বয়স ৮৫ বছর। জৈব-রসায়নের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। ৬০ বছর বয়সে ট্রেকিং শুরু। এখন সাইকেল চালানো, স্কিপিং, দৌড়নো, কী না করেন! একদা সুপারমডেল মিলিন্দ সোমনের মা ঊষা সোমনের কাহিনি এমনই আশ্চর্যের। নাতির সঙ্গে প্রথম বার ট্রেকিং শুরু করেন ঊষা। তার পর এখন তাঁর সবচেয়ে পছন্দের ট্রেকিং-গন্তব্য হল, হিমালয়ের ১৩,৫৫০ ফুট উচ্চতায়, অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প। ছেলে মিলিন্দ সোমন এবং পুত্রবধূ অঙ্কিতা কোনওয়ারের মতোই জিম তাঁর পছন্দ নয়, পুষ্টিবিদ বা ফিটনেস প্রশিক্ষকও নেই তাঁদের।
২০২৪ সালে প্রকাশিত বই ‘কিপ মুভিং’। ছবি: সংগৃহীত।
তার পরও এই বয়সে এত ফিট কী ভাবে ঊষা?
বয়স দেখে ফিটনেসকে বেঁধে রাখেন না ৮৫ বছরের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁর শরীর সমর্থন করলে তিনি সব রকমের কাজ করতে থাকেন। এক বার মিলিন্দ বলেছিলেন, ‘‘আমার মা প্রবল কর্মঠ। ২০ দিনের মধ্যে ৩৫০ কিলোমিটার ট্রেক শেষ করে।’’ ঊষার হাঁটার গতি মিলিন্দের থেকেও দ্রুত। শারীরিক কষ্ট নিয়ে কোনও অভিযোগ করেন না কখনও। ঊষা সব সময় নিজের কাজ নিজে হাতে করেন। ফলে সারা ক্ষণ শরীর সক্রিয় থাকে তাঁর। বৃদ্ধার রুটিনে কখনও চ্যুতি ঘটে না। শরীরচর্চা, ভাল খাওয়াদাওয়া, মনঃসংযোগের বিষয়ে রোজ নিয়ম মেনে চলেন তিনি। তাঁর ফিটনসের মূলমন্ত্র হল, মনের জোর। তাঁর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়াতে পারে না কোনও কিছুই। ঊষা জানেন, তিনি পারবেন। যা-ই হোক, তিনি করে ফেলবেন। আর তাঁর এই মনের জোরের সূত্র হল, তাঁর উদারতা। কোনও বিষয়কে তির্যক চোখে দেখেন না ঊষা। সে কথা জানিয়েছিলেন তাঁরই ছেলে। ফলে ইতিবাচকতা তাঁর রন্ধ্রে রন্ধ্রে। শরীরচর্চা ঊষার কাছে রোজের রুটিন নয়, বরং মন ভাল রাখার ওষুধ। তাই ছাদে স্কিপিং করা, দৌড়তে যাওয়া ইত্যাদির মধ্যে তিনি আনন্দ খুঁজে পান। মনের জোরেই তিনি ম্যারাথনে যোগ দেন, সাইকেল চালান, ট্রেক করেন।
আরও পড়ুন:
২০২৪ সালে পরিবারের তিন জন মিলে একটি বই প্রকাশ করেন। নাম, ‘কিপ মুভিং’, অর্থাৎ সচল থাকো। তাঁদের জীবনের মূলমন্ত্র। আর সে সব কথাই ফুটে উঠেছিল তাঁদের এই বইতে।