ওজন কমানো হোক বা লিভার, হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখা কিংবা ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ— সর্বক্ষেত্রেই ভাল থাকার মন্ত্র হিসাবে একটি নাম ঘুরে ফিরে শোনা যাচ্ছে। ফাইবার।
ডাল-ভাত-আটা-চিঁড়ে-ওটস সবেতেই শর্করার পাশাপাশি রয়েছে ফাইবারও। কোনওটায় কম কোনওটায় বেশি। তাই এখন আর শর্করা জাতীয় খাবার দেখলেই স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ আঁতকে উঠছেন না। বরং তাঁরা আগে বুঝে নিচ্ছেন কোনটি সিম্পল কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ ফাইবার হীন শর্করা। আর কোনটিতে রয়েছে ভরপুর ফাইবার। সেই বুঝে বেছে নিচ্ছেন খাবার। তাতে আরও একটি লাভ হচ্ছে। এক গ্যাসট্রোএন্টেরোলজিস্ট সৌরভ শেট্টি জানাচ্ছেন, এতে মানুষের আয়ুও বাড়ছে।
কী ভাবে ফাইবার আয়ু বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে।
মৃত্যুর আশঙ্কা কমে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রতিদিন ১০ গ্রাম করে অতিরিক্ত ফাইবার খেলে মৃত্যুর আশঙ্কা ১০% কমতে পারে। একটি মেটা-অ্যানালাইসিসে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা বেশি ফাইবার খেয়েছেন তাঁদের শরীরে মারণ রোগের ঝুঁকি কম ফাইবার খাওয়া মানুষের থেকে ১৯% কমেছে। সেই হিসাবে মৃত্যুর আশঙ্কাও ১৯ শতাংশ কম বলা যায়।
রোগের ঝুঁকি কমে
ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে হৃদরোগ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সারের (যেমন কোলন ক্যান্সার) ঝুঁকি কমতে দেখা গিয়েছে ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের গবেষণায়। এ ক্ষেত্রেও ফাইবার পরোক্ষ ভাবে আয়ু বৃদ্ধিতেই সাহায্য করছে।
কী কী রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে ফাইবার?
হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে
ফাইবার রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ
ফাইবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায় না। ফলে এটি ইনসুলিনকে নিজের কাজ সুষ্ঠু ভাবে করতে দেয়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হজমশক্তির উন্নতি
ফাইবার পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে ভাল রাখে। যা শরীরের প্রদাহ কমাতে এবং সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
আয়ু কমার এবং নানা রোগের কারণ শরীরে জমা বাড়তি মেদ। ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ক্যানসার প্রতিরোধ
ফাইবার অন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাবারের বর্জ্য দ্রুত সরিয়ে নিতে সাহায্য করে। ফলে কোলন এবং রেক্টামের দেয়ালে ক্ষতিকর বর্জ্য বেশি ক্ষণ জমিয়ে রাখে না। যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে।