Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
IVF

নাওমি ক্যাম্পবেলের মতো ৫০ পেরিয়ে মা হতে পারেন কি যে কেউ? চিকিৎসকেরা কী বলছেন?

৫৩ বছর বয়সে ব্রিটিশ সুপারমডেল নাওমি ক্যাম্পবেলের দ্বিতীয় বার মা হওয়ার খবরে আশার আলো দেখছেন অনেকেই। কী ভাবে সম্ভব এমন অসাধ্যসাধন?

Image of Naomi Campbell

৫৩ বছর বয়সে ব্রিটিশ সুপারমডেল নাওমি ক্যাম্পবেলের দ্বিতীয় বার মা হওয়ার খবরে আশার আলো দেখছেন অনেক মহিলাই। ছবি: সংগৃহীত

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ১৯:৫৭
Share: Save:

নিজের শরীরে ছোট্ট একটি প্রাণের অস্তিত্ব টের পাওয়ার আনন্দই আলাদা। সকলেই যে আনন্দে শামিল হতে পারেন, এমনটা নয়। আজকাল অনেকেই স্বেচ্ছায় মা না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আবার শারীরিক নানা সমস্যার কারণে মা হওয়ার সাধ অপূর্ণ থেকে যায় অনেকের। পড়াশোনা, পেশার তাগিদেও অনেক সময়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হন। অনেকেই জানেন, সন্তানধারণের ক্ষেত্রে মহিলাদের নির্দিষ্ট বয়স থাকে। অনেকেরই ধারণা ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে সন্তানধারণ করার কোনও সম্ভাবনাই আর থাকে না। ৩৫-এর পর থেকেই সন্তানধারণের ক্ষমতা ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে। তবে সম্প্রতি ৫৩ বছর বয়সে ব্রিটিশ সুপারমডেল নাওমি ক্যাম্পবেলের দ্বিতীয় বার মা হওয়ার খবরে আশার আলো দেখছেন অনেকেই।

প্রতিটি মেয়েরই ঋতুস্রাবের নির্দিষ্ট আয়ুষ্কাল থাকে। সাধারণত ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৪০ বা ৪৫ বছর পর্যন্ত ঋতুস্রাব চলার কথা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ৩৫ বছরের পর সন্তানধারণ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তা হলে নাওমি কী ভাবে পারলেন এই বয়সে দ্বিতীয় বার এমন ‘ঝুঁকি’ নিতে? চিকিৎসক সাত্যকি হালদার আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “এই বয়সে প্রজননে সহায়ক হরমোনগুলির মাত্রা কমে যায়। তাই স্বাভাবিক নিয়মে সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়। আইভিএফ পদ্ধতিতে ডিম্বাণু প্রতিস্থাপন করতে হয়। তার পর বাইরে থেকে হরমোনের সাপোর্ট দিতে হয়। ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরনের সহযোগিতা ছাড়া ৯ মাস পর্যন্ত সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়।”

অনেকেই মনে করেন ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাশয়ে থাকা ডিম্বাণুও নিঃশেষ হয়ে যায়। কিন্তু সাত্যকি বলছেন, “প্রতি মাসে একটি করে ঋতুস্রাবের সঙ্গে একটি করে ডিম্বাণু বেরিয়ে যায়। এই ভাবে ৩০ বছর পর্যন্ত ৩৬০ থেকে ৩৭০টি ওভাম বা ডিম্বাণু বেরিয়ে যায়। কিন্তু ডিম্বাশয়ে হাজার হাজার ডিম্বাণু থাকে। তার মধ্যে থেকে ৩৭০টি বেরিয়ে গেলেও এ ক্ষেত্রে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তাই ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পরেও ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু থেকে যায়। তবে তা থাকে নিষ্ক্রিয় অবস্থায়। তাই সাধারণ ভাবে না হলেও আইভিএফ পদ্ধতিতে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে, নিষিক্ত করে আবার জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে আর একটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কোনও মহিলা চাইলে নিজের ডিম্বাণু হিমায়িত অবস্থায় রাখতে পারেন। বিদেশে এমন অনেক সংস্থাই রয়েছে, যারা মহিলা কর্মীদের ডিম্বাণু ফ্রিজ় করে রাখার সুবিধা দিয়ে থাকেন। যাতে তাঁরা চাইলেই বেশি বয়সে মা হতে পারেন। ডিম্বাণু ফ্রিজ় করে রাখার সেই খরচ বহন করা হয় সংস্থার তরফেই। তবে কলকাতায় এমন পরিকাঠামো নেই। তাই আইভিএফ-এর মতো চিকিৎসার জন্যও বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রের উপর ভরসা করতে হয়। তা-ও সাফল্যের হার বেশ কম।”

৫০-এর পর সন্তানধারণ প্রসঙ্গে একই মত চিকিৎসক মানস কুন্ডুর। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “নাওমি যখন প্রথম সন্তানের জন্ম দেন, তখন তাঁর বয়স ৫১। স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সন্তানধারণ একেবারেই সম্ভব নয়। হয় অন্য কোনও মহিলার থেকে ডিম্বাণু নিয়ে, না হয় নিজের শরীর থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে তার পর বিশেষ পদ্ধতিতে তা নিষিক্ত করার পরই প্রতিস্থাপন করা হয় জরায়ুতে। এই ভাবে বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নিয়ে বেশি বয়সেও মা হওয়ার সাধপূরণ করা সম্ভব। তবে এই চিকিৎসা পদ্ধতি যথেষ্ট ব্যয়বহুল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnancy Motherhood IVF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE