ডায়াবিটিসের প্রকোপ এখন ঘরে ঘরে। রোজকার জীবনে নানা রকম অনিয়ম মাঝবয়স থেকেই এই রোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে। অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অত্যধিক মানসিক চাপের কারণে বয়স ৩০-এর কোঠা পেরোতে না পেরোতেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। আবার, সুস্থ জীবনযাপন করেও জিনগত কারণে কারও কারও শরীরে ধরা পড়ছে ডায়াবিটিস। এই রোগের হাত ধরে শরীরে বাসা বাঁধে কোলেস্টেরল, থাইরয়েড, উচ্চ রক্তচাপের মতো হাজারটা অন্য অসুখ। ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমাতে জীবনধারায় একটা ছোট বদল আনলেই যথেষ্ট। খরচ করতে হবে মাত্র ১০ মিনিট সময়।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খাওয়ার পর ১০-১০-১০ নিয়মবিধি মেনে চললেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় রক্তের শর্করার মাত্রা। ভাবছেন তো, কী এই নিয়মবিধি? প্রতি বার খাওয়ার পর অর্থাৎ প্রাতরাশ, দুপুর আর রাতের খাওয়ার পর ১০ মিনিট সময় বার করে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। প্রতি বার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা যে একধাক্কায় বেড়ে যায়, এই নিয়ম মেনে চললে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। টাইপ ২ ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এই নিয়ম কিন্তু দারুণ কাজে আসতে পারে।
জার্নাল স্পোর্টস মেডিসিন নামক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, খাওয়াদাওয়া করার ৬০ থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমবে। বয়স বাড়লে শারীরিক দক্ষতা কমে যায়। শরীরচর্চার করার প্রবণতাও বৃদ্ধ বয়সে কমে যায়। ফলে, যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত, তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায়। শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ঘাটতি হয়। এ ক্ষেত্রে রাতে খাওয়ার পর মিনিট ১৫ হাঁটাহাটি করলেই সুফল মিলবে।
গবেষণায় আরও জানানো হয়েছে, সারা দিন আধ ঘণ্টা হাঁটার তুলনায় খাওয়ার পর মাত্র ১০ মিনিট হাঁটা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশি উপকারী। খাবার থেকেই রক্তে শর্করা তৈরি হয়। খাওয়ার পর হাঁটাহাটি করার সময় যে ক্যালোরি খরচ হয়, তার জোগান রক্তের শর্করাই দেয়। তাই হাঁটলে ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে না।