Advertisement
E-Paper

জ্বালাপোড়া গরমে কোন কোন রোগ থেকে সাবধান থাকবেন, খাওয়াদাওয়া নিয়েও রইল কিছু পরামর্শ

গরমে নানা রকম অসুস্থতা বাড়ে। বদহজমের সমস্যা ভোগায়। খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। এই সময়ে খাওয়াদাওয়া কেমন হবে, সে নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিলেন পুষ্টিবিদ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:১৫
Effective summer health tips and diet plan according to doctors

গরমের সুস্থ থাকার উপায় বললেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ। ফাইল চিত্র।

কখনও ঘুসঘুসে জ্বর, কখনও বা শ্বাসকষ্ট। কারও কারও আবার কয়েক দিন অন্তরই হচ্ছে পেটের গোলমাল। সবের জন্যই দায়ী তাপমাত্রা। বসন্ত শেষ হল কি হল না, গরম পড়ে গিয়েছে। সময়ের আগেই তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। রাস্তায় বেরোলে গরমে হাঁসফাঁস দশা। তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হচ্ছে এখন থেকেই। ডায়েরিয়া, বমি, হজমের গোলমাল লেগেই রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত গরম থেকেই হানা দিচ্ছে নানা ধরনের অসুস্থতা। এই সময়ে সুস্থ থাকতে কী করা উচিত, খাওয়াদাওয়ায় কী কী বদল আনা প্রয়োজন, সে সব নিয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ।

কোন কোন অসুখের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে?

প্রচণ্ড গরমে জ্বর, পে়টখারাপ, টাইফয়েড, মূত্রনালিতে সংক্রমণের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ে। এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, গরম থেকে সোজা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢুকে পড়া বা বাইরে থেকে ঢুকেই ঠান্ডা জল খাওয়া এ সবের ফলে গলায়, ফুসফুসে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হয়। অতিরিক্ত গরমে শরীর শুকিয়ে গিয়ে মূত্রনালিতে সংক্রমণও বাড়ে। ভাইরাল জ্বরে গা-হাত-পায়ে প্রবল ব্যথা তো আছেই, সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দেখা দেয়। এই সময়ে চিকেন পক্সের প্রকোপও বাড়ে।

গরমে কায়িক পরিশ্রম বেশি হলে কিংবা দীর্ঘ ক্ষণ শরীরচর্চা করলে ‘হিট ক্র্যাম্প’ হতে পারে। এমন হলে কাঁধ, ঘাড় এবং ঊরুর পেশিতে টান ধরে। বেশি করে জল খাওয়া জরুরি। আবার প্রবল গরমে হাত-পা ফুলে যায়, কোষে অতিরিক্ত তরল জমতে থাকে, এই রোগকে বলে ‘হিট এডেমা’। তেমন হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। গরমে সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত জল পান ও খাওয়াদাওয়ায় নজর দেওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক।

গরমে কেমন হবে খাওয়াদাওয়া?

গরমের সয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ডিহাইড্রেশন বা শরীরে জলশূন্যতা। এর থেকে বাঁচতে যেমন জল, তরল খাবার বেশি করে খেতেই হবে, তেমনই অত্যধিক মশলাযুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। গরমে কী কী খাওয়া উচিত, সে বিষয়ে পরামর্শ দিলেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী।

· সকালের জলখাবারে খুব বেশি প্রোটিন খাবেন না এই সময়ে। দুধ খেলে তার সঙ্গে কর্নফ্লেক্স বা ওট্‌সের পরিজ় খাওয়া যেতে পারে। না দলে দই-চিঁড়ে, দইয়ের ঘোল দিয়ে তৈরি ওট্‌স খেতে পারেন। ওট্‌সে আছে বিটা-গ্লুকান, যা হার্ট ভাল রাখবে।

· বয়স্করা ছানা, ওট্‌স খেতে পারেন। গরমে অনেকেই ভারী কিছু খেতে চান না। সে ক্ষেত্রে খালি পেটে না থেকে দুটো কলা খেয়ে নিতে পারেন। এতে ভিটামিন, পটাশিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট একই সঙ্গে পেয়ে যাবেন।

· সকালে খালি পেটে চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করতে হবে। বদলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথির জল, মৌরি-মিছরি ভেজানো জল খেতে পারেন। এক লিটার জলে শসার টুকরো, পুদিনা পাতা ভিজিয়ে রাখুন। সেই জল অল্প অল্প করে খান সারা দিন। খুবই ভাল ডিটক্স পানীয়ের কাজ করবে।

· দুপুরের খাবার হালকা হতে হবে। গরমের সময়ে রুটির চেয়ে বরং ভাত খাওয়াই ভাল। তবে পরিমাণ বুঝে খেতে হবে। যাঁদের অম্বলের সমস্যা বেশি তাঁরা এক কাপের মতো ভাত, সঙ্গে পাতলা করে রান্না ডাল, মাছের পাতলা ঝোল খেতে পারেন। হালকা-মশলার তরিতরকারি পরিমাণ মতো খেতে হবে। রেড মিট এবং তেল ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

· একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে এই সময়ে সারা দিনে অন্তত ৩-৪ লিটার জল খেতেই হবে। যদি ফলের রস বা তরল খাবার বেশি খান, সে ক্ষেত্রে ২ লিটারের মতো জল পান আবশ্যক। টাটকা ফলের রস, ডাবের জল খেতেই হবে। এর থেকে প্রয়োজনীয় ফাইবার ও খনিজ উপাদানগুলি পেয়ে যাবেন। তবে দোকান থেকে কেনা প্যাকেটজাত ফলের রস খাবেন না।

· বেরি জাতীয় ফল খুবই উপকারী। যাঁদের মূত্রনালির সংক্রমণ বেশি হয়, তাঁরা ক্র্যানবেরি খেতে পারেন। তা ছাড়া তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। তরমুজ ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের মতো নানা শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি কমায়। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এর ভূমিকা কম নয়।

· সব্জির মধ্যে উচ্ছে, কুমড়ো, রাঙা আলু, সজনে ডাঁটা রোজের ডায়েটে রাখার চেষ্টা করবেন। এই সব খাবার সংক্রমণজনিত অসুখবিসুখ থেকে বাঁচাবে।

Summer Diet Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy