শীতের সময়ে বাতাসে দূষণবাহী কণার মাত্রা বেড়ে যায়। একদিকে শুষ্কতা, অন্যদিকে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা, রাসায়নিক কণা নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে হাঁচি-কাশি, অ্যালার্জির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এই সময়ে আরও একটা সমস্যা দেখা দেয়, তা হল চোখ জ্বালা করা। খেয়াল করে দেখবেন, বেশি ক্ষণ রাস্তায় থাকলেই চোখ জ্বালা করে, চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে। চোখে চুলকানিও হয়। বাড়ি ফিরেও এই অস্বস্তি কমে না। বরং কিছু পড়তে গেলে বা টিভি দেখার সময়ে জ্বালা ভাব আরও বেড়ে যায়। দূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব নয়। কাজেই চোখ বাঁচাতে কী করা উচিত, তা জেনে রাখা জরুরি।
কেন জ্বালা ধরছে চোখে?
ভাসমান ধূলিকণা (পিএম১০) ও অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫)-ই শুধু নয়, যানবাহনের ধোঁয়ায় নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রাও বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। ওই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাগুলি খুব সহজে মিশে যেতে পারে বাতাসে। বাতাসের ধূলিকণাকে আশ্রয় করে এগুলিই দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। তা ছাড়া গাড়ির ধোঁয়া, কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইডও মিশছে বাতাসে। এই গ্যাসগুলি বাতাসে অ্যাসিডিক যৌগ তৈরি করে যা চোখে ঢুকলে চোখ জ্বালা করতে থাকে। শীতের এই সময়টাতে, ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাসের সংখ্যাও বাড়ে যারা বাতাসের ধুলিকণাকে আশ্রয় করে চোখ বা নাক-মুখ দিয়ে শরীরে ঢোকে। সে কারণেও চোখে সংক্রমণ ঘটতে পারে। বিশেষ করে চোখের উপরিভাগে কর্নিয়া ও কনজ়াঙ্কটিভায় সংক্রমণ ঘটে, ফলে ‘অ্যালার্জিক কনজ়াঙ্কটিভাইটিস’ এই সময়ে বেশি দেখা যায়।
আরও পড়ুন:
চোখ বাঁচাবেন কী ভাবে?
দিনের বেলা বাইরে বেরোলে সানগ্লাস অবশ্যই পরতে হবে। তবে এই সময়ে কনট্যাক্ট লেন্স বেশি না পরাই ভাল। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে।
দূষণের জেরে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়, তাতে আরও সমস্যা বাড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আই ড্রপ ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন:
চোখে চুলকানি হলেই চোখ ঘষবেন না। বরং ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। এতে আরাম হবে।
চোখ ভাল রাখতে শরীরে জলের ঘাটতি হতে দিলে চলবে না। পর্যাপ্ত জল পান করুন। সেই সঙ্গে তরল খাবারও খেতে হবে।
রোজ এমন খাবার খান যাতে বেশি মাত্রায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। সবুজ শাকসব্জি, বাদাম, মাছ, গাজর, ব্রোকলি খেতে হবে। ভিটামিন সি আছে এমন ফল বেশি করে খেতে হবে। কমলালেবু, পেয়ারা, পেঁপের মতো ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
চোখ লাল হলে, ফুলে গেলে, চুলকানি হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।