উলের জামাকাপড় থেকে অ্যালার্জি হয় অনেকের। উল আসল সমস্যা নয়, সমস্যাটা হল অ্যালার্জির। শীতের দিনে গরম পোশাক, বিশেষত উলের সোয়েটার বা কম্বল নামানোর সময় হাঁচি শুরু হয় অনেকের। দীর্ঘ দিন ওয়ার্ড্রোবে বন্দি হয়ে রয়েছে এমন সোয়েটার বা জ্যাকেট নামিয়ে পরার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। এই সমস্যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘ডাস্ট মাইট অ্যালার্জি’। উলের পোশাকে এক ধরনের পোকা হয়, যা নাকে-মুখে ঢুকলে হাঁচি-কাশি, চোখ জ্বালা হতে পারে।
শীত এসেই গেল প্রায়। গরম পোশাক বার করা শুরু করেছেন। রোদে দেবেন বলে লেপ-কম্বল নামানোর কথা ভাবছেন। যদি আপনার অ্যালার্জির ধাত থাকে বা ধুলো-ধোঁয়া থেকে হাঁচি হয়, তা হলে সতর্ক হতে হবে। পোশাকগুলি দীর্ঘ দিন ধরে বাক্সে বা স্টোরেজে থাকায় সেখানে প্রচুর পরিমাণে ধুলো-ময়লা এবং ডাস্ট মাইট জমা হয়। তাই সতর্ক না হলে অ্যালার্জির সংক্রমণ বাড়তে পারে।
গরম পোশাক নামানোর সময়ে সতর্কতা
অ্যালার্জির সঙ্গে আপস করা যায় না কোনও ভাবেই। যাঁরা ভুক্তভোগী, তাঁরা জানেন, কতটা মারাত্মক হতে পারে অ্যালার্জি! ত্বকের উপরে অ্যালার্জি হলে তা চিনে নেওয়া সহজ। কিন্তু খাদ্যনালি, শ্বাসনালি বা চোখের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় হলে তা মারাত্মক আকার নিতে পারে। বিশেষ করে ‘অ্যালার্জিক রাইনাইটিস’ হলে অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই গরম পোশাক নামানোর সময়ে সতর্ক থাকুন।
আরও পড়ুন:
১) পোশাকের বাক্স বা ব্যাগগুলি ঘরের ভিতরে না খুলে বারান্দায় বা এমন জায়গায় খুলুন যেখানে বাতাস চলাচল করে। এতে ধুলো ঘরের ভিতরে ছড়াবে না।
২) ব্যাগ বা স্টোরেজ খোলার সময়ে মাস্ক পরে নিন। হাতে গ্লাভস পরে নিলে আরও ভাল হয়। অথবা, সুতির কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ভাল করে পেঁচিয়ে নিতে পারেন। এতে সমস্যা কম হবে। নাকে, মুখে ধুলো যাবে না।
৩) সোয়েটার নামিয়েই অনেকে ঝাড়তে শুরু করেন। যদি ঝাড়তেই হয় তা হলে মাস্ক পরে বাইরে গিয়ে সে কাজ করবেন। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস যদি থাকে, তা হলে এই কাজটি নিজে করতে যাবেন না। বদলে সোয়েটার বা উলের গরম জামা ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
যে সব উলের কাপড় মেশিনে ধোয়া যায়, সেগুলিকে ধুয়ে ফেলুন। না হলে গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। গরম জল ডাস্ট মাইট মারতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। ধুয়ে ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিলেই আর সমস্যা হবে না।
৪) কাপড়গুলি স্টোরেজ থেকে সরানোর পরে স্টোরেজ বক্স, আলমারি বা ওয়ার্ড্রোবটি ভাল করে পরিষ্কার করে নিন।
৫) উলের পোশাক রাখার সময়ে সেগুলি কর্পূর বা ন্যাপথালিন দিয়ে রাখুন। এতে পোকামাকড় বা ডাস্ট মাইট থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।
৬) ভারী কম্বল বা যে সব সোয়েটার ধোয়া কঠিন, সেগুলিকে প্রথমে বাইরে ঝেড়ে নিন এবং তার পর অন্তত ৩০ মিনিট রোদে রাখুন। রোদে থাকলে ডাস্ট মাইট হবে না।
৭) শীতের দিনে দূষণের মাত্রা বাড়ে। ঘরের ভিতরের বাতাসও দূষিত হয়। তাই অ্যালার্জির ধাত থাকলে বা বাড়ির ছোটদের তেমন সমস্যা থাকলে ফিল্টারযুক্ত এয়ার পিউরিফায়ার বাড়িতে লাগাতে পারেন। এই ধরনের পিউরিফায়ার ঘরের ভিতরের সূক্ষ্ম দূষণবাহী কণাগুলিকেও ছেঁকে নিতে পারে।