বেশ কিছু দিন ধরে পায়ের পাতায় জোর পাচ্ছেন না। আঙুলগুলো কেমন অবশ হয়ে যাচ্ছে। অল্পবিস্তর ডায়াবিটিস আছে অনেক দিন হল। রক্তচাপও বাড়তির দিকে। কিন্তু তা হলেও এর আগে কখনও এমন অনুভূতি হয়নি। ভাবছেন, হয়তো শোয়ার দোষে দেহের কোনও এক দিকে অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। যদিও তা পুরোপুরি ভুল নয়। অনেক ক্ষণ এক ভাবে শুয়ে থাকলে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হতে পারে। তখন হাত বা পায়ের স্নায়ুগুলি কাজ না-ও করতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, পায়ের পাতা কিংবা পায়ের আঙুল অসাড় হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ কিন্তু বেশ কিছু রোগের উপসর্গও হতে পারে। জেনে নিন সেগুলি।
আরও পড়ুন:
১) পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি:
চিকিৎসকেরা বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিস থাকলে ‘পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি’ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রক্তে বাড়তি শর্করা থাকলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়, ফলে পায়ের স্নায়ুগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পায়ে খুব একটা চাপ না পড়লেও পায়ের পাতায় সাড় থাকে না। আবার কখনও ঝিঁঝি ধরে।
২) ভিটামিনের অভাব:
শরীর দুর্বল লাগছে, পায়ে বিশেষ জোর পাচ্ছেন না। চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে গেলে টাল সামলাতে না পেরে আবার ধপাস করে বসেও পড়ছেন কেউ কেউ। চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্তে ভিটামিন ভি১২-এর ঘাটতি হলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। স্নায়ুর কর্মক্ষমতা জোরদার করতে এই ভিটামিনের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
৩) মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস:
গিয়ান ব্যারির মতো এটিও এক ধরনের অটোইমিউন রোগ, যা দেহের স্নায়ুতন্ত্রের উপর মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলে। স্নায়ুর উপর যে সূক্ষ্ম, পাতলা মায়োলিন শিথের আস্তরণ থাকে, তা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। স্নায়ু কাজ করা বন্ধ করে দিলে শরীর অবশ হতে শুরু করে।
আরও পড়ুন:
৪) পেরিফেরাল আর্টারি ডিজ়িজ়:
ধমনী দিয়ে রক্ত চলাচল হঠাৎ যদি ব্যাহত হয়, তা হলেও পা অসাড় হয়ে যেতে পারে। আবার, স্ট্রোকের কারণেও এমনটা হতে পারে। স্ট্রোক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। মস্তিষ্কের স্নায়ু বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করার সঙ্কেত প্রেরণ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে হাত-পা অবশ হয়ে যেতে পারে।
৫) সায়াটিকা:
কোমর বা পায়ের পিছন থেকে তীব্র ব্যথা নেমে আসে পায়ের পাতা পর্যন্ত। মাঝেমধ্যে অসাড়ও হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলছেন, সায়াটিক স্নায়ুতে চোট বা ঝাঁকুনি লাগলেও এমনটা হতে পারে।