পুজোর আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। জিমে জিমে ইতিমধ্যেই ভিড় জমতে শুরু করেছে। যাঁরা জিমে যাচ্ছেন না, তাঁরাও বাড়িতে শরীরচর্চা, যোগাসন করছেন, খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানা তো রয়েছেই। অফিসে লিফ্টে না চড়ে সিঁড়ি ভেঙে ওঠা, সন্ধ্যায় মুখরোচক স্ন্যাকস দেখে খেতে ইচ্ছা করলেও লোভ সামলানো— এ সবও চলতে থাকে। ওজন ঝরাতে হলে কিন্তু চা-ও খেতে হবে বুঝেশুনে। অনেকেই ওজন ঝরানোর ডায়েটে গ্রিন টি রাখেন। তবে দ্রুত ওজন ঝরানোর ক্ষেত্রে কিন্তু সজনে চা-ও কাজে লাগাতে পারেন।
সংক্রমণের ঝুঁকি কমতে সজনের জবাব নেই। তবে সারা বছর সজনে ফুলের দেখা মেলা ভার। সজনে ডাঁটার দেখা পাওয়া গেলেও আকাশছোঁয়া দামের কারণে অনেকেই কেনার আগে দু’বার ভাবেন। শরীর চাঙ্গা রাখতে সারা বছরই কিন্তু সজনে চাইলে খেতে পারেন। না, ফুল বা ডাঁটা নয়, বাজারে এখন সজনে গুঁড়ো কিংবা চা পাওয়া যায়। সেই দিয়েও চা বানিয়ে রোজ সকালে খেতে পারেন। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর সেই চা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়, পাশাপাশি ওজন ঝরাতেও এই চায়ের জুড়ি মেলা ভার।
বিপাকহার বৃদ্ধি করতে গ্রিন টি বেশ উপকারী, তবে গ্রিন টি তে ক্যাফিন থাকে। অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাফিন খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। অন্য দিকে সজনে চায়ে ক্যাফিন থাকে না। তাই বিপাকহার বাড়িয়ে ওজন কমাতে হলে এই চায়ে ভরসা রাখাই যায়। সজনে চায়ে থাকা প্রোটিন ও ফাইবার খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে হলে কিন্তু খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ রাখা ভীষণ জরুরি।
আর কী কী কারণে সজনে চায়ে চুমুক দেবেন?
সংক্রমণ ঠেকায়: সজনে চায়ে আছে ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে লড়ার বিশেষ ক্ষমতা। বিশেষ করে ঠান্ডা লেগে বুক-গলায় সংক্রমণ হলে এই চা খেলে উপকার পেতে পারেন। তা ছাড়া, নানা ধরনের পুষ্টিগুণেও ভরপুর সজনেপাতা। এতে ভিটামিন এ, বি ১, বি২, বি৩ এবং সি রয়েছে। আছে ক্যালশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়ামও।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পটাশিয়াম-যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। সজনেপাতায় ভাল মাত্রায় পটাশিয়াম থাকে। রোজ নিয়ম করে এই চায়ে চুমুক দিলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ফলে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও কমবে। রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে এই চা।
লিভারের যত্নে নেয়: অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, দেদার মদ্যপান, খাওয়াদাওয়ায় অনিয়মের কারণে অল্প বয়সেই লিভারের অসুখ বাসা বাঁধছে শরীরে। সজনেপাতায় ভাল মাত্রায় পলিফেনল থাকে, যা যকৃৎকে যে কোনও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
বদহজমের সমস্যা দূর করে: সারা বছর গ্যাস-অম্বলে ভোগেন, এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও রোজ সকালে সজনে চায়ে চুমুক দিতে পারেন।
চোখ ভাল রাখে: বয়স বাড়লে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, তা ছাড়া সারা ক্ষণ মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে অল্প বয়সেই চোখের বারোটা বাজছে। সজনে পাতায় ভিটামিন এ ভাল মাত্রায় থাকে। চোখ ভাল রাখতেও নিয়মিত সজনে চায়ে চুমুক দিতে পারেন।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডায়েটে বদল আনবেন।