নাক ডাকা নিয়ে বিব্রত? কিন্তু তা কেবল একটি অস্বস্তিকর ভ্যাস নয়, শারীরিক নানা প্রকার রোগের লক্ষণ হতে পারে তা৷ শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতির ইঙ্গিত থেকে শুরু করে স্লিপ অ্যাপনিয়াও রয়েছে তার মধ্যে। তাই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া দরকার। তবে সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে বিব্রত বোধ করলে কয়েকটি ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসের বদলেই নাক ডাকা অনেকাংশে কমানো সম্ভব বলে দাবি একাধিক গবেষণার।
১. ঘুমের ভঙ্গি
চিত হয়ে শুলে অনেক সময়ে জিভ মুখগহ্বরের পিছনের দিকে ঝুঁকে যায়। ফলে শ্বাসনালি আংশিক বন্ধ করে দিতে পারে। এর ফলে নাক দিয়ে শব্দ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। পাশ ফিরে ঘুমোলে এই সমস্যা অনেক কমে যেতে পারে। প্রয়োজনে বালিশ দিয়ে পিঠ ঠেকিয়ে রাখুন যাতে ঘুমের মধ্যে চিত না হয়ে যান।
২. দেহের ওজন
শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমলে গলার চারপাশেও চর্বি তৈরি হয়। ফলে শ্বাসপ্রবাহে বাধা পড়তে পারে। এটি নাক ডাকার অন্যতম কারণ। ওজন কমালে গলার পেশির চাপ কমে যায় এবং নাক ডাকাও হ্রাস পায়।
ঘুমোনোর ভঙ্গিতে বদল আনুন। ছবি: সংগৃহীত।
৩. অ্যালকোহল ও ঘুমের ওষুধ
মদ ও সেডেটিভ জাতীয় ওষুধ গলার পেশিকে আরও শিথিল করে দেয়, ফলে ঘুমের সময় শ্বাসের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং নাক ডাকতে শুরু করে।
৪. ধূমপান
ধূমপান গলার টিস্যুতে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা শ্বাসনালি সঙ্কুচিত করে দেয়। এটি শুধু নাক ডাকা নয়, ঘুমের অন্যান্য জটিলতাও বাড়ায়।
৫. ঘরের শুষ্ক পরিবেশ
শুষ্ক বায়ু গলার শ্লেষ্মাকে শুকনো করে দেয়। এর ফলেও নাক ডাকা বেড়ে যায়। প্রয়োজনে ঘরে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। এতে বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ে ও সমস্যা কমে।
৬. নাক পরিষ্কার
ঠান্ডা, অ্যালার্জি বা সাইনাসের কারণে নাক বন্ধ থাকলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ফলে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে বাধ্য হন অনেকে। তাতে নাক ডাকা বাড়ে। ঘুমোনোর আগে নাক ঝেড়ে নেওয়া বা নাকের স্প্রে ব্যবহার করা অনেক সময়ে আরাম দেয়।
আরও পড়ুন:
৭. গলার ব্যায়াম
নিয়মিত গলার পেশির ব্যায়াম করলে পেশির জোর বাড়ে এবং শ্বাসনালির ঝুলে পড়া কমে যায়। এটি নাক ডাকা কমাতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ব্যায়াম শিখে নিয়ে অভ্যাস করা যায়।
৮. নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুম
ঘুমের ঘাটতি বা অনিয়মিত ঘুম গলার পেশিকে দুর্বল করে, যা নাক ডাকার প্রবণতা বাড়ায়। প্রতি দিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে যাওয়া ও ওঠা এই সমস্যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনে।
৯. বালিশের উচ্চতা
খুব নিচু বা খুব উঁচু বালিশেও শ্বাসনালিতে চাপ পড়ে। মাঝারি উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করুন।
নাক ডাকা দীর্ঘস্থায়ী হলে সেটি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ হতে পারে। শ্বাস নেওয়া বার বার বন্ধ হয় এই পরিস্থিতিতে। ঘরোয়া উপায়ে উপকৃত না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।