ডায়াবিটিস ধরা পড়লে অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে রাশ টানতে হয় খাওয়াদাওয়ায়। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করলে ইচ্ছামতো সব খাবার খাওয়া যায় না। মিষ্টি তো বটেই, সেই সঙ্গে বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া একেবারেই বন্ধ। অনেকেরই প্রশ্ন থাকে, ডায়াবিটিসে ফল খাওয়া যায় কি না। মরসুমি টাটকা ফল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে ডায়াবিটিসের রোগীরা যে কোনও ফল খেতে পারেন না। রক্তে শর্করার মাত্রা বুঝে ও শারীরিক অবস্থা বিচার করে তবেই খাওয়া উচিত। তাই কোন কোন ফল ডায়াবিটিসের রোগীরা খেতে পারেন, আর কোনগুলি নয়, তা জেনে রাখা জরুরি।
যে সব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জি.আই) উপরের দিকে, ডায়াবিটিস হলে সে সব খেতে বারণ করেন চিকিৎসকরা। কিছু ফলের জি.আই অনেক বেশি। তাই ডায়াবিটিস থাকলে সেই ফলগুলি একেবারে খাওয়া যাবে না।
কোন ফলগুলি খাবেন না?
১) আম বেশি না খাওয়াই ভাল। আমে শর্করার মাত্রা বেশি। অনেক গুণ থাকা সত্ত্বেও ডায়াবিটিসের রোগীদের মেপে খাওয়াই ভাল।
২) কাঁঠালে চিনির পরিমাণ খুব বেশি থাকে। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়।
৩) আঙুর একেবারেই খাওয়া যাবে না। আঙুরে শর্করার মাত্রা খুব বেশি যা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়েযেতে পারে।
৪) কলাতে শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট তুলনামূলক ভাবে বেশি থাকে। তাই ডায়াবিটিসের রোগীদের কলা পরিমিত পরিমাণেই খাওয়া উচিত।
৫) লিচুতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে।
৬) কয়েক রকম শুকনো ফলও বেশি খাওয়া যাবে না, যেমন কিশমিশ বেশি খাবেন না। কিশমিশে রয়েছে গ্লুকোজ় এবং ফ্রুক্টোজ়ের মতো প্রাকৃতিক শর্করা। যা শরীরে জন্য উপকারী কিন্তু ডায়াবিটিসের রোগীরা বেশি পরিমাণে খেতে শুরু করলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তেমনই ফাইবার ও আয়রনে সমৃদ্ধ খেজুর শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। কিন্তু খেজুরে শর্করার পরিমাণ বেশি। ডায়াবেটিকদের জন্য এই ফল খাওয়া বিপজ্জনক। শুকনো অ্যাপ্রিকট পুষ্টিকর হলেও ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য উপকারী নয়।
আরও পড়ুন:
কী কী ফল খেতে পারেন?
১) মাঝারি মাপের একটি পেয়ারায় থাকে ৫ গ্রাম চিনি আর ৩ গ্রাম ফাইবার। শেক বা স্মুদিতে ব্যবহার করা যায় পেয়ারা। শুধুও খাওয়া যায়।
২) পাকা পেঁপে ডায়াবেটিকদের জন্য উপকারী। একটি বড় টুকরো পেঁপেতে ৬ গ্রাম চিনি থাকে। যেখানে এক টুকরো তরমুজে থাকে ১৭ গ্রাম চিনি। একটি পাকা আমে আবার চিনির পরিমাণ হল ৪৫ গ্রাম। ফলে নিশ্চিন্তেই পাকা পেঁপে খেতে পারেন।
৩) সারা বছরই বাজারে আপেল পাওয়া যায়। এতে প্রচুর ফাইবার আছে। ফাইবারের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আপেল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪) নাসপাতিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা ডায়াবেটিকদের ডায়েটে অবশ্যই রাখা উচিত। ফ্রুট স্যালাড বানালেও অবশ্যই তাতে নাসপাতি রাখবেন।