিল, কঠোর পরিশ্রম করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শরীরচর্চা করলেই কেবল লক্ষ্যভেদ করতে পারব। জিমে গিয়ে ক্রমাগত ক্যালোরি ঝরালেই উপকার মিলবে। তেমনটা করেওছি। এ নিয়ে খুব গর্বও হত আমার। কিন্তু আসলে যেটা ঘটত, তা হল ক্ষতি। আমি নিজের শরীরকে ক্ষত সারানোর জন্য যথেষ্ট সময়ই দিতাম না।’’ এর ফলে ভূমির স্বাস্থ্য ঘটিত নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে থাকে। কিন্তু সে সব নিয়ে এই মুহূর্তে বিস্তারিত কথা বলতে চান না ভূমি। কিন্তু এই বিষয়টি উপলব্ধি করার পর অভিনেত্রী নিজের জীবনে পরিবর্তন আনেন। ৪ বছরের আগে যত শরীরচর্চা করতেন, তার মাত্র ২০ শতাংশ শরীরচর্চা করেন এখন। আর এখন নিজেকে সবচেয়ে বেশি ফিট বলে মনে হয় তাঁর।
‘গুগল ট্রেন্ড’-এর তথ্য অনুসারে, ইন্টানেটে অতিরিক্ত শরীরচর্চা করা নিয়ে প্রশ্ন করার পরিমাণ অনেক বেড়েছে আগের তুলনায়। ‘আমি কি অতিরিক্ত ব্যায়াম করছি’, এই বিষয়ে খোঁজ করার পরিমাণ আগের তুলনায় মার্চে ৯,৯০০ শতাংশ বেড়েছে।
২০১৭ সালে ‘পাবমেড’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে অতিরিক্ত শরীরচর্চার কুপ্রভাবগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের ফলে ক্লান্তি বেড়ে যায়, ভেবেচিন্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারার ক্ষমতা কমে যায়। মস্তিষ্কের ল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সে সমস্যা দেখা দেয়, ফলে বোধবুদ্ধি, ভাবনাচিন্তার করার ক্ষমতা কমতে থাকে। তবে এ ছাড়াও একাধিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, স্ট্রেস হরমোন অর্থাৎ কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় প্রবল পরিশ্রমে। তা সে শরীরচর্চার মতো আনন্দের কাজ করলেও। অন্যান্য হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হতে পারে। পাশাপাশি, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে ক্লান্তি থেকে। তাই নিজের উপর কত দূর পর্যন্ত চাপ দেবেন, তা বিবেচনা করে ব্যায়াম করা উচিত।