হলুদের রং কী? প্রশ্ন শুনলে যে কেউ সহাস্যে জবাব দেবেন, হলুদ তো হলুদ-ই। সেটাই তো রং! তবে বিশ্ব বিস্ময়কর। ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে মেলে এমন হলুদ, যার রং হলুদ নয়, বরং নীলচে বা কালচে বেগনি রঙের।
ভারতীয় হেঁশেল হলুদ ছাড়া অচল। তবে তা হলুদ রঙের হলুদ। খাবারে সামান্য মেশালেই রং হয় হলুদ। দেখতে ভাল লাগে। গুণাগুণ তো আছেই। এই হলুদ গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘কারকিউমা লঙ্গা’। তবে ভারতে, আর এক ধরনের হলুদ গাছ পাওয়া, যায় যার নাম ‘কারকিউমা ক্যাসিয়া’। এই হলুদ দেখতে খানিক কালচে বেগনি বা নীলচে। এটি মূলত রাইজ়োম বা গাছের কন্দ। গাছটি উচ্চতায় হয় ০.৫-১ মিটার। হিন্দিতে একে বলে ‘কালা হলদি’। উত্তর-পূর্বের বিশেষ একটি গোষ্ঠী এই জিনিসটিকে বলে ‘বোরাংসাগা’।
হলুদ রঙের হলুদের ব্যবহার মূলত রান্নায় মশলা হিসাবে। তবে কালো হলুদ মূলত ঔষধি হিসাবেই ব্যবহৃত হয়। শোনা যায়, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর ব্যবহারের কথা রয়েছে।
কোথায় মেলে কালো হলুদ?
মূলত উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে এই ভেষজটি পাওয়া যায়। অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, অসম। তবে মধ্য এবং দক্ষিণ ভারতের কোনও কোনও স্থানেও এর চাষ হয়।
বৈশিষ্ট্য
কালো হলুদের নিজস্ব এবং বেশ তীব্র গন্ধ থাকে। স্বাদেরএকটু তিতকুটে ধরনের। হলুদে থাকে কারকিউমিন নামে শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যার জন্যই হলুদ এত উপকারী। কারকিউমিন কালো হলুদে অত্যন্ত বেশি মাত্রায় থাকে বলেই ঔষধি হিসাবে এর ব্যবহার। পোকামাকড়ের কামড়, জখমের চিকিৎসায় টোটকা হিসাবে এর ব্যবহার হয়। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান। হজমের চিকিৎসাতেও এটি ব্যবহার করা হয়।
কালো হলুদ থেঁতো করে রস বার করে মধু-সহ বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার রেওয়াজ আছে। কারকিউমিন থাকায়, কালো হলুদে রোগ-প্রতিরোধক গুণ রয়েছে।
হলুদ-কালো হলুদ
দৈনন্দিন রান্নায় ব্যবহৃত হলুদের যথেষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তবে কালো হলুদের কোনও কোনও উপাদান আরও বেশি থাকে। বিশেষত কারকিউমিনের মাত্রা এতে যথেষ্ট বেশি।
কালো হলুদ উপকারী বলেই, হঠাৎ করে খেয়ে ফেলা ঠিক নয়। বরং চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ জরুরি।