দুয়ারে শীত। এই মরসুম এলেই জল খাওয়ার পরিমাণ অনেকেই কমিয়ে দেন। কেউ জেনেবুঝে, কেউ আবার অজান্তে। ফলস্বরূপ, শরীরে বাসা বাঁধে হাজার রোগ। কঠিন অসুখগুলির ক্ষেত্রে চিকিৎসা যত তাড়াতাড়ি শুরু হয়, ততই রোগীর সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে। অথচ কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের ভুলেই অসুখের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। রোজ কিছু বিষয়ে খতিয়ে নজর দিলে কিন্তু প্রথম অবস্থাতেই সতর্ক হওয়া যায়। যেমন, প্রস্রাবের রং বা প্রকৃতির প্রতি খেয়াল রাখলে কিডনির নানা সমস্যা, ডায়াবিটিস— এ সব অসুখের শুরুতেই সতর্ক হওয়া যায়। অনেক সময় প্রস্রাবের সঙ্গে অতিরিক্ত ফেনা বা বুদ্বুদ দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এই নিয়ে কি সত্যিই চিন্তার কোনও কারণ আছে?
বেঙ্গালুরুর চিকিৎসক গিরিশ নেলিভিগির মতে, প্রস্রাবের মধ্যে ফেনা থাকা অস্বাভাবিক নয়। চিকিৎসক বলেন, ‘‘ প্রস্রাব তো শুধু জল নয়। তার সঙ্গে মিশে থাকে নানা ধরনের বর্জ্যপদার্থ। তার উপর শরীরে জলের ঘাটতি হলেও প্রস্রাবে ফেনা দেখা দিতে পারে। তা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরেও ফেনার পরিমাণ যদি বাড়তে থাকে, এবং প্রস্রাব করার বেশ কিছু ক্ষণ পরেও যদি ফেনার বুদবুদ একই রকম থাকে, তা হলে অবশ্যই চিন্তার কারণ রয়েছে।’’
চিকিৎসকের মতে, প্রস্রাবের সঙ্গে অতিরিক্ত ফেনা তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ হল কিডনির সমস্যা। শরীরের প্রধান ‘ছাঁকনি’ কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে মূত্রের সঙ্গে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান প্রোটিন (অ্যালবুমিন) মিশে যায়। দীর্ঘ দিন ধরে এমনটা চলতে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কেবল প্রস্রাবে ফেনা দেখলেই হবে না, এর সঙ্গে শারীরিক আরও কিছু উপসর্গও আছে কি না, তা লক্ষ করতে হবে। পায়ের পাতা, গোড়ালি ফুলে যাওয়া, মুখ কিংবা চোখের চারপাশও ফুলে যেতে পারে কিডনির এই ধরনের সমস্যা থেকে। যেহেতু প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যায়, তাই অতিরিক্ত দুর্বল, ক্লান্ত লাগতে পারে। প্রস্রাবের পরিমাণেও হেরফের হতে পারে।
প্রস্রাবের সঙ্গে ফেনা মানেই কেবল কিডনির সমস্যা, ধরে নেওয়া ঠিক নয়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলেও মূত্রের সঙ্গে ফেনা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া মূত্রনালিতে সংক্রমণ হলেও প্রস্রাবের সঙ্গে ফেনা তৈরি হতে পারে। অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের প্রভাবেও কিন্তু প্রস্রাবের সঙ্গে ফেনা তৈরি হয়।