ডায়াবিটিসের সঙ্গে লেজুড় হয়ে শরীরে একাধিক রোগ বাসা বাঁধতে পারে। এই রোগের প্রভাব পড়তে পারে চোখেও। বৃদ্ধ বয়সে কেউ চোখে ঝপসা দেখলে মনে হতেই পারে, চোখে ছানি পড়েছে। তবে সাবধান! আপনার ডায়াবিটিস থাকলে রেটিনা গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যা ডেকে আনে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো রোগ। জেনে নিন, ডায়াবিটিস থাকলে কেন নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করানো জরুরি।
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রেটিনার রক্তবাহী সরু ধমনীগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে এক প্রকার ফ্লুইডের ক্ষরণ শুরু হয়। দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। পরবর্তী পর্যায়ে ধমনীতে রক্ত চলাচলের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ফলে রেটিনার সব অংশে ঠিক মতো অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। চোখে রক্তক্ষরণ শুরু হয়, ডাক্তারি পরিভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয় ভিট্রিয়াস হেমারেজ। এর থেকে অন্ধত্বের ঝুঁকিও তৈরি হয়।
কী কী লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হবেন?
১) ডায়াবিটিস রোগীর দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়।
২) এই রোগে আক্রান্তদের কিছু পড়তে বা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়।
৩) ডায়াবিটিক রেটিনোপ্যাথির সমস্যা বাড়তে শুরু করলে অনেকের রং দেখতেও সমস্যা হয়।
৪) চোখে স্বাভাবিক দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই চারদিক অন্ধকার লাগে। আবার কেউ কেউ নির্দিষ্ট কোনও অংশ দেখতে পান না।
৫) চোখের সামনে পোকার মতো কিছু ঘুরে বেড়াচ্ছে মনে হওয়া বা আচমকা আলোর ঝলকানিও এই রোগের লক্ষণ।
কী করবেন?
এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগ কতটা থাবা বসিয়েছে, যাচাই করেই চিকিৎসা শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা সাধারণত অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি, চোখের স্ক্যান করিয়ে পরীক্ষা করিয়ে দেখেন। লেজ়ার থেরাপি, চোখের ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়ে দৃষ্টিশক্তি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। যে সব ডায়াবিটিস রোগী রেনাল প্রোফাইল (ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন), রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তাঁদের চোখের সমস্যা অনেক কম হয়। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ আর এক্সারসাইজ় করলে এগুলি ঠিক রাখা সম্ভব। সেই সঙ্গে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতেও ভুলবেন না। সামান্য গাফিলতি বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।