শরীরের জন্য জরুরি কিছু উপাদান রয়েছে যাদের নাম হয়তো শোনা যায়, কিন্তু তার গুণাগুণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় কম। শরীরের জন্য অতি জরুরি তেমনই এক পুষ্টিগুণ হল ম্যাগনেশিয়াম। এটি শরীরের কেন জরুরি, দৈনিক কতটা প্রয়োজন, না থাকলে কী কী সমস্যা হতে পারে আর কোন কোন খাবারেই বা পাওয়া যায় সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এক পুষ্টিবিদ। দিল্লির ওই পুষ্টিবিদের নাম গুঞ্জন তানেজা। নিজের সমাজ মাধ্যমে শেয়ার করা এক ভিডিয়োয় তিনি এ ব্যাপারে বিশদ পরামর্শ দিয়েছেন।
কেন ম্যাগনেশিয়াম জরুরি?
ম্যাগনেশিয়াম হল এক ধরনের খনিজ, যার উপর নির্ভর করে পেশির স্বাস্থ্য, স্নায়ুর স্বাস্থ্য, এমনকি, হাড়ের স্বাস্থ্যও। এ ছাড়া, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়াও অনেক ক্ষেত্রে নির্ভর করে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতি কতটা, তার উপরে। রক্তচাপের উপরেও এর প্রভাব রয়েছে।
শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা কমলে মাথার যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, বমি ভাব, ক্লান্তি বোধ এবং খিদের বোধ না থাকার মতো সমস্যা হতে পারে। তবে সেগুলি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। দীর্ঘ মেয়াদে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের অভাব তৈরি হলে তা থেকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবিটিস এবং অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। এ ছাড়া পেশির ব্যথা, খিঁচুনি, পায়ে সিরসিরানি ভাব, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের মতো সমস্যাও হতে পারে।
দিনে কতটা ম্যাগনেশিয়াম জরুরি?
কার বয়স কত, তিনি পুরুষ না মহিলা, তার উপরে নির্ভর করে প্রতি দিন তাঁর শরীরে কতটা ম্যাগনেশিয়ামের প্রয়োজন।
০-৬ মাসের শিশুর ম্যাগনেশিয়াম দরকার দিনে ৩০ মিলিগ্রাম
৭-১২ মাসের শিশুর জন্য ৭৫ মিলিগ্রাম
১-৩ বছরের দরকার ৮০ মিলিগ্রাম
৪-৮ বছরে ১৩০ মিলিগ্রাম
৯-১৩ বছরে ২৪০ মিলিগ্রাম
১৪-১৮ বছরে কিশোরের ৪১০ মিলিগ্রাম
১৪-১৮ বছরের কিশোরীর ৩৬০ মিলিগ্রাম
১৯-৩০ বছরের পুরুষের ৪০০ মিলিগ্রাম
১৯-৩০ বছরের মহিলার ৩১০ মিলিগ্রাম
৩১-৭০ বছর বা তার বেশি বয়সি পুরুষের ৪২০ মিলিগ্রাম
৩১-৭০ বছর বা তার বেশি বয়সি মহিলার ৩২০ মিলিগ্রাম
কোন কোন খাবারে ম্যাগনেশিয়াম বেশি রয়েছে?
কুমড়োর বীজ, চিয়া বীজ, তিসির বীজ, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, সবুজ শাক-সব্জি, যে কোনও ধরনের ডাল, কিনোয়া, ব্রাউন রাইস, ডার্ক চকোলেট, চর্বি যুক্ত মাছ, কলা, দুধ, দইয়ে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। শরীরে ম্যাগনেশিয়াম-এর চাহিদা পূরণ করতে এগুলি পরিমাণমতো খেতে পারেন।