Advertisement
E-Paper

কিডনি স্টোনের ঝুঁকি কমাতে চান? তবে কয়েকটি খাবার বাদ দিয়ে দিন রোজের খাদ্যতালিকা থেকে

এ যুগে যে ধরনের জীবনযাপনের পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন মানুষ, তাতে প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর এই অভ্যাস কিডনি স্টোনের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসক।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১৭:০৫

ছবি : সংগৃহীত।

কিডনি স্টোনের যন্ত্রণা কতটা তীব্র হতে পারে, তা যাঁরা সয়েছেন, তাঁরাই জানেন। এ যন্ত্রণা হঠাৎ শুরু হয়। কিন্তু যখন শুরু হয়, তখন সহ্যশক্তির সীমা ছাড়িয়ে যায়। অনেকেই এমন অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। তাঁরা তো বটেই, সেই সঙ্গে যাঁরা হননি, তাঁরাও এই যন্ত্রণাদায়ক অসুখকে দূরে রাখতে পারেন খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু বদল এনে, জানাচ্ছেন ল্যাপ্রোস্কপি সার্জন উৎকর্ষ গুপ্ত।

চিকিৎসকের মতে, এ যুগে যে ধরনের জীবনযাপনের পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন মানুষ, তাতে প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আর এই অভ্যাস কিডনি স্টোনের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘কিডনি স্টোন হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে। তবে সেই সব কারণের নেপথ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসই মূল ভূমিকা নেয়। কারও ক্ষেত্রে সেটা প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া, কারও ক্ষেত্রে পরিমাণমতো জল না খাওয়া, কারও ক্ষেত্রে আবার কোনও বিশেষ ধরনের খাবার মাত্রাতিরিক্ত খাওয়ার ফলেও হতে পারে। তাই কেউ যদি কিডনি স্টোনের মতো অসুখকে দূরে রাখতে চান, তবে প্রথমে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস শোধরানো প্রয়োজন।’’

কী কী বদল আনা দরকার খাদ্যতালিকায়?

চিকিৎসক উৎকর্ষ জানাচ্ছেন, দৈনন্দিন কিছু খাদ্যভ্যাস গোপনে কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

১। অক্সালেট বেশি আছে এমন খাবার

শাকপাতা বা পাতা জাতীয় সব্জি যেমন বাঁধাকপি, বিট, রাঙাআলু, ঢেঁড়শ এবং বাদামে অক্সালেট রয়েছে বেশি। এই উপাদান কিডনিতে ক্যালশিয়ামের সঙ্গে মিশতে পারে এবং তৈরি করতে পারে ক্যালশিয়াম অক্সালেট স্টোন। চিকিৎসক বলছেন, তার মানে এই নয় যে, এই সমস্ত খাবার বাদ দিতে হবে। কারণ, এই সব খাবারে জরুরি নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাই এই সমস্ত খাবার খেলে তার সঙ্গে সব সময় দুধ, দই জাতীয় ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান, যা কিডনিতে অক্সালেট জমতে দেবে না।

২। খুব বেশি মাংস খাওয়ার অভ্যাস

অতিরিক্ত মুরগির মাংস, মেটে, রেড মিট এমনকি, ফ্যাটযুক্ত মাছও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা ইউরিক অ্যাসিডের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। প্রস্রাবে ক্যালশিয়ামের মাত্রাও বাড়িয়ে দিতে পারে। ক্যালশিয়ামের মাত্রা বাড়লেই কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়বে। তাই প্রাণিজ প্রোটিন বেশি না খেয়ে ডাল, সয়াবিনের মতো উদ্ভিজ প্রোটিন খান। তাতে শরীরে যাওয়া প্রোটিনের ধরনে ভারসাম্য আসবে।

৩। অতিরিক্ত নুন খাওয়ার অভ্যাস

ভারতীয়েরা নানা ভাবে নুন বেশি খান। অনেক ক্ষেত্রে শরীরে যে নুন বেশি পরিমাণে যাচ্ছে, তা বুঝতেও পারেন না। যেমন নুন মাখানো বাদাম, পাঁপড়, নানা ধরনের আচার, চিপস, ভুজিয়া, রেস্তরাঁ থেকে আনানো খাবারদাবারে নুন বা সোডিয়ামের মাত্রা থাকে অত্যন্ত বেশি। আর অতিরিক্ত নুন কিডনিকে বেশি ক্যালশিয়াম তৈরি করতে বাধ্য করে, যা থেকে তৈরি হয় স্টোন।

৪। মিষ্টি স্বাদের পানীয়

কোলা জাতীয় পানীয়, অন্যান্য নরম পানীয়, এমনকি ফলের রস, এনার্জি ড্রিঙ্কেও থাকে উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজ় কর্ন সিরাপ। এটি প্রস্রাবে রাসায়নিক বদল ঘটাতে পারে, যা ক্যালশিয়াম তৈরির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই ধরনের পানীয়ে রাশ টেনে লেবুজল, ডাবের জল খান।

৫। ক্যাফিন আর মদ্যপান

অতিরিক্ত চা, কফি খেলে শরীরে ক্যাফিন যায় বেশি। এতে শরীরের আর্দ্রতা কমে। আবার মদ্যপানেও শরীরের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হতে পারে। সে ক্ষেত্রেও কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

৬। ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট

৫০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি-এর ওষুধ খেলে তা শরীরে অক্সালেটের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যদি আপনি ভিটামিন সি-এর সাপ্লিমেন্ট খান, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। বিশেষ করে আগে যদি কখনও কিডনি স্টোন হয়ে থাকে, তবে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।

৭। দৈনিক জল খাওয়ার মাত্রা

প্রতি দিন যথেষ্ট পরিমাণে জল না খেলেও কিডনিতে স্টোন তৈরির ঝুঁকি বাড়তে পারে। অন্য দিকে, সারাদিনে ২-৩ লিটার জল খেলে স্টোন তৈরির জন্য দায়ী উপাদানগুলি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই নিয়মিত পরিমাণমতো জল খেলেও কিডনি স্টোনের আশঙ্কা অনেকটা কমিয়ে ফেলা যাবে।

Kidney stone Kidney Care
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy