বদলেছে জীবনযাপনের ধরন। গতিময়তার যুগে পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ বেড়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা নানা রকম রোগের কারণ হচ্ছে। সে কারণেই সকলকে একটু স্বাস্থ্য সচেতন হতে বলছেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে গিয়ে কোনটি খাওয়া যায়, কোনটি নয় তা নিয়েও চলছে চর্চা। দৈনন্দিন খাবারকেও স্বাস্থ্যকর করে তোলার চেষ্টা চলছে। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শে ময়দা ছেড়ে আটা খাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার স্বাস্থ্যের কথা ভেবে জোয়ার-বাজরার রুটি, পরোটাও বেছে নিচ্ছেন। সেই তালিকায় জুড়তে পারেন আরও একটি উপাদান। চিরপরিচিত সজনেপাতা। এক কালে গুণাগুণের কথা বিশেষ চিন্তা না করেই অনেকে সজনেফুল খেতেন। সজনে ডাঁটাও উপাদেয় খাবার। তবে বর্তমানে পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা হতেই চিরপরিচিত সজনেপাতা কৌটোবন্দি হয়ে বিক্রি হচ্ছে ‘মোরিঙ্গা’ হিসাবে।
কী এর উপকারিতা?
রোগ প্রতিরোধ করে: ভিটামিন এ, বি৬, সি, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামে পরিপূর্ণ সজনেপাতা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ভাল। এতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর সজনেপাতা ত্বক, চুলের জন্যও ভাল।
আরও পড়ুন:
হার্টের জন্য ভাল: সজনেপাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহনাশক উপাদান, যেমন কোয়ারসেটিন। লিপিড তৈরিতে বাধা দেয় এটি। প্রদাহ কমায়। যা পরোক্ষে হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ কমায়: বেশ কিছু ব্যাক্টেরিয়া পেটের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। সেই তালিকায় রয়েছে ই কোলাই। সজনেপাতায় থাকা উপাদান, ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধেও কিছুটা হলে সাহায্য করে।
ত্বক এবং চুলের জন্য ভাল: ভিটামিন সি, জ়িঙ্ক-সহ বিভিন্ন উপাদান ত্বক এবং চুল ভাল রাখতে সাহায্য করে। সে কারণে, রূপচর্চার জগতেও ঘরোয়া টোটকা হিসাবে সজনেপাতার কদর বাড়ছে।
কী ভাবে যোগ করবেন পরোটায়?
পরোটা স্বাস্থ্যকর করতে হলে ময়দা নয়, নিন গমের আটা। গ্লুটেনে সমস্যা হলে রাগির আটাও নেওয়া যায়। জল দিয়ে আটা মাখার সময় এতে ধুয়ে রাখা সজনেপাতা মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো নুন দিয়ে ভাল করে আটা মেখে নিন। অল্প সাদা তেল দিয়ে পরোটা উল্টে-পাল্টে সেঁকে নিন।
পরোটায় সজনেপাতার পুরও ভরতে পারেন। সজনেপাতা জলে ভাপিয়ে শুকনো লঙ্কা, সর্ষে ফোড়ন দিয়ে হালকা নাড়িয়ে চাড়িয়ে নিন। যোগ করুন স্বাদমতো নুন, হলুদ। ভাজা হয়ে গেলে, পরোটা তৈরির সময় সেটি পুর হিসাবেও ব্যবহার করতে পারেন। আলু বা ছাতুর পরোটায় যে ভাবে পুর ভরে, একই কায়দায় ভরতে হবে।