ঘুম থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়াতে গিয়ে দেখলেন গোড়ালিতে তীব্র যন্ত্রণার কারণে পা মাটিতে ফেলতে পারছেন না। সারা দিন কাজকর্মের পর আবার সেই ব্যথা আপনা থেকেই খানিকটা কমে যায়। আবার পরের দিন ঘুম থেকে উঠে সেই তীব্র যন্ত্রণা আবার ফিরে আসে। অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। জানেন কি, কেন হয় এ রকম যন্ত্রণা?
পায়ে প্লান্টার ফাসিয়া নামের একটি লিগামেন্ট থাকে। এই লিগামেন্টটি গোড়ালি থেকে শুরু করে পায়ের আঙুল অবধি বিস্তৃত থাকে। পায়ের পাতার যে গঠন, তা নিয়ন্ত্রণ করে ওই লিগামেন্ট। এর কাজ হল হাঁটাচলার সময়ে পায়ের পাতার ভারসাম্য রক্ষা করা। এই লিগামেন্টটি যদি ছিঁড়ে যায় বা তাতে চাপ পড়ে, তখন পায়ের পাতা ফুলতে থাকে, গোড়ালির কাছে তীব্র যন্ত্রণা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় পায়ের পাতা ও গোড়ালির এমন ব্যথাকে বলে ‘প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস’।
কাদের বেশি হয়?
১) যাঁদের ওজন বেশি
২) যাঁদের পায়ের পাতা একেবারে সমান্তরাল ভাবে মাটিতে স্পর্শ করে, অর্থাৎ ফ্ল্যাট ফুটের সমস্যা আছে
৩) যাঁরা দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করেন
৪) এক জায়গায় বসে বসে কাজ করেন যাঁরা, যাঁদের নড়াচড়া কম হয়, কায়িক পরিশ্রম কম হয়
৫) সঠিক জুতো না পরলে বা দীর্ঘ ক্ষণ হিলজুতো পরে থাকেন যাঁরা
৬) যাঁদের ডায়াবিটিস আছে
কী ভাবে কমবে সমস্যা?
বিশ্রাম: প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস যাঁদের আছে তাঁরা যদি পায়ের উপর অতিরিক্ত চাপ দেন, তা হলে কিন্তু যন্ত্রণা আরও বাড়ে। তাই যন্ত্রণা কমাতে হলে পর্যাপ্ত মাত্রায় বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।
বরফের সেঁক: মূলত প্রদাহের কারণে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের সমস্যা শুরু হয়। প্রদাহ দূর করতে বরফ ভাল বিকল্প হতে পারে। দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট বরফ সেঁক দিন। তা হলে প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের ব্যথা বেশ খানিকটা কমবে।
জুতো বাছাই: প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের সমস্যা শুরু হলে জুতো বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থটিক্স জুতো পরলে বেশ আরাম হবে পায়ে।
হিল কাপ্স: প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের সমস্যা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হিল কাপ্স ব্যবহার করতে হবে।
ওষুধ: প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের সমস্যা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ খেতে হবে।