বাইরে থেকে যতই শক্ত-সবল মনে হোক না কেন, শরীরের ভিতরের কলকব্জা ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা জানা খুব জরুরি। এখন বেশির ভাগেরই ৮-৯ ঘণ্টা বসে কাজ। অনেক সময়েই রাত জেগেও কাজ করতে হয়। তার উপর ধূমপান তো আছেই। জীবন এখন অনেকটাই গতিময় হয়ে গিয়েছে। কাজের চাপ তো আছেই, তার উপর সংসারের চাপও কম থাকে না পুরুষদের মাথায়। সেই সঙ্গে যদি খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম লেগে থাকে, শরীরচর্চা তেমন ভাবে না হয়, তা হলে আরও মুশকিল। কম বয়সে তেমন সমস্যা না হলেও, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ছেলেদের শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। সুস্থ জীবনের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সুস্বাস্থ্য। বড় কোনও রোগ থাবা বসানোর আগেই, কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে রাখা ভাল।
পুরুষরা কী কী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেবেন?
ডায়াবিটিসের জন্য পরীক্ষা
সবচেয়ে আগে এই পরীক্ষা করাতে হবে। রোজের খাওয়ায় অনিয়ম হলে এবং শারীরিক কসরত কম হলে, কখন রক্তে শর্করা বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাবে ধরতেই পারবেন না। তাই আগে এইচবিএ১সি টেস্ট করান। গত ২-৩ মাসের মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা কত হয়েছে, তা পরিমাপ করে রক্তের এই পরীক্ষা।
ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্টও জরুরি। রাত থেকে সকাল অবধি কমপক্ষে ৮-১০ ঘণ্টা খালি পেটে থাকার পর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গেই রক্তে গ্লুকোজ়ের মাত্রা কতটা বাড়ছে, তা জানতে গ্লুকোজ় টলারেন্স টেস্ট করিয়ে রাখুন।
ইকো, ইসিজি
আপনি যদি প্রি-ডায়াবেটিক হোন বা পরিবারে কারও হার্টের অসুখ থাকে, তা হলে অবশ্যই ইসিজি ও ইকোকার্ডিয়োগ্রাম করিয়ে রাখতে হবে। তা হলে হার্টে ব্লক, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিয়োরের মতো সমস্যাকে দূরে রাখা যাবে।
এসজিপিটি টেস্ট
সিরাম গ্লুটেমিক পাইরুভিক ট্রান্সমিনেজ। এই উৎসেচক অ্যালানিন অ্যামিনোট্রান্সফারেজ(এএলটি) নামেও পরিচিত। লিভারের সুস্থতা পরীক্ষা করতে এসজিপিটি পরিমাপ করা হয়। এসজিপিটির মাত্রা বেশি মানে আপনার লিভারে গোলযোগ শুরু হয়েছে। বছরে অন্তত একবার লিভার ফাংশন টেস্ট করানো জরুরি, সেই সঙ্গে আলট্রাসাউন্ড করে দেখতে হবে যে লিভারে মেদ জমছে কি না।
আরও পড়ুন:
লিপিড প্রোফাইল টেস্ট
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ছে কি না, তা জানতে লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করিয়ে রাখতেই হবে। প্রতি বছরই এই পরীক্ষা করানো ভাল।
পিএসএ টেস্ট
‘পিএসএ টেস্ট’ বা ‘প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট’-এর মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। ‘ওয়ার্ল্ড জার্নাল অফ অনকোলজি’-তে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৫০ পেরিয়ে গেলেই পুরুষদের এই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ১ থেকে ৪-এর মধ্যেই থাকে। তবে রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ৪-এর বেশি হলেই সতর্ক হতে হবে। নিশ্চিত হতে ‘ডিজিটাল রেক্টাল টেস্ট’ করিয়ে রাখাও জরুরি।
ইউরিন কালচার অ্যান্ড সেন্সিটিভিটি টেস্ট
ইউরিন কালচার টেস্ট করালে ধরা পড়বে প্রস্রাবে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হচ্ছে কি না। মূত্রনালির সংক্রমণের ঝুঁকি কতটা, তা ধরা যাবে। বয়স ৩০ পার হলে এই পরীক্ষা করাতেই হবে।
কিডনি ফাংশন টেস্ট
কিডনিতে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এর থেকে বোঝা যায়, কিডনির অসুখ হওয়ার ঝুঁকি আছে কি না।