পপকর্ন বা ভুট্টার খই বহু যুগ ধরে মানুষের সুসময়ে সঙ্গ দিয়ে আসছে। কেউ সিনেমা হলের অন্ধকারে পপকর্নের ঠোঙায় হাত ডোবান তো কেউ বিকেলে প্রেমিকার হাত ধরে পার্কে ঘুরতে বেরিয়ে কিনে ফেলেন গরম গরম পপকর্ন। তপ্ত হাঁড়ির ভিতর থেকে উপচে পড়া ছোট ছোট সাদা মেঘের মতো দেখতে খাবার মুখে দিলেই মন ভাল হয়ে যায়। কিন্তু লক্ষ্য যদি হয় ওজন ঝরানো, তবে নির্দ্বিধায় প্রিয় পপকর্ন খাওয়া যেতে পারে কি?
তারকা পুষ্টিবিদ লিউক কুটিনহো সম্প্রতি ওজন কমানোর ডায়াটে পপকর্ন রাখার ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘পপকর্ন একটি অত্যন্ত স্মার্ট জলখাবার। যাঁরা ওজন কমাতে চাইছেন, তাঁরা দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পপকর্ন রাখতেই পারেন। তবে পপকর্ন কী ভাবে খাচ্ছেন তা মাথায় রেখে খেতে হবে।’’ লিউকের বক্তব্য বাজার চলতি কিছু পপকর্ন ওজন কমানোর বদলে ওজন বাড়িয়েও দিতে পারে।
কোন পপকর্ন খাবেন, কোনটি খাবেন না?
১। ফ্লেভার্ড পপকর্ন: ইদানীং নানা স্বাদের পপকর্ন কিনতে পাওয়া যায় মাল্টিপ্লেক্স সিনেমাহল এবং শপিং মলের ফুড জয়েন্টে। কোনওটি ক্যারামেলে মাখানো তো কোনওটি স্ট্রবেরি ফ্লেভার্ড, চিজ়, চিলি, চকোলেট, বাটার, বার্বিকিউ, নানা ধরনের হার্বের গন্ধে ভরা পপকর্নও পাওয়া যাচ্ছে আজকাল। যা স্বাদে সাধারণ পপকর্নের থেকেও ভাল। কিন্তু লিউক বলছেন, এই মিষ্টি অথবা মশলাদার পপকর্নগুলি স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয় মোটেই।
২। ক্লাসিক পপকর্ন: গরম হাওয়ায় ভুট্টার দানাকে ভাপিয়ে যে পপকর্ন তৈরি করা হয় সেই পপকর্নেরও স্বাদ কম নয়। পুষ্টিবিদ বলছেন, যদি কেউ ওজন ঝরানোর পরিকল্পনা করে থাকেন তবে নুন ছাড়া এবং মাখন ছাড়া এই পপকর্নটি খেতে পারেন। কেন এই বিশেষ ধরনের পপকর্ন ওজন ঝরাতে সাহায্য করতে পারে, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
কেন ক্লাসিক পপকর্ন বাছবেন?
১। এক কাপ ক্লাসিক পপকর্নে ক্যালোরির মাত্রা থাকে অত্যন্ত কম। সব মিলিয়ে ৩০-৩৫ কিলো ক্যালোরি।
২। ক্লাসিক পপকর্নে ফাইবারের মাত্রা বেশি। এটি হজমের জন্য উপকারী। এমনকি, যখন তখন এটা-সেটা খাওয়ার ইচ্ছেও হয় না এই পপকর্ন খেলে। যা ওজন কমানোর জন্য জরুরি।
৩। যেহেতু ভুট্টার দানা থেকে তৈরি, তাই পপকর্নে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এবং খনিজ। যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্যও উপকারী।
ওজন কমানোর পপকর্ন কী ভাবে খাবেন?
১। স্বাদের জন্য পপকর্নে সামান্য বিটনুন, গোলমরিচ এবং পছন্দের স্বাস্থ্যকর মশলা বা হার্ব মিশিয়ে সুস্বাদু বানিয়ে নিতে পারেন।
২। খুব বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভাল। ক্লাসিক পপকর্নও বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে। দৈনিক ২-৩ কাপ মাপের পপকর্ন খাওয়া যেতে পারে।
৩। পেটফাঁপা বা গ্যাসের সমস্যা অথবা আইবিএসের সমস্যা থাকলে পপকর্ন না খাওয়াই ভাল। কারণ এতে থাকা ফাইবার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।