Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Fungal Infection

ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ নিয়ে কিছু প্রচলিত ধারণা, এড়িয়ে না চললে বিপদ বাড়বে বই কমবে না

বর্ষায় ছত্রাকের সংক্রমণ নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে। সচেতন থাকার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সেগুলি মন থেকে মুছে ফেলা জরুরি।

Symbolic Image.

বর্ষাকাল মানেই ছত্রাক সংক্রমণের ভয়। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ২১:০০
Share: Save:

বর্ষার প্রকৃতি যতই মনোরম হোক, এই সময় এমন কিছু সমস্যার বাড়বাড়ন্ত হয়, যেগুলি সত্যিই বেশ অস্বস্তির। তার মধ্যে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ হল অন্যতম। জ্বর, সর্দি-কাশি হলে তা-ও সামলে ওঠা যায়। কিন্তু এ ধরনের সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করা সহজ নয়। বর্ষার জলকাদা তো এই ধরনের ছত্রাক সংক্রমণের একটা বড় কারণ ব্টেই, সেই সঙ্গে এই সময়ের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়াও থাকে এই ধরনের সংক্রমণের নেপথ্যে। র‌্যাশ, চুলকানি, ত্বকের উপর চাকা চাকা দাগ, ছত্রাক সংক্রমণের মতো ব্যাপার এমনিতে গ্রীষ্মের মরসুমে হয়, তবে বর্ষাতেও এর ঝুঁকি কম থাকে না। ঘাম জমে, অপরিচ্ছন্নতার কারণেও এমন হয়। বিশেষত পোশাকের আড়ালে থাকা অংশে সাধারণত এ ধরনে্র সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। তাই সতর্ক থাকতে হবে। এই ধরনের জীবাণু সংক্রমণ নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে। সচেতন থাকার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সেগুলি মন থেকে মুছে ফেলা জরুরি।

(ভ্রান্ত ধারণা ১) ছত্রাকের হানা শুধু গরমে হয় ছত্রাকজনিত সংক্রমণের ভয় গরমকালে বেশি। তার মানে এই নয় যে, বর্ষাকালে এর কোন ঝুঁকি নেই। বরং গরমের মতো বর্ষাতেও ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ বেড়ে যায়। ‘টি. মেন্টাগ্রোফাইটস’ হল এক ধরনের ছত্রাক। যার হানায় সাধারণত এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

(ভ্রান্ত ধারণা ২) শুধু শিশুদের ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ হয়: শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। ফলে যে কোনও সংক্রমণ তাদের শরীরে সবচেয়ে আগে হানা দেয়। সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতাও থাকে না। ফলে ছত্রাকজনিত সংক্রমণের হার বাচ্চাদের মধ্যে বেশি। পাশাপাশি বড়দেরও কিন্তু এই রোগের ঝুঁকি থেকে যায়। পরিসংখ্যান বলছে, ১১ বছর থেকে ৪০ বছর বয়সিরা প্রতি বর্ষায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন এই ধরনের সংক্রমণে।

(ভ্রান্ত ধারণা ৩) ঘরোয়া টোটকায় সেরে যাব: এই ধারণা সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলে। সংক্রমণ সারাতে অনেকেই প্রাথমিক ভাবে ঘরোয়া টোটকায় ভরসা রাখেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। এতে সংক্রমণ আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে। শরীরের কোনও অংশে এমন হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখানো জরুরি। নিজে থেকে কোনও ওষুধ প্রয়োগ ঠিক হবে না। একই মত চর্মরোগ চিকিৎসক অলোকা গুপ্তেরও। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের আবহাওয়ায় আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। ফলে এই ধরনের সংক্রমণজনিত সমস্যা লেগেই থাকে। তবে এগুলি বৃদ্ধি পায় ঘরোয়া টোটকায় সেরে ওঠার চেষ্টা করলেই। ঘরোয়া উপায়ে ছত্রাকের বিনাশ সম্ভব নয়। তার জন্য প্রয়োজন কড়া ওষুধ।’’

(ভ্রান্ত ধারণা ৪) একটু সেরে উঠতেই চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া: ত্বকের যে কোনও রোগ পুরোপুরি সারতে অনেক বেশি সময় লাগে। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা হলে প্রাথমিক ভাবে উপরের ক্ষত অনেকটা সেরে যায়। তাতে রোগ পুরোপুরি সেরে গিয়েছে মনে করে অনেকেই চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। কখন ওষুধপত্র খাওয়ার আর দরকার পড়বে না, এই সিদ্ধান্ত একমাত্র চিকিৎসকই নিতে পারেন। রোগী নন। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অশ্বিনী পওয়ারের কথায়, ‘‘সব অসুখের ক্ষেত্রেই ওষুধের একটা কোর্স থাকে। সেই কোর্স শেষ হয়ে যাওয়ার আগে যদি অসুখ সেরে যায়, তবু ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। বিশেষ করে এই ধরনের ছত্রাকজনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে তো নয়ই। সংক্রমণ পুরোপুরি নির্মূল হতে সময় লাগে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Monsoon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE