সুস্থ থাকুন বা অসুস্থ, উপোস হোক বা পার্টি— ফল যে কোনও পরিস্থিতিতেই খাওয়া চলে। চিকিৎসকেরা বলেন, ফাইবারে পূর্ণ ফল শুধু পেটের স্বাস্থ্যই ভাল রাখে না, বরং এতে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ শরীরে অল্প মাত্রায় লাগে ঠিকই, কিন্তু তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
ফলের তালিকায় পেঁপে, আপেল, নাশপাতি, লেবু— অনেক কিছুই থাকে। কিন্তু আপেল এবং নাসপাতির তুলনা যদি টানা হয়, এগিয়ে থাকবে কে?
আপেলের গুণাগুণ
শরীর ভাল রাখতে নিয়মিত আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। আপেল খান, কিন্তু তার গুণ জানা আছে কি?
১০০ গ্রাম আপেলে ক্যালোরির পরিমাণ ৫২। ডায়েটরি ফাইবার রয়েছে ২.৪ গ্রাম। এ ছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি, সি-সহ একাধিক পুষ্টিগুণ।
আপেলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণ যথেষ্ট। এতে মেলে অ্যান্থোসায়ানিন নামে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। অ্যান্থোসায়ানিন হার্ট এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং মেধার বিকাশে সাহায্য করে। কিছু কিছু গবেষণা এ-ও বলছে যে, লাল আপেলে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন হজমে সহায়ক ব্যাক্টেরিয়াকে ভাল রাখতে পারে।
আরও পড়ুন:
আপেলে রয়েছে পেকটিন নামে একটি উপাদান, যা পেট পরিষ্কারে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফাইবার। ফলে, আপেল খেলে চট করে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায় না।
নাশপাতির পুষ্টিগুণ
একটি মাঝারি আকারের নাশপাতিতে ১০০ ক্যালোরি থাকে।ভিটামিন সি, কে, পটাশিয়াম, কপার-সহ একাধিক ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর। এতে রয়েছে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় ফাইবার। এই দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরল আর শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তা ছাড়া ফাইবার হজমের গোলমাল ঠেকাতেও সাহায্য করে। নাশপাতিতে থাকা প্রিবায়োটিক ফাইবার পেটের ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ কমায়। হজমশক্তি বাড়িয়ে তোলে নাশপাতি। পাশাপাশি, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
এতে রয়েছে সরবিটল নামে একটি উপাদান। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়। পেট পরিষ্কারে সাহায্য করে। রসালো ফলটি হজমেও সহায়ক।
বেছে নেবেন কোনটি?
পুষ্টিগুণের বিচারে নাশপাতি বা আপেল— কেউই কম যায় না। নিয়মিত আপেল খেলে পেট পরিষ্কার থাকবে। তবে কারও যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা মাঝমধ্যে দেখা দেয় বা বেশি বলে মনে হয়, তা হলে নাশপাতি খেতে পারেন। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় দু’টি ফলই রাখা চলে।
কী ভাবে খাবেন?
প্রাতরাশে বা দিনের যে কোনও সময় ফল খাওয়া যায়। স্মুদিতে আপেল মিশিয়ে খেতে পারেন। ওট্সের সঙ্গে টুকরো করে নাশপাতি ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তবে রসের চেয়ে টাটকা ফল খাওয়াই ভাল। না হলে ফাইবার বাদ পড়তে পারে।