এক সাক্ষাৎকারে সোনালি জানান, তাঁর ছেলে রণবীর বহেলের হাঁপানির সমস্যার কথা। ছবি: সংগৃহীত।
নিজে ক্যানসারকে জয় করে ফিরেছেন সুস্থ জীবনে, তবুও ছেলের রোগ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী সোনালি বেন্দ্রে। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, তাঁর ছেলে রণবীর বহেল হাঁপানির রোগী। সন্তানের কষ্ট চোখের সামনে দেখা কতটা বেদনাদায়ক, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান অভিনেত্রী। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘অ্যাজ়মাকে কোনও রোগের মধ্যে ফেলা যায় না। এটা তেমন কোনও বড় রোগ নয়। তবে এই রোগ যার হয়, তার এবং তার পরিবারের উপর আঁচ এসে পড়ে। আমার ছেলে হাঁপানির রোগী। ও যখন শ্বাস নিতে পারে না, তখন মা হিসাবে আমার কী অবস্থা হয়, বলে বোঝাতে পারব না। আমার বাবাও হাঁপানির রোগী ছিলেন, ছোট থেকেই তাই হাঁপানি রোগীর কষ্ট সামনে থেকে দেখে এসেছি। একটা সময়ে যখন বাবা শ্বাস নিতে পারতেন না, তখন মনে ভয় কাজ করত আদৌ বাবা বেঁচে ফিরবেন তো।’’
শীতের প্রকোপেই কেবল অ্যাজ়মা বা হাঁপানির সমস্যা বাড়ে, এমন ধারণা অনেকেরই আছে। যদিও চিকিৎসকদের মতে, এ ধারণা একদম ভুল। অ্যাজ়মা বা হাঁপানি বাড়তে পারে বছরের যে কোনও সময়ে। মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়গুলিতে এই অসুখের জন্য বাড়তি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
ধুলো, অ্যালার্জি বা দূষণের প্রকোপে ফুসফুসে অক্সিজেন বহনকারী যে সরু সরু নালিপথ আছে, সেগুলি কুঁচকে যায়। শ্বাসনালির পেশি ফুলে ওঠার কারণেই এই সঙ্কোচন হয় ও শরীরে অক্সিজেন কম প্রবেশ করে। তাই শ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের জোগান মেলে না। এই অসুখের প্রবণতা যাঁদের আছে, অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের সারা জীবনই এই সমস্যা বহন করতে হয়। চটজলদি সমাধান বা সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। তবে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে ও ডায়েটে কিছু খাবার যোগ করলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও ঠেকিয়ে রাখা যায়।
যে ঘরে অ্যাজ়মার রোগী থাকেন, সে ঘরে যেন যথেষ্ট আলো-বাতাস ঢোকে, নজর রাখুন। নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখুন, ধুলো যত কম থাকবে, রোগী তত ভাল থাকবেন। রাস্তায় বেরোনোর সময়ে নাক-মুখ ঢাকা মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সেই মাস্কও যাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বাড়িতে কারও হাঁপানি থাকলে বিছানার চাদর পারলে নিয়মিত পাল্টান, রোজ তা সম্ভব না হলেও অন্তত দু’-তিন দিন অন্তর তা বদলে দিন ও পরিষ্কার চাদর পাতুন। বালিশের ঢাকাও বদলাতে হবে নিয়মিত। জামাকাপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাড়িতে পোষ্য থাকলেও আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। অ্যানিম্যাল বিহেভিয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ তো রাখতেই হবে, সঙ্গে নিজেকেও হতে হবে সাবধান। তাদের মল-মূত্র বা রোম থেকে অসুখের আশঙ্কা বাড়ে।
অ্যাজ়মা ঠেকাতে কেবল জীবনযাত্রায় সতর্ক হলেই হবে না, বরং সাবধান হতে হবে খাওয়াদাওয়ার প্রতিও। এই অসুখ ঠেকাতে বা অসুখের প্রবণতা কমাতে প্রতি দিন খান একটা করে আপেল। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সপ্তাহে পাঁচটি করে আপেল খেলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা কমে প্রায় ৩২ শতাংশ। আপেলের পাশাপাশি রোজের ডায়েটে রাখতে হবে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ মাছ। এদের অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ব্রঙ্কায়াল ইনফ্ল্যামেশনকে ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। দুধে ভরপুর মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা এই রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য খুবই উপযোগী। দুধে কোনও রকম সমস্যা না থাকলে দুধ খাওয়া যেতেই পারে। শরীরে রোগ প্রতিরোধে উপযোগী হিসাবে বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ গাজর খান। এর ভিটামিন এ ক্যারোটিন শরীরে অসুখের হানার সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে। ডায়েটে রাখতে হবে অ্যাভোকাডো ও স্ট্রবেরির মতো ভিটামিনসমৃদ্ধ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টকেও।
প্রাণায়াম, ধ্যান, যোগাসন হাঁপানির রোগের অন্যতম ওষুধ। তাই সারা বছর নিয়মিত শরীরচর্চা করে যেতে হবে। জিম কিংবা ভারী কোনও শরীরচর্চা করলে কিন্তু আবার হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যায় শ্বাসকষ্টের সমস্যায় কী ধরনের ব্যায়াম করা শ্রেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy