Advertisement
E-Paper

খুব কাছের কেউ অবসাদে ভুগছেন? তাঁর মন ভাল রাখার টোটকা আছে আপনার হাতেই

আপনি বিরক্ত হলে বা বিরক্তিভাব বোঝালে সেই মানুষটির উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে যাবে। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে আপনার কী করণীয়?

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ১৫:২৯
How To Deal With Depression

ছোট ছোট কাজেই ভাল থাকে মন। ছবি: সংগৃহীত।

করোনা অতিমারীর দু’বছর মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক অবনতি হয়েছে। পেশাগত কারণ হোক বা পারিবারিক কারণে, মানসিক অবসাদ গ্রাস করেছে অনেককেই। সেই সঙ্গে মানসিক চাপও বেড়েছে। যত দিন যাচ্ছে, প্রতিযোগিতার ইঁদুরদৌড়ে মানসিক ক্লান্তি, উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। হয়তো দেখবেন, আপনার খুব কাছেরই কেউ সব সময় বলছেন যে মন ভাল নেই বা তিনি প্রচণ্ড মানসিক চাপ ও অবসাদে ভুগছেন। আপনার উপদেশেও কাজ হচ্ছে না তেমন ভাবে। আবার আপনি বিরক্ত হলে বা বিরক্তিভাব বোঝালে সেই মানুষটি উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে যাবে। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে আপনার কী করণীয়?

আগেকার সময়ে শরীর খারাপ সেরে ওঠার পরে চিকিৎসকেরা হাওয়াবদল করতে যেতে বলতেন। তাতেও মন হালকা থাকত। নিজের চেনাজানা পরিবেশের বাইরে গেলে অনেক মানুষজনের সঙ্গে আলাপ পরিচয় হয়, নতুন অভিজ্ঞতা হয় যা মনের চাপ অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। প্রাথমিক ভাবে আপনি আগে সেই চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

অবসাদ বেড়ে গেলে তার থেকে আরও জটিল মানসিক রোগ হতে পারে। যেমন, যখন তখন রেগে যাওয়া, ঘন ঘন মেজাজ বদল, অন্যকে সন্দেহের চোখে দেখা, নিজেকে ক্রমাগত গুটিয়ে নেওয়া এবং একাকীত্বে ভোগা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মানুষের জীবনযাপনে একটা বড়সড় পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে গত কয়েক বছরের মধ্যে। অনেকেই দ্রুত পাল্টে যাওয়া সমাজ-পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। তার প্রভাব পড়ছে ব্যক্তিজীবনে। তা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতাও জন্মাচ্ছে। যদি দেখেন আপনার খুব কাছের কারও এমন সব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, তা হলে দেরি না করে মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।

আপনি কী কী করতে পারেন?

১) মনের চাপ কমাতে পরিজন-বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মন খুলে আড্ডা দেওয়া জরুরি। দরকার হলে খেলাধুলা করতে হবে সেই ছোটবেলার মতো। প্রতিযোগিতা নয়, সেই খেলায় যেন উচ্ছল আনন্দে মন মেতে ওঠে।

২) ভাল বই পড়ার পরামর্শও দিচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। এতেও মন ভাল থাকে। সেই মানুষটির ভাল লাগা জেনে তাঁকে তেমন বই উপহার দিন। বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনাও করুন। দেখবেন তিনি অনেকটা হালকা বোধ করছেন।

৩) পেশাগত কাজ ছাড়াও নানা রকম সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা খুব জরুরি। ছোট থেকে আমাদের যে শখগুলো থাকে, তা পেশা-সংসার-পারিবারিক নানা দায়িত্ব সামলানোর চাপে হারিয়ে যায়। সেই সব শখ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। যদি কেউ ছবি আঁকতে ভালবাসেন, তা হলে সেটা নতুন করে শুরু করলে ভাল। কবিতা লেখার অভ্যাস থাকলে আবার কলম ধরাই যায়। গান শোনা, ছবি তোলা, ডাকটিকিট জমানো, বাগান করা— যা ভাল লাগে করা উচিত। নিজের মতো সময় কাটালে মনের উপর চাপ কমতে থাকবে ধীরে ধীরে।

৪) বাড়ির বয়স্কদের ক্ষেত্রে অবসাদ দূরে রাখতে সামাজিক গঠনমূলক নানা কাজে মন দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। দরকার হলে বয়স্কদের বেড়াতে নিয়ে যান, তাঁদের ভাল লাগার স্মৃতিগুলো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন।

৫) কখনওই সেই মানুষটিকে একা থাকতে দেবেন না। দরকার হলে রোজই আড্ডার আসর বসান। তাঁর পছন্দের খাবারগুলো সাজিয়ে দিন। পুরনো দিনের আনন্দের মুহূর্তগুলো নিয়ে কথা বলুন।

৬) তাঁর সমস্যাগুলো শুনুন, খারাপ লাগার জায়গাগুলো বুঝুন। নিজের মতামত না দিয়ে তাঁকে বলতে দিন। তা হলে তিনি বুঝবেন কেউ পাশে আছে। বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায়, মনের কথা খোলাখুলি বলতে না পারলে আরও বেশি মানসিক চাপ তৈরি হয়। যিনি অবসাদগ্রস্ত তিনি ভরসার জায়গাটাই হারিয়ে ফেলেন। তাই আপনাকেই সেই ভরসা ও বিশ্বাসের জায়গাটা তৈরি করতে হবে।

৭) হাঁটার থেকে ভাল থেরাপি আর কিছু নেই। শরীর তো ভাল থাকেই, মনও থাকে ফুরফুরে। তবে যেমন-তেমন ভাবে হাঁটা নয়। ভোরবেলা ঘাসের উপরে খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস করতে পারলে খুব ভাল হয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে মাটির সঙ্গে সরাসরি মনের যোগাযোগ তৈরি হয়। সবুজ প্রকৃতির সংস্পর্শে মন ভাল থাকে, অবসাদ কাছে ঘেঁষে না।

Mental Health Tips Deep Depression Mental Stress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy