ঘনঘন কাশি হচ্ছে, মুখে লবঙ্গ রাখলে গলায় আরাম লাগে। গলা খুসখুস কমে। আবার মোশন সিকনেস বা গাড়িতে উঠলে বমি পায় যাঁদের, তাঁদের ক্ষেত্রে মুখে লবঙ্গ থাকলে গা-বমি ভাব কমে। সমাজমাধ্যম খুললেই লবঙ্গ নিয়ে চর্চা। লবঙ্গ চা থেকে মশলার গুণাগুণ নিয়ে আলোচনার কোনওটি অত্যুক্তি নয় অবশ্য। লবঙ্গে পাওয়া যায় কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন কে ও ম্যাঙ্গানিজ়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন কাজকর্ম সুষ্ঠু রাখতে ও হাড় শক্ত করতে ম্যাঙ্গানিজ় খুব জরুরি। ম্যাঙ্গানিজের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হল লবঙ্গ।প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। এতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদানও।
তবে উপকারী মশলাই অপকারী হয়ে উঠতে পারে যদি তা বেশি খাওয়া হয়। কথায় কথায়, মুখে লবঙ্গ দেওয়ার অভ্যাস থাকলে, বার বার লবঙ্গ দিয়ে ‘কাড়া’ বানিয়ে খেলে, রান্নায় অতিরিক্ত ব্যবহার করলে নিঃশব্দে ক্ষতি হতে পারে স্বাস্থ্যেরও।
১। লবঙ্গে রয়েছে ইউজেনল। এটি প্রদাহনাশক উপাদান। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে। ব্যথা কমানোর নেপথ্যেও থাকে ইউজিনল। কিন্তু প্রতি দিন বার বার লবঙ্গ খেলে ইউজেনলের মাত্রা বাড়তে পারে। বিশেষত লবঙ্গ তেলে ইউনিজেনলের মাত্রা বেশি থাকে। তা পেটে গেলে লিভার, কিডনির ক্ষতি হতে পারে এতে।
২। লবঙ্গ তেল, লবঙ্গ চা বা লবঙ্গ রয়েছে এমন খাবার বেশি খেলে হজমেও সমস্যা হতে পারে। দৈনন্দিন রান্নাতেও গরমমশলা হিসাবে লবঙ্গের ব্যবহার রয়েছে। বেশি খেলে পেট গরম হতে পারে। হজমে প্রভাব পড়তে পারে। মাড়ি ফোলায় বা দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ তেল ব্যবহার করেন অনেকে। সেটি যদি খুব ঘন হয় তা থেকে প্রদাহ হতে পারে।
৩। ইউজেনল রক্ত পাতলা করে দেয়। নিয়মিত লবঙ্গ চা, রান্নায় মশলা হিসাবে খেলে বা দাঁতের ব্যথায় এই তেল ব্যবহার করলেও তা শরীরে যেতে পারে। ফলে আচমকা, কেটে গেলে ইউজেনল রক্ত তঞ্চন বা জমাট বাঁধতে বাধা দেবে। বিশেষত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন থাকলে লবঙ্গ খাওয়া দরকার বুঝেশুনে।
৪। লবঙ্গ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সর্দি-কাশির সময়েও বার বার লবঙ্গ চা খেলে, লবঙ্গ মুখে রাখলে তার উল্টো প্রভাব পড়তে পারে। শর্করা বেশি কমে যেতে পারে।
৫। জন্ডিস, স্নায়বিক সমস্যা, লিভারের-কিডনির অসুখ, রক্তচাপ কমে যাওয়ার সমস্যা থাকলে নিয়মিত লবঙ্গ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল।