বসে বসে ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু অতি ব্যস্ততাও কি ওজনবৃদ্ধির কারণ হতে পারে? দিল্লির এক ফিটনেস প্রশিক্ষক জানাচ্ছেন, এ যুগে অতি ব্যস্ততাই ওজনবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ। কারণ ব্যস্ততা সামলাতে গিয়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি অবহেলা করছেন নিজের শরীরের প্রতি।
গৌরব মোলরি নামের ওই ফিটনেস প্রশিক্ষক ‘দ্য আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ়’-এর অনুমোদনপ্রাপ্ত। ফিটনেসের দুনিয়ায় যে সমস্ত শংসাপত্রের কদর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল এসিই। গৌরব তারকাদেরও ফিটনেস প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। ইনস্টাগ্রামে তিনি একটি ভিডিয়োয় জানিয়েছেন, কী ভাবে ব্যস্ত জীবন সামলেও ফিট থাকা যায়।
গৌরব জানাচ্ছেন, যাঁরা অতিরিক্ত ব্যস্ত, তাঁদের ফিটনেসের প্রয়োজনীয়তাও বাকিদের থেকে বেশি। কিন্তু কর্মক্ষেত্রের চাপ সামলে, পারিবারিক এবং সামাজিক দায়িত্ব মিটিয়ে যখন তাঁরা সামান্য সময় পান, সেই সময়টুকু হয়তো বিশ্রাম নিয়ে কাটিয়ে দেন। গৌরবের মতে, এঁদের জীবনে বিশ্রাম যতটা জরুরি, ততটাই প্রয়োজনীয় ফিট থাকা। আর কাজটা খুব একটা কঠিনও নয়। কয়েকটি অভ্যাস মেনে চলতে পারলে, ব্যস্ততা সামলেও ফিট থাকার রুটিন বজায় রাখা যেতে পারে।
১। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকায় গুরুত্ব দিন
জিমে যাওয়ার সময় নেই। না থাকতেই পারে। সারা দিনের অভ্যাসে বদল আনুন। নিজের আসন ছেড়ে হেঁটে আসার একটি সুযোগও ছাড়বেন না। অফিসের ডেস্ক না ছেড়েও অনেক রকম ব্যায়াম করা যায়। এক জায়গায় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকার সময় পাঁচ মিনিটের জন্য ওই ধরনের ব্যায়াম করে নিন। দিনে ২-৩ বার পাঁচ মিনিট করে সময় দিলেও তার উপকার অনেক। এ ছাড়া যাতায়াতের পথে কিছুটা বেশি হেঁটে নেওয়ার সুযোগও চাইলেই তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে।
২। খাওয়াদাওয়ার একটি নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যকর রুটিন বানান
ফিটনেসের অনেকটাই নির্ভর করে কী খাচ্ছেন, তার উপর। সারা দিনের খাবারের একটি তালিকা প্রস্তুত করুন। সপ্তাহে সাত দিনের সাতটি করে ফেলতে পারলে আরও ভাল। দিনে ৫-৬ বারে খাবার সময় ভেঙে নিলে আর প্রতি বার অল্প অল্প খাবার খেলে বিপাকের হার ভাল থাকবে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও উপকারী।
৩। শরীরচর্চাকে মিটিংয়ের মতোই গুরুত্ব দিন
মিটিংকে যেমন গুরুত্ব দেন কিংবা পরিবারের কোনও কাজ করার জন্য যেমন আলাদা করে সময় বার করে রাখেন, ঠিক তেমনই গুরুত্ব সহকারে দিনে আধ ঘণ্টা সরিয়ে রাখুন নিজের শরীরচর্চার জন্য। বাকি যত কাজের জন্য সময় রাখবেন, ওই আধ ঘণ্টা বাদ দিয়েই রাখবেন। দরকার হলে ওই সময়ে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন। তাতে কাজ হবে বেশি।
৪। প্রযুক্তি ব্যস্ত সময়ে সাহায্য করতে পারে
ফিটনেস ট্র্যাকার, ফিটনেস অ্যাপের মতো প্রযুক্তিতে নিজের রুটিন নথিবদ্ধ করুন। এই ধরনের প্রযুক্তি আপনাকে উৎসাহ দেবে।
৫। ঘুম আর জল খাওয়ার কথা ভোলা যাবে না
তবে গৌরব বলছেন, যা-ই করুন না কেন, নিজের দৈনিক বিশ্রামের সময়ের সঙ্গে কোনও রকম আপেস করবেন না। দিনে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। খেয়াল রাখুন সেটুকু যেন বাদ না যায়। পাশাপাশি যথেষ্ট পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন ফিটনেস প্রশিক্ষক।