Advertisement
E-Paper

চর্বিহীন, টানটান পেটের চাহিদায় বিশেষ সার্জারি করান ফরাহ! কারা করাতে পারেন, কী কী উপকার

সন্তানের জন্ম দেওয়ার ৪-৫ বছর পর টামি টাক সার্জারি বা অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি করাতে হয় ফরাহকে। ঝুলন্ত চামড়া, শিথিল হয়ে যাওয়া পেটকে টানটান দেখাতে এই ধরনের সার্জারি করান অনেকে। কী তার উপকারিতা, কী ভাবে করা হয়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই কী এবং খরচ কেমন?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৩৬
টামি টাক সার্জারির খরচ কত?

টামি টাক সার্জারির খরচ কত? ছবি: সংগৃহীত।

গর্ভে একই সঙ্গে তিন সন্তান। বিছানায় শোয়ার মতো অবস্থা ছিল না। পেটের আকার এতই বিশাল ছিল যে চিত হয়ে শুতে গেলেই মনে হত, পেট চলে আসছে বুকের কাছে। রিক্লাইনার চেয়ারে বসেই ঘুমোতে হত। পেট জুড়ে লাল লাল র‌্যাশ ছেয়ে গিয়েছিল। প্রতি দিন ইঞ্জেকশন নিতে চিকিৎসকের কাছে ছুটতে হত। কখনও ঊরুতে, কখনও বা পেটে। অন্তঃসত্ত্বাকালীন সমস্ত উপসর্গই যেন ফরাহ খানের ক্ষেত্রে তিন গুণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

৪২-৪৩ বছর বয়সে আইভিএফ (ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন)-এর মাধ্যমে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন বলিউডের পরিচালক-প্রযোজক। একই সময়ে তিনটি ভ্রুণ গর্ভে ধারণ করতে হয়েছিল বলে পেটের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। সন্তানদের জন্ম দেওয়ার পর প্রায় ৭ বছর সময় লেগেছিল ওজন কমাতে। সেই সময়ের মধ্যেই কঠিন অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল ফরাহকে। সম্প্রতি সোহা আলি খানের পডকাস্টে এসে সে কাহিনিই শোনালেন প্রযোজক।

টামি টাক সার্জারি বা অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি।

টামি টাক সার্জারি বা অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি। ছবি: সংগৃহীত।

সন্তানের জন্ম দেওয়ার ৪-৫ বছর পর টামি টাক সার্জারি বা অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি করাতে হয় ফরাহকে। তাঁর কথায়, ‘‘তলপেটে এত বেশি পরিমাণে চামড়া ঝুলে গিয়েছিল যে, বড্ড খারাপ লাগত দেখতে। তাই এই সার্জারি করাতে হয় আমায়।’’ ঝুলন্ত চামড়া, শিথিল হয়ে যাওয়া পেটকে টানটান দেখাতে এই ধরনের সার্জারি করান অনেকে। কী তার উপকারিতা, কী ভাবে করা হয়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বা কী? অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টি নিয়ে বিস্তারিত জানালেন চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জন সৌরদীপ গুপ্ত।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, টামি টাক সার্জারি বা অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টিতে পেটের ত্বককে টানটান করতে অতিরিক্ত ত্বক ও চর্বি অপসারণ করা হয়। এতে পেটের পেশিগুলিও টানটান হয়ে যায়। এই পদ্ধতিতে পেটের পেশি এবং ফ্যাসিয়াকে (পেটের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের সংযোগকারী টিস্যুর একটি আবরণ) দৃঢ় করা হয়। সৌরদীপ গুপ্তের কথায়, ‘‘আমায় তো প্রায়শই এই সার্জারি করতে হয়। কেবল সৌন্দর্যের খাতিরে নয়, হার্নিয়া অপসারণে টামি টাক সার্জারি করলে হার্নিয়ার সমস্যা আবার ফিরে আসার প্রবণতা কমে যায়। আমার অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে।’’ কুঁচকি থেকে বুক পর্যন্ত কেটে অতিরিক্ত ত্বক এবং ত্বকের নীচে থাকে চর্বি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তার পর পেটের পেশিগুলিকে একে অপরের সঙ্গে সেলাই করে শক্ত ও দৃঢ় করা হয়। এতে পেটের সামগ্রিক আকৃতি এবং চেহারার উন্নতি হয়। ফলে এই অস্ত্রোপচারকে জটিল এবং বড় অপারেশন বলেই চিহ্নিত করছেন প্লাস্টিক সার্জন।

সন্তান জন্ম দেওয়ার পর, ওজন বেড়ে বা কমে গেলে পেটের ত্বক আলগা হয়ে ঝুলে থাকে। সেই চামড়াগুলি সরিয়ে ফেলতে, অতিরিক্ত চর্বি কমাতে, অথবা হার্নিয়া সারাতে এই অপারেশনের গুরুত্ব অনেক। তবে চিকিৎসকের কথায়, ‘‘যে কোনও বড় সার্জারির মতো এ ক্ষেত্রেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। যদি রোগীর বড় সার্জারির ব্যাপারে কোনও সমস্যা থেকে থাকে, অথবা যদি ফুসফুসের রোগ বা হার্টের সমস্যা থাকে, তা হলে এই ধরনের অপারেশন না করাই ভাল। কখনও কখনও অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়ারও ঝুঁকি থেকে যায়। তা ছাড়া অতিরিক্ত চামড়া ফেলে দেওয়ার ফলে পেট এত বেশি টানটান হয়ে যায় যে ,শুরুর দিকে শ্বাসকষ্টেও ভুগতে পারেন রোগী। তাই আমি সব সময়ে টামি টাক সার্জারির পর রোগীকে এক দিনের জন্য ভেন্টিলেশনে পর্যবেক্ষণে রাখি। তার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই নিঃশ্বাস নিতে পারেন তাঁরা।’’

তবে অ্যাবডোমিনোপ্লাস্টির ফলে আলগা ত্বক অপসারণ, অতিরিক্ত চর্বি কমানো, দুর্বল পেশির জোর বাড়ানো, ভঙ্গি সঠিক করা, পিঠের ব্যথা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেসরকারি হাসপাতালে এই সার্জারির খরচ প্রায় লক্ষাধিক টাকা। তবে সরকারি হাসপাতালে অনেক কম খরচে এই অস্ত্রোপচার করানো যায় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

Tummy Trimmer Surgery
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy